উদ্বোধনের তিন বছরেও ডিজিটাল হয়নি ভিক্টোরিয়া কলেজ কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি

 

আবু সুফিয়ান রাসেল।।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি। ২৯ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য শতবর্ষী এ বিদ্যাপিঠে ৬৩ হাজারেরও অধিক বই রয়েছে। ২০১৮ সালের ১৬ আগস্ট ‘সংস্কারকৃত কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ও অনলাইন পাবলিক একসেস ক্যাটালগ’ শিরোনামে কাজের উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনের ৪১ মাস পরও কোন কাজ শুরু হয়নি কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির। লাইব্রেরির জন্য শিক্ষার্থী থেকে প্রতি বছর মাথাপিছু ২৫ টাকা আদায় করা হয়। এছাড়াও বিভাগীয় সেমিনারে প্রতি শিক্ষার্থী থেকে নেওয়া হয় ১৬শ’ টাকা। অধ্যক্ষ জানিয়েছেন ৪৫ লক্ষ টাকার কাজ দ্রুত শুরু করা হবে।

রসায়ন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী জান্নাত চৌধুরী বলেন, ডিজিটাল এ সময়ে অনলাইন ক্যাটালগ খুবই জরুরি। হাজার হাজার বইয়ের মধ্যে কাঙ্খিত বইটি সহজে পাওয়া যাবে। তবে তিন বছরেও কাজ হয়নি, শুধু ফলকই দেখি।

ভিক্টোরিয়া কলেজে

অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী কামরুল হাসান বলেন, প্রতিবছর লাইব্রেরি ফি দেওয়ার পর, লাইব্রেরিতে বই পড়তে হলে আবার ২০ টাকা দিয়ে কার্ড করতে হয়। আবার বই বাসায় নেওয়া যাবে না। এসব নিয়ম পরিবর্তন করা দরকার।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ শরীফ বলেন, সাড়ে তিন বছরের অনলাইন ক্যাটালগের কাজ হয়নি। বিষয়টি দুঃখজনক। আমরা প্রতিবছর ২৫ টাকা করে লাইব্রেরি ফি দিচ্ছি। বিভাগের সেমিনারে আবার পৃথক ফি ১৬০০ টাকা জমা দিয়েছি অনার্সে ভর্তির সময়। মাস্টার্সে ভর্তির সময়ও বই ক্রয়ের জন্য ফি দিয়েছি।

 

সহকারি লাইব্রেরিয়ান মো. রেজাউল করিম ভূঁইয়া বলেন, ২০১৮ সালে অনলাইন ক্যাটালগের কাজ উদ্বোধন করা হয়েছে। এরপর আর কোন কাজ হয়নি।


কলেজের লাইব্রেরি কমিটির আহবায়ক ও শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক মোহাম্মদ মঈন উদ্দীন বলেন, উদ্বোধনের সময় অনলাইনে শুধু একটি বই তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। আর কোন কাজ হয়নি। লাইব্রেরির নতুন কমিটি হয়েছে। লাইব্রেরিকে সুন্দর ও ডিজিটাল করার জন্য আমরা অধ্যক্ষ স্যারের নিকট প্রস্তাবনা দিয়েছি। নতুন আরও বই সংযোজন করা হবে। সকল বইয়ের তালিকা অনলাইনে থাকবে। বিভিন্ন অনলাইন লাইব্রেরির সাথে আমদের চুক্তি থাকবে, যেন বিনামূল্যে ই-বই পড়া যায়। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য পৃথক কর্নার থাকবে। পত্রিকা সংখ্যা বাড়ানো হবে। আরেকটি বিষয় হলো, একটি লাইব্রেরিতে যতো বেশি পুরাতন বই থাকবে, তা ততো সমৃদ্ধ হবে। শতবর্ষী এ কলেজে অনেক পুরাতন বই আছে, যা সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে। আমরা তা বাঁধাই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নতুন যে বাজেট এসেছে, তা অবকাঠামোগত বিষয়কে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ফ্রি ইন্টারনেটের সুবিধা থাকবে।

এ বিষয়ে কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আবু জাফর খান বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর লাইব্রেরিকে এ অবস্থায় পেয়েছি। করোনার কারণে দীর্ঘ দিন কলেজ বন্ধ । লাইব্রেরিকে ডিজিটাল করার জন্য যা যা করার প্রয়োজন আমাদের সব পরিকল্পনা রয়েছে। সে লক্ষে কমিটি কাজ করে যাচ্ছেন। নতুন একটি প্রকল্পে আমরা ৪৫ লক্ষ টাকা পেয়েছি। যা টেন্ডারের অপেক্ষায় আছে। টেন্ডারের পরপর কাজ শুরু হবে। আশা করি সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে থাকবে। পূর্বে শুধু ফলক লাগানো হয়েছে। কোন কাজ হয়নি।