সিরাপ খেয়ে দুই সহোদর শিশু মৃত্যু: আরো দুই তদন্ত কমিটি

এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
inside post
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে ‘নাপা’ সিরাপ খেয়ে’ দুই সহোদর শিশুর মৃত্যুর ঘটনার টনক নড়ে ওঠেছে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের। ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে গঠিত তদন্ত কমিটি মৃতদের স্বজনদের সাথে কথা বলেছেন। ইতোমধ্যে সিরাপটির পরীক্ষা শুরু হয়েছে, এমনকি একই ওষুধের অন্যান্য ব্যাচের ওষুধও পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। ওষুধের রিঅ্যাকশনের বিষয়টি রহস্যজনক বলে মনে করছেন তদন্ত কমিটি। এদিকে ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে আরো পৃথক দুইটি তদন্ত কমিটিও কাজ করছেন।
রোববার (১৩ মার্চ) দুপুর সোয়া ১২টায় জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামে গিয়ে তদন্ত কমিটির সদস্যরা ওই দুই শিশুর স্বজনদেন সাথে কথা বলেন। ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. আকিব হোসেন। এসময় অধিদপ্তরের দুইজন উপ-পরিচালক ও দুইজন সহকারি পরিচালক এবং একজন পরিদর্শক ছিলেন সঙ্গে ছিলেন।
ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটির প্রতিনিধিগণ মৃত দুই শিশুর মা লিমা বেগম, চাচা উজ্জল মিয়া এবং দাদী লিলুফা বেগমের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ তদন্ত কমিটির প্রধান ডা. আকিব হোসেন সাংবাদিকদের জানান, ‘যে সিরাপটি নিয়ে অভিযোগ ওঠেছে, সেটি পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। একই ওষুধের অন্যান্য ব্যাচের ওষুধ সংগ্রহ করেও পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। শিশুদের স্বজনরা জানিয়েছে, ওষুধ খাওয়ানোর পরই তারা অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ বিষয়টি ঊর্ধ্বতনদের সাথে আলোচনা করা হবে। ওষুধটিতে কী এমন উপাদান ছিল- যেটি খাওয়ার ১০/১৫ মিনিটের মধ্যে রিঅ্যাকশন করল- এটি আসলে রহস্যজনক বিষয়। এই রহস্য উদঘাটন করতে হয়তো সময় লাগবে।’
এদিকে ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে পৃথক দুইটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় থেকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মহিউদ্দিনকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসাইন ও ফেনীর সিভিল সার্জন ডা. রফিক-উস-ছালেহীন। তদন্ত কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে আশুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুপুর সাহাকে প্রধান করে তিন সদস্যের পৃথক আরেকটি পরিদর্শন কমিটি করা হয়েছে। সিভিল সার্জন ডা. মুহাম্মদ একরাম উল্লাহ জানান, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটি সরেজমিন তদন্ত করে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে।’
উল্ল্যেখ্য, গত ১০মার্চ রাতে আশুগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামে ‘নাপা সিরাপ খেয়ে’ ইয়াছিন খান (০৭) ও মোরসালিন খান (০৫) নামে দুই সহোদর শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ তোলেন স্বজনরা। মৃতরা দুর্গাপুর গ্রামের ইটভাটা শ্রমিক ইসমাঈল হোসেন ওরফে সুজন খানের ছেলে।
আরো পড়ুন