আশুগঞ্জ মুক্ত দিবস পালিত

বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। একাত্তরে দীর্ঘ নয় মাসের সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত হয় বিজয়, আসে আমাদের স্বাধীনতা। মুক্তিযুদ্ধের তীর্থভূমি নামে খ্যাত ব্রাহ্মণবাড়িয়া। সীমান্তবর্তী এই জেলার মাটিতেই শায়িত আছেন দেশের সাত বীরশ্রেষ্ঠ’র একজন, সিপাহী মোস্তফা কামাল। টানা নয় মাসব্যাপী চলমান মুক্তিযুদ্ধের অন্তিম পর্যায়ে শত্রুমুক্ত হয়েছিলো পূর্বাঞ্চলের প্রবেশদ্বার সংলগ্ন অঞ্চলগুলো। একাত্তরের ১১ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ। সেই থেকে প্রতিবছর দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। এবারও নানা আয়োজনে পালিত হয়েছে আশুগঞ্জ মুক্ত দিবস।
প্রকাশ, ১৯৭১ সালের ৯ ডিসেম্বর আশুগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাছে স্বাধীনতাকামী মুক্তিবাহিনী ওরমিত্রবাহিনীর সাথে পাকিস্তানী দখলদার বাহিনীর ব্যাপক যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর প্রায় তিন শতাধিক সদস্য শহীদ হন। অপরদিকে পাকিস্তানী দখলদার বাহিনীরও প্রায় শতাধিক সদস্য মারা যায়। ১০ ডিসেম্বর মিত্রবাহিনী ও বেঙ্গল রেজিমেন্ট সাড়া রাতব্যাপী প্রস্তুতি নিয়ে ভোর বেলায় আশুগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে রেষ্ট হাউজে অবস্থান নিয়ে তুমুল যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। ব্যাপক যুদ্ধে পাকিস্তানী বাহিনী পযুর্দস্ত হয়ে রাতে আশুগঞ্জ থেকে পাশ্ববর্তী ভৈরবে পালিয়ে যায়। তারা আশুগঞ্জ থেকে পালিয়ে ভৈরব যাওয়ার সময় মেঘনা নদীর উপর নির্মিত রেল সেতুর একাংশ ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দেয়। এতে সেতুর দুইটি স্প্যান ভেঙ্গে নদীতে পড়ে যায়। পরে ১১ ডিসেম্বর সকালে একরকম বিনা বাধায় আশুগঞ্জ বাজার এলাকা দখল করে মিত্রবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধারা আশুগঞ্জ বাজার এলাকা তাদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। এতেই হানাদার মুক্ত হয় আশুগঞ্জ। সেই থেকে ১১ ডিসেম্বর দিনটি আশুগঞ্জ মুক্ত দিবস পালিত হয়ে আসছে।
শনিবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ আশুগঞ্জ উপজেলা কাউন্সিলের উদ্যোগে আশুগঞ্জ গোলচত্ত্বরে মুক্তিযোদ্ধের সম্মুখ সমর স্মৃতিস্তম্ভে পতাকা উত্তোলন ও  পুস্পস্তবক অর্পন করা হয়। পরে মুক্তিযোদ্ধের সম্মুখ সমর স্মৃতিস্তম্বের চত্ত্বরে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হানিফ মুন্সি। আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) অরবিন্দ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটি সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুজ্জামান আনসারী, আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লিমা সুলতানা, আশুগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মনির হোসেন. উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হেবজুল বারি, বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ জসিম প্রমূখ।