ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সড়কের ভূমি অধিগ্রহণে ক্ষতিপূরণ প্রদানে অনিয়মের অভিযোগ
এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জাতীয় মহাসড়কের জন্য অধিগ্রহণকৃত ভূমির ক্ষতিপূরণ প্রদানে হয়েছে অনিয়ম। জেলার আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত সড়কটি চারলেনে উন্নীতকরন প্রকল্পের অধিগ্রহণকৃত ভূমির প্রকৃত অবস্থা এবং যৌথ তদন্তের ভিত্তিতে ক্ষতিপূরণ নিরূপন হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন ভূমির মালিকরা।
সোমবার (১৩ জুলাই) ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে ক্ষতিগ্রস্থ ২৩ ভূমি মালিক সাংবাদিক সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন। তারা ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দাবী করেন। ক্ষতিগ্রস্থদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, চার লেন বিশিষ্ট ওই জাতীয় মহাসড়ক তৈরীতে সরকার ভূমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন এল.এ কেইস নং ১২/২০১৮-১৯ মূলে অধিগ্রহণ কার্যক্রম শুরু করে। এর অংশ হিসেবে ২০১৯ সালের ১৯ মে অধিগ্রহণকৃত জায়গার সরেজমিন ভিডিও ধারণ করে যৌথ তদন্তের জন্য ভূমি মালিকদের নোটিশ প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে তদন্তের বিষয় ফিল্ডবুকে লিপিবদ্ধ করে ভূমি মালিকদের কাছ থেকে স্বাক্ষর গ্রহণ করে তাদেরকে অনুলিপি প্রদান করা হয়। যৌথ তদন্তের পর তদন্ত টিম ফিল্ডবুকে ভাদুঘর মৌজার বিএস খতিয়ানের ৮, ১৩, ১৫, ৫০, ৫১, ৫২, ৫৯,৬০,৬১, ৬২, ৭৭, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১১২, ১১৩, ১১৪, ১২৩, ১২৪, ১২৬, ১৫৬,১৯৪, ৮২৮, ৮৩০,৮৩১, ৮৩৩, ৮৩৫, ৮৪৭, ৮৭২ নং দাগের ভূমির বাস্তব অবস্থা ভিটি শ্রেণীর, যাতে গৃহ ও স্থাপনা রয়েছে। এসব জায়গায় শতাধিক পরিবারের আবাসস্থল বিদ্যমান রয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়। এব্যাপারে ৪ ধারা নোটিশ প্রদানের পর ভূমির মালিকরা বাস্তব অবস্থা অনুসারে ভূমির ক্ষতিপূরণ নিরূপণের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর একাধিক আবেদন করেন।
পরবর্তীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসকের পক্ষে এল.এ কর্মকর্তাগণ গত ২০ ফেব্রুয়ারি তারিখে ওইসব ভূমি নাল শ্রেণীর এবং সেখানে বিদ্যমান স্থাপনার কোন ক্ষতিপূরণ উল্লেখ না করে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে ভূমি মালিকদের মধ্যে ২৩ জন জেলা প্রশাসক এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার বরাবর একাধিক লিখিত আবেদন করেন। ভূমির প্রকৃত অবস্থা এবং ক্ষয়ক্ষতি নিরূপন করার তাদের এসব আবেদন আমলে না নিয়ে প্রশাসন অমানবিক সিদ্ধান্ত নেয় বলে ভূমির মালিকরা সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে ন্যায্য ক্ষতিপূরণ পাওয়ার দাবী করেন। সাংবাদিক সম্মেলনে ভূমি মালিক আবদুল মোতালেব গাজী, আজমল খান, মোছা. হাদিজাতুল কুবরা, আবদুল হাসিম, বাছির মিয়া, মো. ধনু মিয়া, মো. সাদেক মিয়া, হারুন অর রশিদ, আক্তার হোসেন, মো. মহব্বত হোসেন চৌধুরী, মো. মহসিন মিয়া, মোছা. পারভীন ইসলাম, মো. আবদুর রশিদ, নূর মিয়া, আনিছ মিয়া, জজ মিয়া, হাসান মিয়া, সানজিদা আক্তার, সাফায়েত, তানভীর অদুদ ও শহিদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে জেলা ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা অঞ্জন দাশ বলেন, ‘তাদের অভিযোগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। নিয়মের বাইরে কোনোকিছুই করার সুযোগ নাই।’