অর্ধেক অপারেশন করে প্রসূতিতে ফেলে চলে গেল চিকিৎসক!

inside post
এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরে এক প্রসূতিকে অর্ধেক অস্ত্রোপচার করে ফেলে চলে গেলেন চিকিৎসক! পরে ওই প্রসূতিকে পুলিশের হস্তক্ষেপে ঢাকায় পাঠানো হয়। এর আগে বুধবার দুপুরে জেলা শহরের পুরাতন জেল রোডে আল খলিল হাসপাতাল এণ্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ঘটে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা।প্রসূতি রিক্তা আক্তার জেলার বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের শাকিল মিয়ার স্ত্রী।
প্রসূতির স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, রিক্তাকে বুধবার অস্ত্রোপচারের জন্য জেলা শহরের আল খলিল হাসপাতাল এণ্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আনা হয়। এসময় গাইনী চিকিৎসক সায়মা রহমান ইমা ওই প্রসূতিকে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করে অস্ত্রোপচারের প্রস্তুতি নিতে বলেন।পরে তাকে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করার পর অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গিয়ে অস্ত্রোপচার শুরু করেন চিকিৎসক। এসময় আল্ট্রাসনোগ্রাফির সাথে প্রসূতির গর্ভের অবস্থার কোনো মিল নেই দেখে অর্ধেক অপারেশন করে থিয়েটারে রোগি ফেলে চলে যান চিকিৎসক সায়মা রহমান ইমা। অর্ধেক অস্ত্রোপচার করার কারণে রক্তক্ষরণের ফলে প্রসূতি রিক্তার অবস্থা অবনতি হতে থাকে। তার স্বজনরা বিষয়টি জানতে পেরে উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তারা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। দুপুর থেকে সন্ধ্যে নাগাদ হাসপাতালে চলে হুলুস্থুল কাণ্ড। এরই মাঝে ঘটনাটি জেলা শহরে ছড়িয়ে পড়লে সদর মডেল থানা পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে অর্ধেক অপারেশন করা প্রসূতিকে ব্যাণ্ডেজ করে অ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকায় প্রেরণের ব্যবস্থা করেন।
অভিযুক্ত হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খলিল বশির মানিক জানান, ‘রিক্তাকে সকালে শহরের অন্য একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আল্ট্রাসনোগ্রাফী করলে রিপোর্ট ভালো আসে এবং সেই রিপোর্ট নিয়ে আমাদের হাসপাতালে নিয়ে আসেন অস্ত্রোপচারের জন্য। কিন্তু চিকিৎসক সায়মা রাহমান ইমা অস্ত্রোপচার শুরু করে দেখেন রিপোর্টের সাথে বাচ্চার অবস্থান ঠিক নেই। রোগীর পরিবারকে বিষয়টি জানালে তারা ঝামেলা শুরু করেন। পরে আমরা নিজ দায়িত্বে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠাই।’ অভিযুক্ত চিকিৎসক সায়মা রহমান ইমা’র মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি) এমরানুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পরে ওই প্রসূতিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় পাঠানো হয়। তবে ভুল চিকিৎসার বিষয়ে কেউ এখনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আরো পড়ুন