কসবায় জাহাঙ্গীর হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবীতে মানববন্ধন
এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় প্রতিবেশী কর্তৃক ডেকে নেয়ার পর নিখোঁজ, চার দিন পর পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন এলাকার কচুরিপানা থেকে মরদেহ উদ্ধার,মামলা হবার পরও পুলিশের উদাসীনতায় পরিবারের ক্ষুব্দতা থেকে এবার ফুঁসে ওঠেছে এলাকাবাসী। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবীতে মানববন্ধন-বিক্ষোভশেষে দেয়া হয়েছে স্মারকলিপি।
রোববার (৯ আগস্ট) দুপুরে কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনের সামনে কসবা পৌর এলাকার আকবপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর মিয়া হত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন বিক্ষুব্দ গ্রামবাসী। মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল করে ইউএনওকে নিকট স্মারকলিপি দাখিল করেন নিহতের স্ত্রী। এসময় কসবা থানার ওসির অপসারণ দাবী করেন।
নিহত জাহাঙ্গীরের স্ত্রী রাজিয়া বেগম জানান, গত ২৬ জুলাই রাতে এক প্রতিবেশী আমার স্বামীকে বাড়ি থেকে ডেকে নেয়ার পরই নিখোঁজ হয়। পরদিন কসবা থানায় একটি জিডি করতে গিয়ে বিড়ম্বনার শিকার হই। পরদিন ২৮ জুলাই ওসি জিডি অন্তর্ভূক্ত করেন। ২৯ জুলাই তার স্বামীর লাশ আদ্রাঅনন্তপুর গ্রামের একটি বিল থেকে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়। এর পরদিন ৩০ জুলাই রাতে কসবা থানার ওসি মোহাম্মদ লোকমান হোসেন এবং কসবা পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আবু তাহেরের যোগসাজসে মনগড়ামতো একটি হত্যা মামলা তৈরি করে জাহাঙ্গীর হত্যা মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামী করে তার থেকে (নিহত জাহাঙ্গীরের স্ত্রী রাজিয়া) জোর করে স্বাক্ষর নেয়। এসময় নিহতের বড় ভাই মোসলেম মিয়া ওসির কক্ষে ঢুকতে চাইলে তাদের ধমকিয়ে বের করে দেন।পরে তা মামলা হিসেবে নথিভূক্ত করনে। ওই মামলায় নিহতের পরিবারের স্বজনদের আসামী করা হয়। বিষয়টি পরর্বতী সময়ে নিহতের পরিবার জানতে পেরে এই মামলা প্রত্যাখ্যান করনে। পরে গত ৪ আগষ্ট একই গ্রামরে মৃত আলী হোসেনের ছেলে ইসমাইল হোসনেকে (৩০) প্রধান আসামী করে ৬ জনের নামোল্লেখ করে ব্রাহ্মণবাড়য়ি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। বিজ্ঞ বিচারক নালিশী দরখাস্তটি কসবা থানার মামলার সাথে সংযুক্ত করে তদন্ত করার জন্য ওসিকে নির্দেশ দেন। কিন্তু উশৃঙ্খল প্রকৃতির আসামীরা নিহতের স্ত্রী রাজিয়া ও তার বড় ভাই মোসলেম মিয়ার বাড়িতে একাধিকবার হামলা করলেও থানায় পুনরায় অভিযোগ দিয়ে তারা কোনো প্রতিকার পায়নি।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, গ্রামের মাদক ব্যবসায়ীদের নির্যাতনের শিকার ফারুক মিয়া, নিহত জাহাঙ্গীরের বড় ভাই মোসলেম মিয়া, চাচাত ভাই আক্কাছ মিয়া ও নিহত জাহাঙ্গীরের স্ত্রী রাজিয়া বেগম। বক্তাগণ অভিযোগ করেন আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করলেও পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেছে না। নিহতের বড় ভাই মুসলমি মিয়া বলেন, ‘আমার ভাই হত্যার ঘটনায় আমরা পুলিশের কাছ থেকে ন্যায় বিচার পাইনি। তারা হত্যা মামলায় কাউকে আসামী না করে আমার ছোট ভাইয়রে স্ত্রীর কাছ থেকে স্বাক্ষর নেয়। পরে মামলার ঘটনা জানতে পেরে আমরা তা প্রত্যাখান করি। পরর্বতীতে আদালতে মামলা দায়ের করি। আমরা এঘটনার ন্যায় বচিার চাই।’ এসব বিষয়ে কসবা থানার পরিদর্শক (ওসি) মোহাম্মদ লোকমান হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেন।