কসবায় গাড়ির ত্রিমুখী সংঘর্ষে একই পরিবারের চারজন নিহত 

এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
রয়েল সিমেন্ট কোম্পানীর মালবোঝাই ট্রাক, যাত্রীবাহী প্রাইভেটকার এবং সিএনজিচালিত অটোরিকশা। কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা এলাকায় একই স্থানে শুক্রবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে তিনটি গাড়ির মুখোমুখী সংঘর্ষে আটজন হতাহত হয়েছেন। তন্মধ্যে হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায় একই পরিবারের শিশুসহ চারজন। আহত অপর চারজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় পাঠানো হয়েছে ঢাকায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় এলাকাবাসী এবং পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দুপুর দুইটার কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে কসবা উপজেলার বিনাউটি ইউনিয়নের সৈয়দাবাদ দক্ষিণপাড়া এলাকায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে কুমিল্লাগামী রয়েল সিমেন্ট কোম্পানীর মালবোঝাই ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিপরীতমুখী প্রাইভেটকারকে চাপা দেয়। ঘটনার পরপরই প্রাইভেটকারটির পেছনে থাকা একটি সিএসজিচালিত অটোরিকশাকেও ট্রাকটি চাপা দেয়। এতে প্রাইভেটকার এবং সিএনজিতে থাকা চালকসহ আটজন মারাত্মক আহত হয়। এসময় স্থানীয় জনতা এগিয়ে এসে আহতদের উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। হাসপাতালে নেয়ার পথেই পাঁচ বছর বয়েসী এক কন্যাশিশুসহ তিনজন এবং হাসপাতালে নেয়ার পর আরো একজনসহ একই পরিবারের চারজন মারা যায়।
নিহতেরা হলেন কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার যাত্রাপুর গ্রামের বৃদ্ধ নাবালক মিয়া (৭২), তার স্ত্রী আয়েশা খাতুন (৬০), ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ফাতেমা খাতুন (৫৫) ও নাতনি নাদিয়া আক্তার (৫)। এদিকে এ ঘটনায় আহত হন প্রাইভেটকার চালকসহ অপর চারজন। তারা হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বাসুদেব ইউনিয়নের ঘাটিয়ারা গ্রামের বিল্লাল মিয়া(২২), সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার নরসিংহপুর গ্রামের প্রাইভেটকার চালক সালমান মিয়া (২২), কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার যাত্রাপুর গ্রামের নিহত নাবালক মিয়ার ছোট ভাই খুরশেদ আলম (৬০) ও নাতনি জান্নাত আক্তার (৪)৷ তাদেরকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি ঘটায় তাদের চারজনকেই উন্নত চিকিৎসার্থে ঢাকায় প্রেরণ করা হয় বলে হাসপাতাল সূত্র নিশ্চিত করেছেন। এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঘাতক ট্রাকটিকে আটক করতে সক্ষম হলেও এর চালক হন বেপাত্তা।
দুর্ঘটনায় স্ত্রী, বড় ভাই, ভাবী নাতনীকে হারিয়ে অনেকটা বাকরুদ্ধ খুরশিদ মিয়া জানান, শুক্রবার দুপুরে দুপুরে কুটিচৌমুহনী থেকে সিএনজিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাবার উদ্দেশ্যে রওনা করি। পথে মনকাশাইর বাসস্ট্যাণ্ড পার হবার পরই দুর্ঘটনার কবলে পতিত হই। এরপর কি হয়েছে, কিছুই বলতে পারবো না।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা.এবিএম মুসা চৌধুরী জানান, ‘হাসপাতালে আসার আগে পথেই এক শিশুসহ তিনজন মারা যায় এবং হাসপাতালে আসার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরেকজন মারা যায়।’
খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার পরিদর্শক (ওসি) মাহবুবুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল ও জেলা সদর হাসপাতাল পরিদর্শন করেছে। নিহত তিনজনের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। ট্রাকটিকে আটক করা গেলেও পালিয়েছে এর চালক।’