সুশাসন ও জবাবদিহীতা নিশ্চিতের মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা খাতের কার্যক্রম সমূহ অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার
“করোনাকালীন সংকট মোকাবেলায় প্রাথমিক শিক্ষা খাতের কার্যক্রম : চ্যালেঞ্জ ও করণীয়” শীর্ষক ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)’র অনুপ্রেরণায় গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), কুমিল্লার উদ্যোগে কুমিল্লা স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের সাথে “করোনাকালীন সংকট মোকাবেলায় প্রাথমিক শিক্ষা খাতের কার্যক্রম: চ্যালেঞ্জ ও করনীয় শীর্ষক ভার্চুয়াল সভা গতকাল ১৮ মে ২০২১ তারিখ সকাল ১১ টায় অনুষ্ঠিত হয়। টিআইবি’র এরিয়া ম্যানেজার প্রবীর কুমার দত্ত এর সঞ্চালনায় সনাক সভাপতি বদরুল হুদা জেনুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সনাক কুমিল্লার শিক্ষা বিষয়ক সদস্য প্রফেসর নিখিল চন্দ্র রায়।
মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, দাউদখান্দি মো: নুরুল ইসলাম বলেন করোনাকালীন সময়ে ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করার মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়াও সংসদ টিভি ও বেতার এর মাধ্যমে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। যা শিক্ষকদেরকে মনিটরিং করার জন্য নির্দেশনা দেয়া আছে। আলোচনায় অংশ নিয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, বুড়িচং রওশনআরা বলেন শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। স্বপ্ন দেখা ও কো-কারিকুলাম কার্যক্রম থেকে শিশুরা বঞ্চিত হচ্ছে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, দেবিদ্বার গাজী আনোয়ার হোসেন বলেন, করোনাকালীন সময়ে শিক্ষার্থী, অবিভাবক ও শিক্ষকদের মাঝে ভার্চুয়াল কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তবে প্রান্তিক পর্যায়ে এই ভার্চুয়াল কার্যক্রম তেমন সন্তোষজনক নয়। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, বরুড়া বলেন মুটোফোন, রেডিও এর ব্যবহার সেরকম ভাবে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি কারণ অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ, ইন্টানেট সেবা ভালো নয়। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, মেঘনা লায়লা পারভীন বানু বলেন, প্রত্যন্ত এলাকা হওয়ার কারণে করোনাকালীন সময়ে সরকারি নির্দেশনা সমূহ বাস্তবায়ন করা খুবই চ্যালেঞ্জিং। এই কারণে ন্যাপ এর রিকোভারি পরিকল্পনা অনুযায়ি লকডাউনের পরে কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। আদর্শ সদর উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন মজুমদার বলেন, সীমিত পরিসরে বিদ্যালয় ভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষন করেন। টিআইবি এর সিভিক এনগেইসমেন্ট বিভাগের সমন্বয়কারী মো: আতিকুর রহমান বলেন, করোনাকালীন সময়ে গৃহীত কার্যক্রম যথাযথ মনিটরিং আওতায় নিয়ে আসার অনুরোধ করেন।
এছাড়াও তিনি শিক্ষা খাতের কার্যক্রম এর তথ্যসমূহ সহজলভ্য করা ও জনগণকে অবহিত করা এবং মতামত গ্রহণ করার উপর গুরুত্বআরোপ করেন। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (চ.দা.) মো: আবদুল মান্নান করোনাকালীন সময়ে শিক্ষা কার্যক্রম দারুন ভাবে ব্যহত হচ্ছে, তবে ডিজিটাল মাধ্যমের কারণে শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার বিষয়টি সভাকে অবহিত করেন। তিনি বলেন শিক্ষর্থীদের সাথে যোগাযোগের বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে বর্তমানে কাজ করা হচ্ছে। বর্তমানে মন্ত্রনালয়ে নির্দেশনা ক্রমে একটি শিক্ষা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে, যা লকডাউনের পরে সরাসরি শিক্ষকরা মাঠ পর্য়ায়ে বাস্তবায়ন করবেন। ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্ক ও হোম ভিজিট এর মাধ্যমে প্রায় ৮৩% শিক্ষর্থীর কাছে পৌঁছানো গেছে। যদি কারও কোন ধরণর বিচ্যুতি পরিলক্ষিত হয় তাহলে সরাসরি তাঁর কাছে জানানোর আহবান জানান। তিনি সুশাসনের চর্চা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষা সেবার মান বৃদ্ধির এই ধারাবাহিকতা সকলে সম্মিলিতভাবে অব্যাহত রাখতে হবে। তিনি প্রত্যেকটি পর্যায়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহবান জানান।
তিনি সনাককে পারস্পরিক সহযোগিতার সেতুবন্ধনের মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা খাতের সেবাকে জনবান্ধব করার ক্ষেত্রে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার অনুরোধ করেন। সনাক সভাপতি বদরুল হুদা জেনু পরিচালককে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, করোনাকালীন সময়েও কুমিল্লার প্রাথমিক শিক্ষা খাতে নিয়োজিত শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারিরা কুমিল্লার প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি সনাকের পক্ষ থেকে প্রাথমিক শিক্ষা খাতের সকল কার্যক্রমে অব্যাহত সহযোগিতার কথা পুর্নব্যক্ত করেন। মতবিনিময় সভায় সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সঞ্চিতা দাশ, ১৭ টি উপজেলার সকল উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও সহকারি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, সনাক সদস্য রোকেয়া বেগম শেফালী, স্বজন ও ইয়েস প্রতিনিধিরা যুক্ত ছিলেন।
— সংবাদ বিজ্ঞপ্তি