কাপ্তান বাজারে বাসায় দেশি কৈ-টেংরা চাষ

 

inside post

অফিস রিপোর্টার।।।।
দেশি মাছ। হারিয়ে যাওয়া নিয়ে শংকা রয়েছে। তবে বিশেষ পদ্ধতিতে সে মাছ ধরে রাখার চেষ্টা চলছে কুমিল্লায়। কুমিল্লা নগরীর কাপ্তান বাজারে বাসার সামনে চাষ হচ্ছে দেশি কৈ ও টেংরা মাছ। বাংলাদেশ হকি দলের সাবেক খেলোয়াড় কাজী মো. আনোয়ারুল হক তার বাসার সামনে মাছ চাষ করছেন। তিনি পরিবারের চাহিদা মেটানোর সাথে স্বজনদের দিচ্ছেন এবং বিক্রি করছেন। অনেকে তার মাছ চাষ দেখতে আসছেন। তার দেখাদেখি মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন অনেকে।

কাপ্তান বাজার মাজার সংলগ্ন খোশনেয়ারা হাউজ। পরিবারের চার ভাই চার বোনের মধ্যে কাজী মো. আনোয়ারুল হক ২য়। খেলোয়াড় কোটায় সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। অবসরে এসে ঠিকাদারী করছেন। সাথে বাসায় মাছ ও গোমতীর পাড়ে সবজি চাষ করছেন। ভোরে ফজর পড়ে দিন শুরু হয় তার। শুরুতে মাছের ও সবজি খেতের পরিচর্যা। ৯টায় বাসা থেকে বের হন। বিকালে এসে আবার তদারকি করেন।
কাজী মো. আনোয়ারুল হকের বাসায় গিয়ে দেখা যায়,বাসার সামনে একচালা একটি শেড রয়েছে। সেখানে পলিথিন ও ফয়েল পেপার দিয়ে একটি হাউজ করা হয়েছে। হাউজে ছয় হাজার লিটার পানি ধরে। সেখানে তিনি এর আগে কৈ মাছের চাষ করেছেন। চার মাস ১০দিন চাষের পর মাছ তোলা শুরু করেন। নিজে খাওয়া ও স্বজনদের দেয়ার পর ১৭৫ কেজি কৈ মাছ বিক্রি করেছেন। ক্রয় করার সময় কেজিতে ১৭৫টা মাছ পেয়েছেন। বিক্রির সময় ১৫টায় এক কেজি হয়েছে। এখন তিনি হাউজে ১০হাজার টেংরা মাছের পোনা ছেড়েছেন। পানিতে মোটরের সাহায্যে অক্সিজেন উৎপাদন করা হচ্ছে। তিনি নিয়মিত মাছের খাবার সরবরাহ ও হাউজের ময়লা পরিষ্কার করছেন।

কাজী মো. আনোয়ারুল হক জানান, ইউটিউবে দেখে তিনি এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ শুরু করেছেন। এটাকে বায়োফ্লক্স পদ্ধতি বলে। এ পদ্ধতির সুবিধা হচ্ছে,খাবারে অপচয় হয় না। মাছ হয় সুস্বাদু। এছাড়া তিনি আধা শতকের কম জমিতে ২০ শতক পুকুরের মাছ চাষ করছেন। রোগও কম হয়। সারা মাসে ৩০০টাকার বিদ্যুত লাগে। মাছ ধরায় জেলে বা জনবলের প্রয়োজন নেই। তিনি বুড়িচং উপজেলায় শেড করে আরো তিনটি হাউজ নির্মাণ করছেন। সেখানে প্রতিটিতে ৫০ হাজার লিটার পানি থাকবে। আরো বড় পরিসরে মাছ চাষের পরিকল্পনা রয়েছে তার। তিনি বলেন, অবসর আমার ভালো লাগে না। কাজের মধ্যে থাকলে শরীর ও মন দুই-ই ভালো থাকে। ঠিকাদারী ব্যবসার সাথে গাছ লাগানো,সবজি চাষ ও মাছ চাষে সময় কাটাই।

দাউদকান্দি হিমালয় মৎস্য চাষ প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আলী আহমেদ মিয়াজী বলেন,পুকুর,দিঘি ও প্লাবনভূমির সাথে বায়োফ্লেক্সসহ বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষ করে মৎস্য সম্পদকে এগিয়ে নিতে হবে। এতে আমাদের নিজেদের আমিষের চাহিদা মিটিয়ে আরো বেশি পরিমাণে মাছ রপ্তানি করা যাবে।

 

কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা মো. মুরাদ হোসেন বলেন, বায়োফ্লেক্স পদ্ধতিতে মাছ চাষে সময় দিতে হবে। তাহলে ভালো ফল আসে। প্রথমে তেলাপিয়া মাছ দিয়ে শুরু করলে লোকসানের আশংকা কম থাকে। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে আমরা পরামর্শ দিয়ে থাকি।

আরো পড়ুন