কুমিল্লায় অস্ত্রের মুখে রেকর্ড রুমের দলিল ঘষামাজা,আসামি গ্রেফতারে তৎপরতা নেই
অফিস রিপোর্টার।।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের উত্তর পাশ লাগোয়া সদর সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে দিনের বেলায় কর্মচারীদের অস্ত্রের বয় দেখিয়ে দলিল ঘষামাজার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ৩১ অক্টোবর ছুটির দিনে এ ঘটনা ঘটলেও ১৩ দিন পর মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা দায়েরের এক সপ্তাহ হয়ে গেলেও আসামিকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। বিষয়টি জানাজানি হলে নগরীতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া শোনা যায়। নগরীর বিশিষ্টজনদের দাবি,আমমোক্তারনামা দলিলটি কার, সেটি বের করা দরকার। কারা এর পেছনে জড়িত, এর রহস্য উদ্ঘাটন করা হোক। এত বড় জালিয়াতির বিচার না হলে এইসব ঘটনা আরো বাড়বে।
কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলাটি করেছেন সদর সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের অফিস সহকারী মো. আবদুস ছামাদ। এতে দলিল লেখক মো. আবুল বাসার সাজ্জাদের (৪০) নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহার ও সদর সাবরেজিস্ট্রারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৩১ অক্টোবর সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছিল। কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন অফিস সহকারী মো. আবদুস ছামাদ, মোহরাব মো. আজাদ ও পিয়ন আবদুল জলিল। এ সময় দলিল লেখক মো. আবুল বাসার সাজ্জাদ,স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি ও অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজন ব্যক্তি তাদের দিকে অস্ত্র তাক করেন। ওই সময় আবদুস ছামাদের কাছে থাকা রেকর্ড কক্ষের চাবি কেড়ে নেন। দলিল লেখক মো. আবুল বাসার সাজ্জাদ একটি দলিল নিয়ে রেকর্ড কক্ষ থেকে রেজিস্ট্রি অফিসের বাইরে যান। কিছুক্ষণ বাইরে থাকার পর সাজ্জাদ পুনরায় দলিল নিয়ে এসে পিয়ন জলিলের হাতে তুলে দেন। একই সঙ্গে ওই ঘটনা কাউকে না জানানোর জন্য হত্যা ও চাকরিচ্যুতির হুমকি দিয়ে যান।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, এরপর ওই দলিল খুলে দেখা যায়, দলিল লেখক সাজ্জাদ যে দলিল নিয়ে বাইরে যান, সেটি একটি আমমোক্তারনামা দলিল, যা গত ১৩ অক্টোবর নিবন্ধন করা হয়। এতে দলিলের প্রকৃতি পরিবর্তনসহ ৯ নম্বর পাতার বিভিন্ন বিষয় সংযুক্ত করা হয়।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নিবন্ধনের মহাপরিদর্শক ও সহকারী পরিদর্শককে জানানো হয়। এরপর জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সত্যতা পেয়ে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১২নভেম্বর রাতে মামলা হয়।
মামলার বাদী মো. আবদুস ছামাদ বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাঁকে মামলার বাদী করা হয়েছে। এজাহারে তিনি ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন।
অভিযুক্ত দলিল লেখক মো. আবুল বাসার সাজ্জাদকে একাধিকবার ফোন করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আনোয়ারুল হক বলেন, দলিল বাইরে নেওয়া ও ঘষামাজার অভিযোগে একজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিরা অজ্ঞাতনামা। পুলিশ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে।
এবিষয়ে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীরের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন,বিষয়টি জেলা রেজিস্ট্রারের। সে বিষয়ে তিনি ভালো বলতে পারবেন।