একদফার কবর দিতে চাওয়া ডা. নাজমুল হাছান চৌধুরীকে ঢাকায় পদায়ন!

 

নিউজ ডেস্ক।।

শান্তি সমাবেশে অংশ নিয়ে ছাত্র-জনতার একদফার কবর দিতে চাওয়া কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাজমুল হাছান চৌধুরীকে এবার রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হাসপাতালে পদায়ন করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের (পার-২ শাখা) সিনিয়র সহকারী সচিব আবু রায়হান দোলন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে পদায়নের এ আদেশ দেওয়া হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পদায়নকৃত কর্মকর্তা আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগ দেবেন। একই প্রজ্ঞাপনে অধ্যাপক ডা. নাজমুল হাছান ছাড়াও ১২ চিকিৎসককে বদলি ও পদায়ন করা হয়েছে। এর মধ্যে ছয়জনকে নিউরোসায়েন্সেসে পদায়ন করা হয়েছে। ছয়জনকে নিউরোসায়েন্স থেকে বদলি করা হয়েছে।

 

এদিকে অধ্যাপক ডা. নাজমুল হাছানকে ঢাকায় পদায়নের পর থেকে ক্ষুব্ধ কুমিল্লার চিকিৎসকরা। শাফি উল্লাহ নামে এক চিকিৎসক ফেসবুকে লিখেছেন, বিজয়ের এক মাস পরে আজকের দিনটা হয়তো আনন্দের হতে পারত। কিন্তু, যা অবস্থা দেখছি, এতে মন আবার ক্ষত-বিক্ষত। যাদের হাতে ছাত্র-জনতার রক্ত লেগে আছে, যারা ছাত্রদের জঙ্গি বানিয়ে শান্তি সমাবেশ করেছিল, তাদের বিচার না হয়ে উলটো প্রমোশন হয়ে যাচ্ছে। তারা রাঘববোয়াল হয়ে এখন সবার অধিকার নষ্ট করে মহা-বৈষম্য সৃষ্টি করবে। এদের এখনই চিহ্নিত করে থামানো উচিত। এ বিষয়ে জানতে অধ্যাপক নাজমুল হাছান চৌধুরীকে একাধিকবার কল করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

জানা গেছে, ৩ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে শান্তি সমাবেশের আয়োজন করে আওয়ামীপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ)। এরই অংশ হিসাবে কুমিল্লা মেডিকেলেও শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে অধ্যাপক ডা. নাজমুল হাছান চৌধুরী অংশ নেন এবং তিনি সমাবেশের সামনের সারিতে ছিলেন।- সূত্র:যুগান্তর।

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন)

শান্তি সমাবেশ সংগঠিত করা কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. শেখ ফজলে রাব্বিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) নিয়োগ দিয়েছে মন্ত্রণালয়। সেইসঙ্গে আরও ছয় চিকিৎসককে নতুন কর্মস্থলে বদলি ও পদায়ন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের পার-২ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব আবু রায়হান দোলন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বদলির তথ্য জানা গেছে।

চিকিৎসকরা বলছেন, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে ৩ আগস্ট কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে নেতৃত্ব দেন হাসপাতালটির পরিচালক ডা. শেখ ফজলে রাব্বি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. শেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘আমি কুমিল্লা মেডিকেলের পরিচালক ছিলাম, সে হিসেবে পদের কারণে আমাদের ওখানে যেতে হয়েছিল। এখানে কেউ খুশিতে গেছে, কাউকে আবার অখুশিতে যেতে হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের অতীতে এমন কোনো কার্যকলাপ নেই, ছাত্রদের কাজে বাধা দেওয়া বা হুমকি-ধমকি দেওয়া এমন কিছু নেই। কিন্তু পদের কারণে যেতে হয়েছে। ছাত্র বা ছাত্রজনতার আমার বিরুদ্ধে কখনো কোনো অভিযোগ ছিল না। সব সময় নিরপেক্ষভাবে কাজ করেছি।’

ডা. শেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘পদের কারণে ড্যাবের (বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন) ডাক্তাররাও শান্তি সমাবেশে গিয়েছিল। আমাদের ডিডি (উপপরিচালক) সাহেবসহ আরও কয়েকজন একই কারণে গিয়েছিলেন।’

শান্তি সমাবেশে উপস্থিত থাকার জন্য নিজে ‘অনুতপ্ত’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যারা শহিদ হয়েছেন, তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। যারা অসুস্থ তাদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি। সবাই জানে আমরা কিভাবে তাদের সাহায্য করেছি। বাধ্য হয়ে উপস্থিত থাকার কারণে যদি আমাদের অপরাধ হয়ে থাকে, তার জন্য আমরা অনুতপ্ত, দুঃখিত।’

আরও যারা বদলি হলেন

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে অধিদপ্তরের উপপরিচালক (পার-১) ডা. মো. মাসুদ পারভেজকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে পাঠানো হয়েছে।

এ ছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে সহকারী পরিচালক হিসেবে ওএসডি থাকা ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরীকে উপপরিচালক হিসেবে বদলি করা হয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

একই প্রজ্ঞাপনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. হারুন-অর-রশীদকে রংপুর বিভাগের বিভাগীয় পরিচারক (স্বাস্থ্য), চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. অং সুই প্রু মারমাকে চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া সিবিএইচসির প্রোগ্রাম ম্যানেজার (প্রকিউরমেন্ট এন্ড লজিস্টিকস) ডা. মো. ফারুক হোসেনকে ওএসডি করে ময়মনসিংহ আইএইচটিতে এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ওএসডি থাকা ডা. মাহবুব আরেফীন রেজানুরকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় আইএইচটিতে সংযুক্ত করা হয়েছে।

সূত্র: মেডিভয়েস।