প্রশ্নফাঁস সোহেলের বোন শিক্ষা অফিসার, ভাবি সহকারী শিক্ষক
প্রতিনিধি।।
প্রশ্নফাঁসে জড়িত কুমিল্লার সোহেলের বোন শিক্ষা অফিসার ও ভাবি সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকরি করছেন।
সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় গ্রেফতার ১৭ জনের একজন আবু সোলেমান মো. সোহেল। তার বাড়ি কুমিল্লায় আদর্শ সদর উপজেলার বানাশুয়া গ্রামে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সোহেলের বোন হালিমা বেগম উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার। যিনি ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি চাকরি পেয়েছেন। জীবনে তিনি তিনটি চাকরির পরীক্ষার আবেদন করেছিলেন। অংশ নিয়েছিলেন দুটিতে। একটি বিসিএস। সেই বিসিএস পরীক্ষার প্রিলিতেও পাস করতে পারেননি। আর একবার ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষায় আবেদন করলেও পরীক্ষা বাতিল হয়ে যায়। এরপর পরীক্ষা দেন পিএসসির সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার পদে। জীবনের দ্বিতীয় পরীক্ষায় করেন বাজিমাত। এরপর থেকে ১০ বছর ধরে এই পদেই চাকরি করছেন। বর্তমানে তিনি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় কর্মরত আছেন।
হালিমা বেগম বলেন, আমার ভাইয়ের প্রশ্নে আমি পরীক্ষা দেইনি। আমার পরীক্ষা পিএসসিই নিয়েছিল। কিন্তু আমি নিজ যোগ্যতায় পাস করেছি। যদিও বিসিএস প্রিলিতে আমি পাস করতে পারিনি। ভাইয়ের এসব বিষয়ের জড়িত থাকার বিষয়টি তিনি বিশ^াস করেন না মর্মে জানান, আমরা আগে থেকে সম্ভ্রান্ত। আমাদের টাকা পয়সার অভাব ছিল না। শেষ দিকে শুনেছি সোহেল ভালো ব্যবসা করেন। আমার অন্য ভাইদের কাছ থেকেও টাকা নিয়েছেন। সোহেল শেয়ার, বন্ড, বিল্ডার্স, ল্যান্ড বিজনেসসহ বিভিন্ন ব্যবসা করতেন। সে অনেক আগে আমার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা ধার নিয়েছিল। তিন মাস আগে সেটা ফেরত দিয়েছিল। আমার ভাই ভালোই ছিল। কে জানি আমাদের সর্বনাশ করলো!
অপরদিকে বড় ভাই মো. সুজনের স্ত্রী (সোহেলের ভাবি) নাজনিন সুলতানা পলি স্থানীয় মহিষমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক। তিনি ২০১১ সালের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করে ২০১২ সালে পরীক্ষা দেন। ২০১৪ সালে চাকরিতে প্রবেশ করে ২০১৭ সালে আসেন মহিষমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক হিসেবে। এর আগে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার একটি স্কুলে তিনি কর্মরত ছিলেন।
সোহেলের ভাবি নাজনিন সুলতানা পলি বলেন, ভাইয়ের প্রশ্নে পরীক্ষায় পাস করিনি। আমি যোগ্যতায় পেয়েছি। এই চাকরি ছাড়া তেমন কোন চাকরির পরীক্ষায় অংশ নেইনি। ভাই প্রশ্ন দিলেতো আরও ভালো চাকরি করতাম। আমি ভালো স্টুডেন্ট ছিলাম। আমি আরও ভালো চাকরি পাওয়া দরকার ছিল।
স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, সোহেলের এক ভাইয়ের কুমিল্লা নগরীর ছাতিপট্টিতে সোনার দোকান রয়েছে। আরেক ভাই সোনার বুড়িচং উপজেলা সদরে স্বর্ণের ব্যবসা করেন। গত রমজানের ঈদের আগে সোহেল বাড়ির পাশে ৬০ শতক জমি দেড় কোটি টাকায় কেনেন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. সফিউল আলম বলেন, যদি সত্যি হয় তাহলে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। এতে আমাদের সহযোগিতা লাগলে আমরা প্রস্তুত আছি।