মুরাদনগরের ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান মিয়া করাগারে
কুমিল্লা প্রতিনিধি
অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় কুমিল্লার মুরাদনগর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও সমকালের উপজেলা সংবাদদাতা শরিফুল আলম চৌধুরীর বাড়িতে ঢুকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হাত-পা ভেঙ্গে দিয়েছে চেয়ারম্যান শাহজাহান বাহিনীর লোকজন। তার মুক্তিযোদ্ধা বাবা ও বৃদ্ধ মাকে কুপিয়েও আহত করা হয়। কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার দারোরা ইউনিয়নের কাজিয়াতল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনার মূল মদদদাতা ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান মিয়াকে গ্রেফতার করে রোববার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে । এ ঘটনায় চেয়ারম্যানসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
সাংবাদিক শরিফুল আলম চৌধুরীর বাবা আহত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন চৌধুরী বলেন, দারোরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির সংবাদ প্রকাশ করে তার ছেলে। এতে তার ছেলেকে প্রাণে শেষ করে দেওয়ার জন্য হুমকি দেয় চেয়ারম্যান ও তার দলবল। শরিফের বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। নিজেকে অনিরাপদ ভেবে সে একমাস বাড়ির বাইরে ছিলো। গত সপ্তাহে সে বাড়িতে আসে। শনিবার দুপুরে চেয়ারম্যান শাহজাহানের লোকজন বাড়িতে ঢুকে তাকে টেনে হিচড়ে বাড়ির ওঠানে নেয়। দা দিয়ে কুপিয়ে, হাতুড়ি ও লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে তার দুই হাত পা ভেঙ্গে দেয়। দা দিয়ে তার মাথায় কোপ দিলে মগজের কিছু অংশ বেরিয়ে আসে। আমি ও তার মা তাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে রামদা দিয়ে আমার ডান হাতে কোপ দেয় এবং রড দিয়ে পেটায়। তার মায়ের বাম হাত ভেঙ্গে দেয়। আমাদের চিৎকারেও চেয়ারম্যানের লোকজনের ভয়ে কেউ এগিয়ে আসার সাহস পায়নি। তাকে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে অবস্থা আশংকাজনক দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। আমরা মুরাদনগর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছি।
শরিফুল আলম চৌধুরীর বোন সুলতানা চৌধুরী মুন্নী বলেন, আমাকে ঘরে পেয়ে কাপড় ছিঁড়ে ফেলে। হাতে কামড় দিয়ে ছুটে অন্য বাড়িতে গিয়ে ইজ্জত রক্ষা করি।
মুরাদনগর থানার ওসি এ.কে.এম মনজুর আলম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, উক্ত ঘটনায় শরীফে বাবা আব্দুল মতিন চৌধুরী বাদী হয়ে চেয়ারম্যানসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ঘটনায় জড়িত থাকায় চেয়ারম্যান শাহাজানকে আদালতের মাধ্যমে কুমিল্লা জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকী আসামিদের আটক অভিযান অব্যাহত রয়েছে।