৫০ বছর পর নিজ ভাষার স্কুল কুমিল্লা ত্রিপুরা পল্লিতে

 

মহিউদ্দিন মোল্লা।।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার লালমাই পাহাড়ের সালমানপুর এলাকা। এখানে
বসবাসরত ত্রিপুরা সম্প্রদায় ৫০ বছর পর নিজেদের মাতৃভাষার স্কুল পেয়েছে। রবিবার
বিকালে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের নিজস্ব সংস্কৃতির নাচে গানে স্কুলটি উদ্বোধন
করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগ কুমিল্লার উপ-
পরিচালক শওকত ওসমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন সদর দক্ষিণ উপজেলার ভাইস
চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাবুল,স্থানীয় সিটি কাউন্সিলর ফজল খান। সভাপতিত্ব
করেন সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুভাশিষ ঘোষ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন
সালমানপুর ত্রিপুরা উপজাতি কল্যাণ সমবায় সমিতির সভাপতি সজীব চন্দ্র ত্রিপুরা।
সূত্রমতে, কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার লালমাই পাহাড় এলাকার সালমানপুর,
জামুড়া,বৈষ্ণবমুড়া,সদরের হাদকপুরে ৯৮টি ত্রিপুরা সম্প্রদায় পরিবার বসবাস
করে। সালমানপুর ত্রিপুরা পল্লীর স্কুলে ২৫-৩০ জন শিশু ককবরক ভাষা শেখার সুযোগ
পাবে। স্কুল প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসনের পৃষ্ঠপোষকতায় ককবরক ভাষা
শেখার বই প্রকাশেরও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। স্কুল পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছেন
মনীন্দ্র চন্দ্র ত্রিপুরা। তবে জামুড়া,বৈষ্ণবমুড়া, হাদকপুরের শিশুদের নেই মাতৃভাষা
নিয়ে লেখাপড়ার ব্যবস্থা। এদিকে চারটি এলাকায় পাঁচ শতাধিক ত্রিপুরা
সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করেন। তাদের ধর্মীয় মন্দির নেই। নেই মৃত্যুর পর
সৎকারের শশ্মান।
স্থানীয় ত্রিপুরা কল্যাণ সমবায় সমিতির সভাপতি সজীব চন্দ্র ত্রিপুরা বলেন,
সালমানপুর পাড়ায় এখন খুশির আমেজ বইছে। তাদের মাতৃভাষা ককবরক পরবর্তী
প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
শিশুদের মাতৃভাষা শিখানোর উদ্দেশ্য ককবরক ভাষার স্কুল নির্মাণ করা হয়েছে।
আমাদের শিশুরা ‘এখন তাদের ভাষায় বলতে পারবে‘আং বাংলাদেশ ন হামজাগু’(আমি
বাংলাদেশকে ভালোবাসি)। পাহাড়ের অন্য পাড়ার শিক্ষার্থীদের জন্যও মাতৃভাষা
শেখানোর ব্যবস্থা করা হোক। আমরা কিছু ঘর পেয়েছি। স্কুল পেয়েছি। এজন্য
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট
কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তিনি এখানে,যাদের ঘর নেই তাদের ঘরের ব্যবস্থা, মন্দির ও
শশ্মানের জন্য জমির দাবি করেন।
প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগ কুমিল্লার উপ-পরিচালক শওকত
ওসমান বলেন, সালমানপুরে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের মানুষদের জন্য স্কুল নির্মাণ করা
হয়েছে। তাদের জন্য পর্যায়ক্রমে আরো ঘর ও শশ্মানের জমিও বরাদ্দ করা হবে।