যে কবিতা শুনতে জানেনা, সে ঝড়ের আর্তনাদ শুনবে…

মনোয়ার হোসেন রতন।
কবিতা সব সময় প্রগতি আর মানবতার কথা বলে। আমাদের সমাজ ব্যবস্থার গভীরে যে বড় রকমের বিধি লুক্কায়িত আছে তার ধ্বনি প্রতিধ্বনি আমরা শুনতে পাই কবিতার মাধ্যমে। কবিতা ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধে উঠে গণমানুষের ভাষায় পরিণত হয়, আর তখন সেই ভাষা হয় প্রতিবাদের। নিপীড়িত নির্যাতিত শৃঙ্খলিত মানবতার মুক্তির কথা, সুখে-দুখে প্রেমে আবেগে সব সময় কবিতা আমাদের সাথে পথ চলে ছায়ার মতো।
রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের ক্ষেত্রে আমরা নতুন দিগন্তের সন্ধান পেয়েছি, কবিতার মাধ্যমে। আমরা আমাদের রাজনৈতিক অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সার্বভৌমত্বের ক্ষেত্রে কবিতাকে পেয়েছি দীপ্ত শপথে। কবিতা সাধারণ মানুষের চিন্তা চেতনা দেশপ্রেম আর মুক্তির সুরে গান গেয়েছে সব সময়।
একদিন কবিতা আমাদেরকে স্বপ্ন দেখাতেন, শোষণহীন সমাজের। সচেতন মানুষের দৃঢ় ঐক্য একদিন বদলে দেবে বাংলাদেশ, তথা বিশ্বের চেহারা। দুর্নীতি আর শোষণের বিরুদ্ধে লড়াই করে প্রতিষ্ঠা করা হবে শান্তি। প্রতিটি মানুষের ঘরে বইবে শান্তির সুবাতাস।
সেই কবিতা এবং কাব্যের সুর আমাদের আত্মার নিঃশব্দ সংগীত। এ নিঃশব্দ সঙ্গীতের ভাষা আমরা নিবিড় ভাবে অনুভব করি। অনুভব করি, প্রাণের ভেতরে পাতার ফাঁকে বাতাসের নিভৃত চলাচলের মতো।
এ শব্দচয়ন বাক্যের গঠন বাণী ও বিন্যাসের যারা সুর স্রষ্টা বিপুল তাদের আকাঙ্ক্ষা, বিরাট তাদের উদার্য, ক্লান্তিহীন তাদের উৎসাহ। অফুরন্ত আনন্দের প্রাণ বন্যায় ভাসা তাদের মন। জলপ্রপাতের মত তাদের হৃদয়ের স্বচ্ছতা। জ্বলন্ত সূর্যের মতো তেজোদীপ্ত তাদের উৎসাহ উদ্দীপনা।
“জিহ্বায় উচ্চারিত প্রতিটি সত্য শব্দ কবিতা,,,রক্ত জবার মতো প্রতিরোধের উচ্চারণ কবিতা।
যে কবিতা শুনতে জানেনা, সে ঝড়ের আর্তনাদ শুনবে,,,পলি মাটির সৌরভ তাকে পরিত্যাগ করবে। নদী এবং সমুদ্রের মোহনার মতো সম্মিলিত কন্ঠস্বর কবিতা”।
আমাদের চেতনায় কবিতা ইতিহাসের গল্প, সংগ্রামের চিত্র, প্রেমের সংগীত এবং পৃথিবীর চলমান অবস্থা তুলে ধরে। কবিতার প্রতিটি শব্দ, প্রতিটি পঙক্তি যেন এক একটি নতুন ইতিহাস। এবং অভ্যুত্থানের কথা বলে।
