চাঁদপুরে জুয়া খেলায় হেরে পার্টনারকে হত্যা, আসামির যাবজ্জীবন

চৌধুরী ইয়াসিন ইকরাম, চাঁদপুর #

  চাঁদপুর শহরের নিউ ট্রাক রোড খান সড়ক এলাকায় জুয়া খেলায় হেরে পার্টনার রেহান উদ্দিন মিজি (৫৫) নামের এক ব্যক্তিকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাতে  হত্যা করা হয়েছে। এই অপরাধে মো. খোরশেদ আলম (২৭) নামের এক যুবককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, ১ লাখ টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে চাঁদপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ সামছুন্নাহার এই রায় দেন। আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেয়া হয়।

হত্যার শিকার রেহান উদ্দিন মিজি শরীয়তপুর জেলার সখিপুর থানার দক্ষিণ তারাবুনিয়ার বাসিন্দা। পরিবার নিয়ে চাঁদপুর শহরের নিউ ট্রাক রোড খান সড়কের তামান্না শারমীন ভিলার তৃতীয় তলায় ভাড়া থাকতেন। তিনি পেশায় ছিলেন ড্রেজার ব্যবসায়ী।

কারাদণ্ড প্রাপ্ত খোরশেদ আলম পাশবর্তী লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার ১নম্বর কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের শেফালী পাড়া জোর ভূঁইয়া বাড়ির মৃত মোস্তফা ভূঁইয়ার ছেলে।

মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, হত্যার শিকার রেহান উদ্দিন মিজির সাথে আসামি খোরশেদ আলমের জুয়া খেলা নিয়ে পরিচয় হয়। তারা কয়েকজন মিলে জুয়া খেলতেন। তার ধারাবাহিকতায় খোরশেদ বেশ কয়েকবার রেহানের কাছে জুয়া খেলায় হেরে যায়। যে কারণে সে ক্ষুব্ধ হয়ে ঘটনার দিন ২০২১ সালের ২৩ জুন দুপুর আনুমানিক ২টার দিকে রেহান উদ্দিনের ভাড়া বাসায় জুয়া খেলতে এসে পরিকল্পিতভাবে তাকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে খোরশেদ। ওই দিন পারিবারিক কাজে রেহান উদ্দিনের স্ত্রী পারভীন বেগম সখিপুর নিজ এলাকায় ছিলেন। দুপুরে তাকে ফোনে না পেয়ে পাশের বাসায় থাকা আরেক ভাড়াটিয়া মরিয়ম বেগমকে দেখার জন্য বলেন রেহানের স্ত্রী। তিনি বাসার দরজা খোলা পান এবং দেখেন রেহান উদ্দিন বিছানায় উপর হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন। তখন তিনি চিৎকার দেন এবং পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে রেহান উদ্দিনের মরদেহ উদ্ধার করেন।

এদিকে এই ঘটনায় ২৫ জুন চাঁদপুর সদর মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেন হত্যার শিকার রেহান উদ্দিনের স্ত্রী পারভীন বেগম। মামলা দায়েরের পর পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামি খোরশেদ আলমকে গ্রেপ্তার করে এবং ১ জুলাই তাকে চাঁদপুর আদালতে সোপর্দ করে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চাঁদপুর সদর মডেল থানার তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক এনামুল হক চৌধুরী মামলাটি তদন্ত শেষে ওই বছর ১০ অক্টোবর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট কোহিনুর বেগম বলেন, মামলাটি চলমান অবস্থায় আদালত ১৫জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করে। স্বাক্ষ্য প্রমাণ, মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা ও আসামী নিজে অপরাধ স্বীকার করায় বিচারক আসামির উপস্থিতিতে এই রায় দেন।

আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. শাহজাহান মিয়া।

inside post
আরো পড়ুন