মোটর সাইকেলের জন্য মাথা কেটে হত্যা

অফিস রিপোর্টার।

inside post

কুমিল্লায় মোটর সাইকেলের জন্য কলেজ ছাত্র রিফাতকে মাথা কেটে হত্যা করা হয়। হত্যার ৬ বছর পর শাহজালাল নামের এক আসামিকে আটক করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিআইবি)। আসামি হত্যার বিষয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছে।

সূত্রমতে,২০১৫ সালের ৯ মার্চ কুমিল্লার সদর দক্ষিণে আবদুল্লাহ আল-ফরহাদ রিফাত (২০) নামে এক কলেজ ছাত্রের মাথাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সেদিন সকালে উপজেলার ধনপুর এলাকার সোনাইছড়ি খালে প্রথমে মাথাবিহীন দেহ পাওয়া যায়। পরে ৪০ গজ দূর থেকে মাথা উদ্ধারের পর তার পরিচয় পাওয়া যায়।

রিফাত স্থানীয় উপজেলার জোড়কানন পশ্চিম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও বানিপুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত মিজানুর রহমানের ছেলে। সে একই এলাকার চৌয়ারা ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলো। লাশ উদ্ধারের দিনই ওই ছাত্রের মা জোসনা বেগম অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে সদর দক্ষিণ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। প্রথমে থানা পুলিশ এবং পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) মামলাটির তদন্তের পর তিনজনকে গ্রেফতার করে। তবে স্বাক্ষ্যপ্রমাণ না থাকায় গত বছর ওই তিনজনকে অব্যাহতি দিয়ে আদালতে মামলার ফাইনাল রিপোর্ট দাখিল করে সিআইডি। এরপর মামলার বাদী আদালতে নারাজি আবেদন করলে আদালত মামলাটি পিবিআইকে ফের তদন্তের নির্দেশ দেয়। পিবিআই মামলাটির তদন্ত শুরু করে গত বছরের ৬ অক্টোবর। দীর্ঘ ৬ বছর পর আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য কাহিনী সম্প্রতি বের হয়েছে।

বৃহস্পতিবার কুমিল্লা পিবিআই কার্যালয়ে এই হত্যা মামলার বিস্তারিত জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মো.হিলাল উদ্দিন।
হিলাল উদ্দিন জানান, মামলাটি ছিলো একেবারেই ক্লু-লেস। সর্বশেষ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার বিকেলে এ মামলায় সদর দক্ষিণ থানার ধনপুর গ্রামের মৃত সফি মিয়ার ছেলে শাহজালালকে আটক করি। এরপর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাহজালাল হত্যার ঘটনার বিস্তারিত পিবিআইকে জানায়। পরদিন বুধবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে সে।

জিজ্ঞাসাবাদে শাহজালাল জানিয়েছে- ঘটনার দিন বানিপুর গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান রানা ও পাশের গোয়ালমথন গ্রামের আবদুল খালেক মিন্টুর ছেলে নাসির উদ্দিন নিহত রিফাতের পালসার মোটরসাইকেলটি তার কাছে নিয়ে আসে। এরপর ওই দু’জন তাকে বলে- রিফাতকে মারধর করে তারা মোটরসাইকেলটি নিয়ে এসেছে। মোটরসাইকেলটি ভারতে বিক্রি করে দিতে। এরপর শাহজালাল মোটরসাইকেলটি ভারতের এক লোকের কাছে বিক্রি করে দেয়। বিক্রির পর শাহজালাল জানতে পারেন তারা রিফাতকে মারধর নয়, মাথা কেটে খুন করেছে।

পুলিশ পরিদর্শক মো.হিলাল উদ্দিন আরও জানান, শাহজালাল স্বীকারোক্তিতে খুনে জড়িত যেই দু’জনের কথা বলেছে তারা বর্তমানে দেশের বাইরে রয়েছে। ওই দুইজন নিহত রিফাতের সঙ্গে চলাফেরা করতো। তবে এই খুনের পেছনে মোটরসাইকেল ছাড়াও চাঞ্চল্যকর আরও কিছু কারণ রয়েছে। আমরা তদন্তের স্বার্থে সেসব তথ্য এখন প্রকাশ করছি না।

রিফাতের মা জোসনা বেগম জানান, লাশ উদ্ধারের তিনদিন আগে ২০১৫ সালের ৬ মার্চ দুপুরে রিফাত মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, সে বন্ধুদের সঙ্গে ভারতীয় সীমান্ত এলাকায় দাওয়াত খেতে গেছে। সেদিন সন্ধ্যার পর থেকে তার ব্যবহৃত মোবাইলফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর ৯ মার্চ সকালে উপজেলার সোনাইছড়ি খালের মধ্যে স্থানীয়রা তার মৃতদেহ দেখতে পায়। আমি ছেলের খুনিদের ফাঁসি চাই।

 

আরো পড়ুন