নগরীর ফুটপাত তুমি কার!
অফিস রিপোর্টার।।
প্রতিদিন যানজটে থমকে যাচ্ছে কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন এলাকা। অধিকাংশ মোড়ে, অলিগলিতে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত থেমে থেমে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। এর অন্যতম কারণ ফুটপাত ও সড়ক দখল। কোথাও ফুটপাত হকারদের দখলে চলে গেছে। কোথাও পরিবহন পার্কিং করা হচ্ছে।
নগরী ঘুরে দেখা যায়, নগরীর কান্দিরপাড়,বাদুরতলা,ঝাউতলা,মনোহরপুর, নিউমার্কেট, রাজগঞ্জ, মোগলটুলী, চকবাজার, রেইসকোর্স, শাসনগাছা, রানীর বাজার ও ফৌজদারী এলাকায় ফুটপাথ দখলের কারণে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া কান্দিরপাড়-পুলিশ লাইন সড়কে মুন হসপিটালের সামনে, লাকসাম রোডে কুমিল্লা টাওয়ারের সামনে দিনভর যানজট লেগে থাকে। কান্দিরপাড়ের ফুটপাথ আবার দখল হয়ে গেছে। পথচারীকে হাঁটতে হচ্ছে সড়কে। কান্দিরপাড় টাউনহল লাগোয়া স্থানে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু সাঈদ ফুটপাথ দখলমুক্ত করে ফুলের টব ঝুলিয়েছিলেন। সেই টব হারিয়ে যাওয়ার পথে। টবের ফুলও শুকিয়ে গেছে। দখল হয়ে গেছে সেই ফুটপাথ। কান্দিরপাড় মোড়ের পিপাসা দোকানের সামনে সড়কে ফল দোকান বসেছে। কুমিল্লা হার্ট মার্কেটের সামনে পুলিশ সিএনজি অটোরিকশা না দাঁড়ানোর জন সাইনবোর্ড দিয়েছে। কিন্তু তার পাশে পার্কিং করা হচ্ছে সিএনজি অটো রিকশা। একই অবস্থা কান্দিরপাড় থেকে রানীর বাজার সড়কে। ওই সড়কের ক্যাতয়নী কালিবাড়ির সামনে সড়কের একাংশ ভাঙা। সড়কের ভালো অংশে হকার তার বক্স রেখেছে। পাশের ফুটপাথে দোকানি তার মালামাল রাখছে। সরু সড়কে ব্যাটারি চালিত অটো রিকশা পার্কিং করা হচ্ছে। রামঘাটলা এলাকার সিএনজি স্ট্যান্ড নগরীর বড় দুঃখ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখানে সিএনজি অটো রিকশা ঘুরাতে গিয়ে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। স্ট্যান্ড সরানো এখন সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে। শাসনগাছায় যত্রতত্র পার্কিংযের কারণে রেলওভারপাসের উপরে নিচে প্রতিদিন থেমে থেমে যানজট লাগছে। এতে স্থবিবর হয়ে পড়ছে নগরীর পশ্চিমাঞ্চল। চকবাজার এলাকায় সড়কে বাস দাঁড়িয়ে যাত্রী উঠায়। সড়কে অটো রিকশার স্ট্যান্ড।
সূত্রমতে, সম্প্রতি চকবাজার ও ছাতিপট্টি এলাকায় ফুটপাথ দখল মুক্ত করা হয়েছে। তবে পরের দিন অধিকাংশ হকার আগের স্থানে এসে বসে পড়েছে।
মোহাম্মদ ফজলে রাব্বী সংসদের সভাপতি ডা. গোলাম শাহজাহান বলেন, নগরীর সড়ক গুলো অনেক সংকীর্ণ। তা উপর হকার বসছে। সড়ক মুক্ত না করলে যানজটের দুর্ভোগ দিন দিন বাড়তে থাকবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন কুমিল্লার সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর মাসুম বলেন,হকারদের নিবন্ধনের আওতায় আনতে হবে। এবিষয়টি বিনামূল্যে সিটি করপোরেশন করতে পারে। এতে হকারদের জবাবদিহিতা থাকতে। যে কেউ এসে সড়কে বসতে পারবে না। তাছাড়া কোন হকার কোথায় বসবে তাও নির্ধারণ করা যাবে। বিভিন্ন অজুহাতে তাদের সড়কে ও ফুটপাথে বসতে দেয়া উচিত হবে না।
কুমিল্লা দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আতিক উল্লাহ খোকন বলেন, ফুটপাথে হকার বসার কারণে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। অন্যদিকে মার্কেটের ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। এবিষয়ে সিটি করপোরেশন,জেলা প্রশাসন ও কুমিল্লা জেলা পুলিশ বিভাগকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করছি।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) রাজন কুমার দাস বলেন, আমাদের জনবল সংকট রয়েছে। সবাই সচেতন না হলে পুলিশ একা কিছু করতে পারবেনা। সম্প্রতি আমরা সিটি করপোরেশনের সাথে ফুটপাথ দখল মুক্তের কাজ শুরু করেছি।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. সফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা পুলিশ প্রশাসনকে সাথে নিয়ে ফুটপাথ দখল মুক্তের কাজ শুরু করেছি। চক বাজার,কাপড়িয়াপট্টি এলাকার ফুটপাথ দখলমুক্ত করেছি। রাজগঞ্জ,লিবার্টি মোড়,কান্দিরপাড় মোড় ও ওয়াইডব্লিউসিএ এলাকায়ও অভিযান চালাবো।