কাজল কিনতে গিয়ে কিশোরী ধর্ষিত, দোকানির যাবজ্জীবন সাজা
কিশোরীর ক্ষতিপূরণ না দিলে আসামির সম্পত্তি বিক্রয় করে তা দিতে জেলা প্রশাসককে নির্দেশ
সন্তানের ব্যয় রাষ্ট্র বহন করবে
প্রতিনিধি।।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে কাজল কিনতে সাগরিকাকে(ছদ্মনাম) নামের এক কিশোরী ধর্ষিত হয়েছেন। ধর্ষণের দায়ে দোকানি আলাউদ্দিনকে(৪৮) যাবজ্জীবন কারাদ- এবং দুই লক্ষ টাকা অর্থ দ- প্রদান করেন কুমিল্লার আদালত। মঙ্গলবার (১১ জুন) কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-০১ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন এ রায় দেন। আসামি মোঃ আলাউদ্দিন চৌদ্দগ্রামের একই বাড়ির বাসিন্দা। তিনি বরিশাল সদর উপজেলার কুন্ডলী পাড়া গ্রামের মৃত আক্কাস আলীর ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা যায়- ২০২০ সালের ১৮ জুলাই সাগরিকা (১৩) ২০ টাকা নিয়ে আসামি আলাউদ্দিনের কসমেটিক দোকানে কাজল কিনতে যায়। এসময় সাগরিকাকে ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করে আলাউদ্দিন। ঘটনার কয়েক মাস পর সাগরিকা অসুস্থ হয়ে পড়লে সে অন্তঃস্বত্ত্বা বলে চিকিৎসক জানান। সে স্থানীয় মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। এ ব্যাপারে ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে আলাউদ্দিনকে আসামি করে চৌদ্দগ্রাম থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ আসামি আলাউদ্দিনকে গ্রেফতারের পর আদালতে সোপর্দ করে। ২০২১ সালের ১৮ জুলাই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। রায়ে উল্লেখ করা হয়, ধর্ষণের কারণে সাগরিকার যে পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহণ করেছে তাকে মাতা সাগরিকা কিংবা তার আত্মীয় স্বজনের তত্ত্বাবধানে রাখা যাবে। সন্তানটি তার পিতা বা মাতা কিংবা উভয় পরিচয়ে পরিচিত হতে পারবেন। উক্ত সন্তানের বয়স ২১ বছর না হওয়া পর্যন্ত তার ভরণপোষণের ব্যয় রাষ্ট্র বহন করবে। ভরণপোষণের অর্থ রাষ্ট্র ধর্ষক আলাউদ্দিনের নিকট হতে আদায় করতে পারবে। এদিকে অর্থদণ্ডের অর্থ সাগরিকার ক্ষতিপূরণ হিসাবে দিতে হবে। অর্থ পরিশোধ না করলে আসামির স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি নিলামে বিক্রয় করে তা দিতে কুমিল্লা জেলা প্রশাসককে নির্দেশ প্রদান করা হয়।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্র পক্ষে নিযুক্ত কৌঁসুলি স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট প্রদীপ কুমার দত্ত বলেন, আশা করছি উচ্চ আদালত এ রায় বহাল রাখবেন।