হোমনার খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা যখন ব্যবসায়ী!

প্রতিনিধি ॥
কুমিল্লার হোমনার খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি এলএসডি) বিরুদ্ধে নিজে ব্যবসায়ী সেজে চাল ও গম কেনার অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেন মেঘনা উপজেলা চেয়ারম্যানসহ কয়েকজন জনপ্রতিনিধি।
অভিযোগে জানা যায়, মেঘনা, তিতাস, হোমনা উপজেলার মসজিদ, মাদ্রাসা, ঈদগাহ, এতিমখানা, শশ্মান, রাস্তার উন্নয়নের (টিআর) বরাদ্দকৃত সরকারি অনুদানের চালের বা গমের ডিও স্থানীয় চেয়ারম্যান,মেম্বার ও জনপ্রতিনিধিরা নামে বরাদ্দ হয়ে থাকে। এ বরাদ্দকৃত চালের বা গমের ডিও বাজার দরের চেয়ে ৮/১০ হাজার টাকার কমে তিনি বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে কৌশলের মাধ্যমে নিজেই কিনে থাকেন। এ কারণে বরাদ্দকৃত ব্যক্তিরা মাঠ পর্যায়ে তাদের নামে বরাদ্দকৃত অনুদান দিয়ে সঠিক ভাবে কাজ করতে পারছেন না। খাদ্য গুদামের ৫০ কেজি চালের বস্তা ৪৮-৪৯ কেজি চাল ধরে ডিলার বা জনপ্রতিনিধিদের কাছে গুদামের কর্তৃপক্ষরা বুঝিয়ে দেন। এ গুলো স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বাররা মাঠ পর্যায়ে বিতরণ করতে গিয়ে আরো দুই থেকে তিন চাল বস্তা প্রতি কম হয়। এ কারণে জনপ্রতিনিধিরা মাঠ পর্যায়ে জবাবদিহি করতে হয়।
মেঘনা উপজেলার লুটেরচর তালিমূল কুরআন মাদ্রাসার সভাপতি মাহবুব আলম শিকদার বলেছেন, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আমাদের প্রতিষ্ঠানের নামে ৩টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। সেই বরাদ্দকৃত চালের ডিও কিনতে উক্ত গুদামের কর্মকর্তা আমার সাথে বার বার যোগাযোগ করেছেন।
ভাওরখোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাব মিয়া মেম্বার বলেছেন, গুদামের চাউলের বস্তার মাপ সঠিক নয়।
মেঘনা উপজেলার বড়কান্দা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি হোমনা চাউলের গুদামে চাউল আনতে গেলে চালের পরিবর্তে উক্ত কর্মকর্তা নিজেও চাউলের ডিও কেনার প্রস্তাব দেন।
মেঘনা উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল্লাহ মিয়া রতন শিকদার বলেন, আবদুর রহমান একজন সরকারি কর্মচারী হয়ে নিজে আমার কাছে দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দকৃত চালের ডিও কেনার প্রস্তাব করেছেন। যা নিয়ম বহির্ভূত। তিনি সরকারি কর্মকর্তা হয়ে ব্যবসায়ীর আচরণ করছেন। তার মতো দুর্নীতিপরায়ণ খাদ্য কর্মকর্তা আর দেখিনি। তার প্রত্যাহার দাবি করছি।
হোমনার খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার আবদুর রহমান বলেন, তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ মিথ্যা ভিত্তিহীন। তিনি কারো কাছ থেকে এক কেজি চাল এবং গমও কিনেন নি।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুবীর নাথ চৌধুরী বলেন,আমরা এই অভিযোগটি খতিয়ে দেখবো। প্রমাণ পেলে অভিযুক্ত হোমনার খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।