৩০ বছর বেঞ্চের সাঁকোতে পারাপার ২৯হাজার শিক্ষার্থীর

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ
আল আমিন কিবরিয়া ।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ। ১২৬ বছরের প্রাচীন শিক্ষাঙ্গন। বর্ষা মৌসুমে কলেজের ডিগ্রি শাখার ক্যাম্পাস হয়ে পড়ে একটি বিল। এ জলাবদ্ধতার সমস্যা লেগে আছে দীর্ঘ ৩০ বছর। কলেজের ২৯ হাজার শিক্ষার্থী এই সময় যাতায়াত করেন পানিতে ভিজে ও বেঞ্চের সাঁকোতে।
কলেজে গিয়ে দেখা যায়, কলাভবন, মিলিনিয়াম ভবন, বিজ্ঞান ভবন ও লাইব্রেরি ভবন পানিতে নিমজ্জিত। কক্ষের কোথাও হাঁটু পানি আবার কোথাও ভিজে যাচ্ছে পা। কয়েকটি স্থানে বেঞ্চের সাঁকো বানিয়ে শিক্ষক শিক্ষার্থীরা পারাপার হচ্ছে। এসব ভবনের বাইরে মাঠ ও বাগানের চিত্রও একই রকম। এদিকে কলেজের বাইরের প্রধান সড়কে বৃষ্টি এলে জমে যায় হাঁটু পানি। পানি জমলে হয়ে পড়ে চলাচলের অনুপযোগী। সড়কের পাশেই ড্রেন। বৃষ্টির পানির সাথে ড্রেনের ময়লা পানি উঠে আসে সড়কে ও ক্যাম্পাসে। গেল কয়েক দিনের ভারীবর্ষণের সময় কলে ক্যাম্পাসে এসব চিত্র দেখা গেছে।
পানিতে তলিয়ে যাওয়ার কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, কলেজের পূর্ব পাশের রেল লাইন। উত্তর, দক্ষিণ ও পশ্চিমে হাউজিং এলাকা। এসব এলাকার তুলনায় নিঁচু কলেজের ডিগ্রি শাখার ক্যাম্পাস। যে কারণে ভিতরের পানি বাইরে যেতে পারেনা। কিন্তু বাইরের পানি ভিতরে চলে আসে। কলেজ কর্তৃপক্ষ পুকুর খনন ও মোটর পাম্প দিয়ে পানি সরানোসহ নানান পদক্ষেপ নিয়েছেন। কিন্তু বর্ষায় এ ব্যবস্থা পর্যাপ্ত নয় বলে মনে করছেন কলেজের একাধিক শিক্ষক।
কলেজের একাধিক শিক্ষক ও কর্মচারী বলেন, জলাবদ্ধতার এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে কলেজে বাইরে পানি ক্যাম্পাসে আসা বন্ধ করতে হবে। এছাড়া স্থায়ী কোনো সমাধান হবে না। এ সমস্যা নিরসনে একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা দরকার। শুনেছি আমাদের অধ্যক্ষ মহোদয় এ বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।
কলেজের ডিগ্রি তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম বলেন, এই সমস্যার শেষ কোথায়! বর্ষা মৌসুমে পাঠদান ও পরীক্ষার সময় আমাদের অনেক কষ্ট হয়। আমরা একটি সুন্দর ক্যাম্পাস চাই।
অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আদিবা আক্তার ও ইসরাত জাহান বলেন, দেশের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এটি। প্রতিষ্ঠানটির ক্যাম্পাসের এই বেহাল অবস্থা মেনে নেয়া যায় না।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল বাশার ভূঁঞা বলেন, আমাদের কলেজের ক্যাম্পাস নিচু হওয়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা চারদিক থেকে বাউন্ডারি নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। বাউন্ডারি হলে আশেপাশের পানি প্রবেশ বন্ধ হবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে সমস্যার দীর্ঘমেয়াদী সমাধান হবে।

inside post
আরো পড়ুন