ঢাকা-চট্টগ্রাম ট্রেন চলাচল বন্ধ

 

নাঙ্গলকোটে ৯বগি লাইনচ্যুত,আহত ৩০
৬ ঘণ্টা পর উদ্ধার কাজ শুরু
৫সদস্যের তদন্ত কমিটি
 প্রতিনিধি।।
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের হাসানপুরে জামালপুরগামী বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনের ৯টি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। রবিবার (১৭ মার্চ) দুপুর পৌনে দুইটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট, চাঁদপুর অভিমুখী ও ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট, চাঁদপুর থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখী ট্রেন চলাচল বন্ধ আছে। এ দুর্ঘটনায় পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্তত ৫০০ মিটার রেলপথ। আহত হন অন্তত: ৩০জন। দুর্ঘটনার ৬ ঘন্টা পর পৌনে ৮টার দিকে উদ্ধার কাজ শুরু করে রেল কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, রবিবার ১১ টা ৪০ মিনিটে চট্টগ্রাম থেকে জামালপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয় বিজয় এক্সপ্রেস। দুপুর পৌনে দুইটাই কুমিল্লা নাঙ্গলকোটের হাসানপুর সংলগ্ন তেজের বাজার এলাকায় বগি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ট্রেনটির ইঞ্জিন। এসময়ে একে একে নয়টি বগি যাত্রী নিয়ে পড়ে যায় রেল লাইনের পাশে। লাইন উঠে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় অন্তত ৫০০ মিটার রেলপথ। রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রচন্ড উত্তাপে রেললাইন বেঁকে যাওয়ায় এই দুর্ঘটনা। যাত্রীবাহী নয়টি বগি নিয়ে বিজয় এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা কবলিত হলেও কোন প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন আহত অন্তত: ৩০ জন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঈসমাইল হোসেন ও দেবাশীষ চৌধুরী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় কুমিল্লা, লাকসাম এবং চৌদ্দগ্রাম থেকে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি দল ঘটনাস্থলে অবস্থান করেন। দুর্ঘটনার দু‘ঘন্টায়ও রেলওয়ের উর্ধ্বতন কোন কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে দেখা যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শী ট্রেনের এটেন্ডেস আবদুস সাত্তার বলেন ও আবুল বাশার বলেন, ট্রেনটি চট্রগ্রাম থেকে ১১ টা ২০ মিনিটে ছেড়ে আসে। হাসানপুর রেলস্টেশন সংলগ্ন স্থানে আসার পর ট্রেনটি পাশ্ববর্তী মাঠে পড়ে যায়। এসময় ট্রেনের জানালা খোলা থাকায় যাত্রীরা জানালা দিয়ে বের হয়ে যায়।
ট্রেনের যাত্রী শামছুন্নাহার জানান, আমার বোন এবং দুই বাচ্চাসহ ট্রেনের ঢ বগিতে ছিলাম। দুর্ঘটনার সময় ট্রেনের ভিতরে ঝনঝন শব্দ হয় এবং ধুলা উড়তে থাকে। বগিটি লাইনচ্যুত হওয়ার পর আমরা বাচ্চাদের নিয়ে বগি থেকে বের হই। এসময় আমি আহত হই।
নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন বলেন, ট্রেন লাইনচ্যুতের ঘটনায় ৪/৫ জন যাত্রী গুরুতর আহত হয়েছে। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। আন্যান্য যাত্রীদের উদ্ধার করে তাদের গন্তব্যস্থলের প্রেরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে চট্টগ্রাম এবং আখাউয়া থেকে উদ্ধারকারী রিলিফ ট্রেন এসে লাইনচ্যুত বগিগুলো উদ্ধার করে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
রেলওয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে উত্তাপের কারণে ট্রেন লাইন বেঁকে যাওয়ায় এই দুর্ঘটনা। তবে দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানতে রেলওয়ের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনিছুর রহমানকে প্রধান করে ৫সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
উদ্ধার কাজের বিষয়ে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম থেকে একটি রিলিফ ট্রেন এসেছে। উদ্ধারকাজ দ্রুত শেষ হবে বলে ধারণা করছি। তবে কখন শেষ হয় তা বলতে পারছিনা।