আগাম ধানে কুমিল্লার মাঠে বাড়বে সরিষার হাসি
প্রতিনিধি।।
ধানের জাত পরিবর্তনে কুমিল্লায় বাড়ছে সরিষা আবাদের জমি। কুমিল্লার দেবিদ্বারে গত বছরের ৩৬৯ হেক্টরের বিপরীতে এবছর ৬০০ হেক্টরের বেশি জমিতে সরিষা আবাদ হবে। এদিকে কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার মাঠে বেড়েছে আগাম জাতের রোপা আমনধানের আবাদ।
উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা যায়, স্বল্প জীবনকালীন ব্রি ধান৭১, ব্রি ধান৭৫, ব্রি ধান৮৭, ব্রি ধান৯৫, বিনাধান-১৭ জাতের কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে। উপজেলায় গত বছর স্বল্প জীবনকালীন জাত সমূহের মোট আবাদ ছিল ১২০১ হেক্টর, যা এ বছর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬৫৩ হেক্টর। তাছাড়া, স্বল্প জীবনকালীন বিনাধান-১৬ জাতটি ১৭ হেক্টর, বিনাধান-২০ জাতটি ৪৫ হেক্টর ও রাবি-১ ধানটি চাষ হয়েছে ৫৬ হেক্টর জমিতে।
সূত্র জানায়,জলাবদ্ধতা, আকস্মিক বন্যার শঙ্কা ও আউশ ধান দেরিতে কাটাসহ নানা কারণে কুমিল্লায় রোপা আমনধান দেরিতে রোপণ ও নাবি জাতের(বেশি সময়) ধানের আবাদের প্রচলন রয়েছে। এতে দীর্ঘদিন যাবত কৃষকদের মাঝে বি আর২২, বি আর২৩ ও ব্রি ধান৪৬ নাবি জাত সমূহ বেশ জনপ্রিয়। তবে নাবি জাত সমূহ চাষ করলে রবি মৌসুমে সরিষাসহ আগাম রবি ফসল আবাদ ব্যাহত হয়। অপরদিকে সরিষাসহ তেল ফসল সমূহের আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির কাজ করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এরই ধারাবাহিকতায় কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার মাঠে বেড়েছে আগাম জাতের রোপা আমনধানের আবাদ।
ইউসুফপুর ইউনিয়নের ইউসুফ গ্রামের কৃষক মো. ইমরান, আবুল কালাম ও শফিকুল ইসলাম জানান, আগে তারা বি আর২২ চাষ করতো। গত বছর ব্রি ধান৭৫ ও ব্রি ধান৯৫ এর ফলন দেখে কৃষকেরা এবার জাত দুটি আবাদ করেছে। তাছাড়া কৃষি অফিসের মাধ্যমে বিনাধান-১৭ এর বীজ পেয়েছে। ফলে মাঠের ১৫০ কানির বেশি জমিতে সরিষা আবাদের ইচ্ছা আছে কৃষকদের, গত বছর ছিল মাত্র ২ কানি।
ইউসুফপুর ব্লকের উপসহকারি কৃষি অফিসার মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ৫ একরের বীজ উৎপাদন গ্রুপের মাধ্যমে বীজ রেখে তা মাঠের কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এবার মাঠের সবাই সরিষা আবাদের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।
দেবিদ্বার উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ বানিন রায় জানান, রোপা আমন মৌসুম শুরুর আগেই বিভিন্ন ইউনিয়নের মাঝারি উঁচু জমির সরিষা আবাদী সম্ভাব্য মাঠ চিহ্নিত করে কৃষকদের মাঝে স্বল্প জীবনকালীন জাত সমূহ ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। কৃষকদের সরিষা আবাদে উদ্বুদ্ধ করতে গ্রামে গ্রামে উঠান বৈঠক ও উদ্বুদ্ধকরণ সভা করছি। ১১,৯৪৮ হেক্টর জমিতে রোপা আমন আবাদ হয়েছে। সেই সাথে সরিষা আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ৬০০ হেক্টরের অধিক অর্জন হবে বলে আশা করছি।