নগরীতে ভিক্ষুক ও বেদের উৎপাত, মহাসড়ক হিজড়া
আবু সুফিয়ান রাসেল।।
করোনাকালে কুমিল্লা নগরীতে ভিক্ষুক বৃদ্ধি পেয়েছে। হিজরাদের উৎপাত আছে আগের মতই। বেদেদের চাঁদাবাজিতে নিরুপায় পথচারীরা। সমাজসেবা অধিদপ্তর বলছে এসব শ্রেণির মানুষের সরকারি ভাতা ও সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে।
সরেজামিনে দেখা যায়, নগরীর কান্দিরপাড় বেদে সম্প্রদায়ের দল বেঁধে টাকা তোলার চিত্র। মেয়ের বিয়ে, হাসপাতালে রোগী ভর্তিসহ নানা চলনা-কৌশলে মানুষ থেকে টাকা আদায় করে বেদেদের দল। টাকা না দিলে কাপড় ও পথচারীদের ব্যাগ নিয়ে টানাটানি করে। অন্যদিকে পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডের জাঙ্গালিয়া-লাকসাম সড়কে হিজড়াতে চাঁদাবাজি প্রকট আকার ধারণ করেছে। টাকা না দিলে যাত্রীদের হেনেস্তা করেন সংগঠিত হিজড়াদের দল। পদুয়ার বাজার, টমছমব্রিজ ও কান্দিরপাড়ের সিএনজি অটো রিকশা থামার স্থানেও দেখা গেছে ভিক্ষুকদের আধিপত্য।
পদুয়ার বাজারের ব্যবসায়ী রিয়াজ উদ্দিন রাসেল জানান, ইদানিং ফকির অনেক বেড়েছে। আগে এতো ফকির ছিলো না। এখানে তাদের গ্রুপিং আছে, দিন শেষে সর্দারকে টাকা দিতে হয়। বাসে হিজড়ারা টাকা নেয় নতুন কিছু না। এখানে তাদের সমিতি আছে, নেতা আছে। দোকানে আসলে আমরাও ভয়ে চাঁদা দিতে বাধ্য হই, নয়তো লজ্জায় পড়তে হয়।
কান্দিরপাড় এলাকার ভিক্ষুক রবিউল জানান, তিন বছর এখানে ভিক্ষা করছি। ট্রেন বন্ধ থাকায়, সেখানের ভিক্ষুকরা কান্দিরপাড় চলে এসেছে। যারা বাসা-বাড়িতে কাজ করতো, তাদের অনেকে ভিক্ষা করে। যার কারণে আগের মতো টাকা পাওয়া যায় না। আগে দিনে ৪০০-৭০০ টাকা পর্যন্ত ইনকাম হতো। এখন ২৫০-৩০০ টাকা পেতে কষ্ট হয়।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল রেডিওলজি বিভাগের টেকনোলজিস্ট আল মামুন জানান, এক হিজড়া সমাজ সেবার পরিচয়পত্র ও ভাতার কার্ড দেখিয়ে সে বিনামূল্যে এমআরআই করার আবেদন করে। তাকে দুই হাজার টাকা মওকুফ করা হয়। মেডিক্যাল চেকআপ করার পর দেখি সে প্রকৃত হিজড়া না। এক পর্যায় তার সাথে কথা বিনিময় হয়, সে জানায় প্রকৃত হিজড়া কোথায় পাবেন। অনেকে তো নকল হিজড়া।
সদর দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, চাঁদাবাজির বিষয়টি আমরা অবগত ছিলাম না। অভিযোগ পেলে যাথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
হাইওয়ে পুলিশ সুপার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, জাঙ্গালিয়া থেকে লাকসাম যে সড়ক আছে তা জেলা পুলিশ দেখে। হাইওয়ে পুলিশ শুধু মহাসড়কের কাজ করে থাকে।
জেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তর উপ-পরিচালক জেড.এম মিজানুর রহমান খান জানান, প্রতিবন্ধী ভাতা ৬৭৬২৮, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা দুঃস্থ মহিলা ভাতা ৪৭ হাজারের বেশি, ভিক্ষুক ভাতা প্রায় ১৪ হাজার, হিজড়া জনগোষ্ঠির জীবনমান উন্নয়ন ভাতা ১১২, বেদে জনগোষ্ঠির ভাতা ৩৭জনসহ কুমিল্লায় ভাতা ভোগীদের টাকা যথা সময়ে তাদের ব্যাংক একাউন্ডের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। হিজড়াদের কর্মদক্ষ করতে কম্পিউটার, সেলাইসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে।