বিদ্যালয়ের প্রবেশ পথ বন্ধ করে কাঁচাবাজার

সানোয়ার হোসেন,চৌদ্দগ্রাম।।
বহু দিনের যাতায়াতেও বুঝার উপায় নেই চৌদ্দগ্রাম বাজারের পাশেই একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। দখলদারদের থাবায় সংকুচিত হতে হতে হারিয়েছে শিক্ষাঙ্গনের স্বাভাবিক রূপ। কাঁচাবাজার বসিয়ে প্রায় বন্ধ বিদ্যালয়ে যাতায়ায়ের পথ। প্রবেশমুখেই হাঁস-মুরগির দোকান। বাজারে আলাদা মাংস দোকানের শেড থাকলেও বিদ্যালয়ের দেয়াল ঘেঁষে দেয়া হয়েছে খাসির মাংসের দোকান। এমন বহুমুখী প্রতিবন্ধকতা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মাঝে চলছে বিদ্যালয়টির পাঠদান কার্যক্রম।

সরেজমিন গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম পৌরসভা বাজারস্থ আলহাজ্ব এম.এ করিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। বিদ্যালয়ে যাতায়াতের পথে বিদ্যালয় দেয়াল ঘেঁষে শাকসবজির স্থায়ী দোকান। সরু এই পথটিতে দোকানগুলো এমন প্রশ্বস্ত করে বসানো হয়েছে যেখানে দুই একজন ক্রেতা দাঁড়ালে আর চলার পথ থাকেনা। বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীরা পথ ছেড়ে চলাচল করছেন। প্রবেশ মুখে হাঁস-মুরগির দোকান থেকে আসছে দুর্গন্ধ। প্রবেশ মুখের উত্তর পাশে বিদ্যালয়ের দেয়াল ঘেঁষে সারিবদ্ধভাবে ছাগল বেঁধে রাখা হয়েছে জবাইয়ের অপেক্ষায়।

অভিভাবক ও সাধারণ মানুষ বলছেন, ১৯৯১ সালে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সময় এখানে বাজার ছিল না। ২০০২ সালে পৌরসভায় উন্নীত হওয়ার পর আলাদাভাবে কাঁচাবাজার, মাংস, ডিম ও অন্যান্য ব্যবসায়ীদের জন্য আলাদা শেড তৈরি করা হয়। বাজারের দক্ষিণ অংশে মাংসের দোকান। শাকসবজি ব্যবসায়ীদেরকে বাজারের উত্তর অংশে স্থানান্তর করা হয়। যার পূর্বদিকে বিদ্যালয়টির অবস্থান। উন্মুক্ত রাখা হয়েছিল বিদ্যালয়ে যাতায়াতের পথ। বর্তমানে শাকসবজি ব্যবসায়ীরা নির্ধারিত জায়গা ব্যবহার করছেন গোডাউন হিসেবে। দোকান বসেছে চলাচলের পথে। চলাচলে প্রতিবন্ধকতার প্রতিবাদে ব্যবসায়ীদের সাথে বাক-বিতণ্ডা জড়ানোর কথা জানান অভিভাবক আবুল হাসান।

দখলদার দোকানিরা বলছেন, আমরা এই জায়গায়(রাস্তায়) দোকান বসানোর জন্য ভাড়া পরিশোধ করি। ইজারাদার সাবেক কাউন্সিলর বাবুলের লোক এসে টাকা নিয়ে যায়।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা আয়শা আক্তার বলেন, বিদ্যালয়ের সামনে বাজার স্থানান্তরের পর হাঁস-মুরগির দোকান ছিল না। উন্মুক্ত ছিল যাতায়াতের পথ। প্রথম দিকে হাটের দিন একটি ঝাঁপি নিয়ে বসতো দোকানিরা। বিগত দেড় দুই বছরে সেই দোকানিরাই রাস্তাজুড়ে বসিয়েছেন স্থায়ী দোকান। দোকান সরাতে প্রতিবাদ করে কোনো কাজ হয়নি । কয়েক দফায় উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভায় লিখিত অভিযোগ করেও প্রতিকার মেলেনি। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও চলাচলে প্রতিবন্ধকতায় অভিভাবকরা শিক্ষার্থীদেরকে নিয়ে যাচ্ছেন  অন্যত্র। দুর্গন্ধে বিদ্যালয়ের উত্তরাংশে শিশু শ্রেণী ও তৃতীয় শ্রেণী কক্ষে পাঠদান বন্ধ রাখতে হচ্ছে।

ইজারাদার বাবুল জানান, বিদ্যালয়ে যাতায়াতের পথে আগে দোকান ছিল না। ধীরে ধীরে ওই পথে স্থায়ী দোকান বসেছে। তারা(দোকানদার) নিয়মিত ভাড়া পরিশোধ করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নুরুল হুদা তালুকদার বলেন, উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভার সমন্বয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় দখলদারদেরকে উচ্ছেদ করে হবে। যাতে করে বিদ্যালয়ের পাঠদান পরিবেশ সুন্দর ও স্বাভাবিক হয়।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ জানান, পৌরসভা কর্তৃপক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইতোমধ্যে আমাদের দল বাজার পরিদর্শন করেছে। এটি আইনি প্রক্রিয়াধীন।

 

inside post
আরো পড়ুন