কুমিল্লায় নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত নিয়ে বাণিজ্য
মুমূর্ষু রোগীর জরুরি রক্ত প্রয়োজনে ধারস্থ হন ব্লাড ব্যাংকের। গ্রামের মানুষরা অধিকাংশ সময় রক্ত ক্রয় করে রোগীর শরীরে সঞ্চারণ করেন। কুমিল্লায় নেগেটিভ গ্রুপের রক্তের জন্য ধারস্থ হতে হয় দালাল চক্রের। অভিযোগ রয়েছে নেপথ্যে কাজ করেন ব্লাড ব্যাংকের কর্মকতা-কর্মচারীরা। এনিয়ে গত সপ্তাহে সাপ্তাহিক আমোদ পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।
সংবাদে উল্লেখ করা হয়, ২০১৯ সালে ১৩ হাজার ২৭ ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। ২০২০ সালে ১১ হাজার ৭৭৩ ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করা হয় । চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত সাড়ে চার হাজার ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। এসব রক্তদাতারা অধিকাংশ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য। তবে নেগেটিভ রক্তের প্রয়োজনে নির্ভর করতে হয় দালাল চক্রের ওপর।
একাধিক নির্ভর যোগ্য সূত্র জানিয়েছে, রক্তের প্রয়োজনে রোগীর স্বজনরা ব্লাড ব্যাংকে আসলে দালাল চক্রের মোবাইল ফোন নম্বর দেওয়া হয়। গত তিন বছর এ কাজটি বেশী হচ্ছে। চক্রের সদস্যরা দামাদামি করেন। এ টাকার বিশেষ একটি অংশ ভোগ করেন ব্লাড ব্যাংকের লোকজন। প্রতি ব্যাগ রক্ত দুই থেকে তিন হাজার টাকা বিক্রি হয়। অনেক সময় রক্তের ক্রসমেচিং করা হয় না। এ নেগেটিভ, এবি নেগেটিভ, এবং ওনেগেটিভ রক্তের জন্য দালাল চক্রকে প্রতি ব্যাগ রক্তের জন্য তিন থেকে চার হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হয়।
স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সংগঠন বাঁধন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ ইউনিটের সভাপতি জুবাইদা ইয়াসমিন মুমু বলেন, গ্রাম থেকে আসা অধিকাংশ রোগী রক্ত সংগ্রহের বিষয়ে সঠিক ধারণা নেই। এ সুযোগে শহরের মাদকসেবীদের একাধিক চক্র রক্ত বিক্রি করে। নেগেটিভ রক্ত সহজে পাওয়া যায় না। সে সুযোগটা তারা কাজে লাগায়। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছাড়াও নগরীর বড় বড় তিনটি হাসপাতালে এ সিন্ডিকেটের খবর আমরা পেয়েছি। হাসপাতালের লোকজন এ চক্রের সাথে কমিশন ভিত্তিক শেয়ার থাকায় তাদের বিষয়টি সাধারণ মানুষ বুঝতে পারে না।
কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ড ডা. মো. জহিরুল হক বলেন, রক্ত বিক্রেতাদের মোটামুটি সবাই মাদকসেবী। ক্রয় করা রক্ত রোগীর শরীরে সঞ্চারণের কারণে মৃত্যুর ঝুঁকি রয়েছে।
এ বিষয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালো পরিচালক ডা. মো. মহিউদ্দিন জানান, রক্ত ক্রয়-বিক্রয় একটি গর্হিত কাজ। মানুষের কল্যাণে মানুষ রক্ত দিবে এতে কোন আর্থিক বিনিময় হতে পারে না। বিষয়টি নিয়ে আমরা অসুসন্ধন করবো। এছাড়াও সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ফেলে কঠিন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।