মেয়ে হত্যার অভিযোগে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা, চারজনের চারদিনের রিমান্ড
আমোদ প্রতিনিধি।।
আরো পড়ুন:
কুমিল্লার দেবিদ্বারে শিশু ফাহিমা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) অভিযানে আটক পিতা আমির হোসেনসহ পাঁচজনকে দেবিদ্বার থানায় হস্তান্তর করার পর বুধবার রাতে স্বামী মো. আমির হোসেনসহ আটক ৫জনকে অভিযুক্ত করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন নিহত ফাহিমার মা হোছনা আক্তার। বৃহস্পতিবার বিকেলে গ্রেফতার আসামিদের মধ্যে চারজনের চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
হোছনা আক্তারের দায়ের করা মামলার আসামিরা হলেন, দেবিদ্বার পৌর এলাকার চাপানগর গ্রামের মো. জহিরুল ইসলামের ছেলে ফাহিমার পিতা এবং বাদীর স্বামী ট্রাক্টর চালক মো. আমির হোসেন(২৫), মো. হাবিবুর রহমানের পুত্র মো. রেজাউল ইসলাম ইমন(২৪), মো. আবুল কালামের স্ত্রী লাইলী আক্তার(৩০), লিলু মিয়ার পুত্র মো. রবিউল ইসলাম(১৯), ফারুক মিয়ার পুত্র সিএনজি অটোরিকশা চালক সোহেল রানা(৩০)।
মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা দেবিদ্বার থানার উপ-পরিদর্শক নাজমুল হাসান জানান, আটক ৫ আসামিকে বৃহস্পতিবার কুমিল্লা ৪নং আমলি আদালতে হাজির করা হলে আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারহানা সুলতানার নিকট বিকেল ৫টায় লাইলী বেগম ফাহিমা হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন। বাকি ৪ আসামিকে ৭দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত ৪দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় করাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
মামলার বাদী হোছনা আক্তার তাঁর এজাহারে উল্লেখ করেন, মো. আমির হোসেন আমার স্বামী ও অন্যান্য আসামিরা আমার প্রতিবেশী হয়। আমাদের সংসারের একমাত্র কন্যা সন্তান ছিল ফাহিমা আক্তার (৫)। আমার স্বামী পেশায় একজন ট্রাক্টর চালক। আমার স্বামী প্রতিবেশী ৩ সন্তানের জননী লাইলী বেগমের সাথে অনৈতিক কাজ করার সময় আমার মেয়ে ফাহিমা দেখে ফেলে এবং এ ঘটনার আমার নিকট জানিয়ে দেয়ার কথা বললে ওরা ঘটনার সাক্ষী মুছে ফেলতে আমার মেয়েকে হত্যা করে।
প্রসঙ্গত, গত ১৪ নভেম্বর ভোরে নিজ বাড়ি থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে উপজেলার এলাহাবাদ ইউনিয়নের কাচিসাইর গ্রামের নজরুল ইসলাম মাস্টারের বাড়ির সামনে দেবিদ্বার-চান্দিনা সড়কের পাশের খাল সংলগ্ন একটি ব্রিজের গোড়ায় বাজারের ব্যাগে মানুষের পা বেরিয়ে থাকতে দেখেন পথচারীরা। পরে পুলিশ অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন। এসময় ঘটনাস্থলে গিয়ে তার মাথার চুল এবং গায়ের হলুদ গেঞ্জি দেখে শনাক্ত করে পরিবারের লোকজন।
১৪ নভেম্বর ফাহিমার মরদেহ উদ্ধারের পর ফাহিমার বাবা আমির হোসেন বাদী হয়ে দেবিদ্বার থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলা দায়ের এবং মরদেহ উদ্ধারের পর থেকেই এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে কুমিল্লা র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-১১ সিপিসি-২ এর উপ-পরিচালক মেজর সাকিব হোসেন, পিবিআই’র উপ-পরিদর্শক(এসআই) মতিউর রহমান, দেবিদ্বার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হাসানসহ একাধিক টিম দফায় দফায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
র্যাব তাদের ছায়াতদন্তসহ নানাভাবে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের স্বার্থে কয়েকজনকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতায় ফাহিমার বাবাসহ ৫জনকে আটক করে। পিতা আমির হোসেনই প্রথম ফাহিমাকে ছুরিকাঘাত করে।