কুমিল্লার ৪টি হাসপাতালের যত অসুখ-বিসুখ

 

কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলার গ্রামাঞ্চলে নির্মিত ২০ শয্যার তিনটি ও ১০শয্যার একটি হাসপাতাল নানা সংকটে ধুঁকছে। কোনটির দরজা মাঝেমধ্যে খোলা হয়। কোনটির নামমাত্র আন্ত:বিভাগ চালু হয়েছে। নেই পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা। এনিয়ে গত সপ্তাহে সাপ্তাহিক আমোদ পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে।

সংবাদে উল্লেখ করা হয়, ২০ শয্যার হাসপাতালগুলো হচ্ছে বরুড়া উপজেলার সোনাইমুড়ি, নাঙ্গলকোট উপজেলার গোহারুয়া, দাউদকান্দি উপজেলার শহীদনগরের ট্রমা সেন্টার। এছাড়া চৌদ্দগ্রামের ১০ শয্যার কালিকাপুর হাসপাতাল।

২০০৬ সালের ১৭ অক্টোবর উদ্বোধন করা হয় নাঙ্গলকোট উপজেলার গোহারুয়ায় ২০ শয্যার হাসপাতালটি। প্রায় ছয় কোটি টাকা ব্যয়ে এ হাসপাতালটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের ১৬ বছরেও ব্যয়বহুল হাসপাতালটি জনগণের তেমন কোনো কাজে আসছে না। ডাক্তার, নার্স এবং নিরাপত্তাপ্রহরী না থাকায় হাসপাতাল আঙিনা এখন গোচারণ ভূমি। লতাপাতায় ঢেকে যাচ্ছে হাসপাতালের নয়টি ছোট-বড় ভবন। এখানে সপ্তাহে একটি দুই দিন বহি:বিভাগে রোগী দেখা হয়।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দুর্ঘটনায় আহতদের জরুরি সেবা দিতে প্রায় ছয় কোটি টাকা ব্যয়ে ২০০৬ সালে কুমিল্লার দাউদকান্দির শহীদনগরে ট্রমা সেন্টার নির্মাণ করা হয়। সেখানে জনবল না থাকায় তার কার্যক্রম চলছে নামমাত্র। মাঝে মধ্যে আউটডোরে রোগী দেখা হয়।
বরুড়ার সোনাইমুড়ি হাসপাতালটির কাজ ২০০২ সালে শুরু হয়। দেড় যুগে সেটি পূর্ণাঙ্গতা পায়নি। নামমাত্র বর্হিবিভাগ চালু আছে। চৌদ্দগ্রামের কালিকাপুর হাসপাতালে আন্ত:বিভাগ চালু করা হলেও তা বন্ধ রয়েছে।

কুমিল্লা সিভিল সার্জন অফিসের একটি সূত্র জানায়, প্রতিটি হাসপাতালে ১৩টি পদের বিপরীতে ১৮ জন জনবল নিয়োগ দিয়ে তাদের হাসপাতালে দুই বছর টানা দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিতে হবে। কারণ, বিচ্ছিন্নভাবে নিয়োগ দিলে কেউ গ্রাম এলাকায় থাকতে চায় না।

কুমিল্লার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. নিসর্গ মেরাজ চৌধুরী বলেন, শুধু চিকিৎসক দিয়ে হাসপাতাল চালানো যায় না। এজন্য সাপোর্ট স্টাফের প্রয়োজন হয়। জনবল সংকটের কারণে আমরা গোহারুয়া ও শহীদনগরসহ অন্য হাসপাতালগুলো পুরোপুরি চালু করতে পারছি না। মন্ত্রণালয় জনবল নিয়োগের ব্যবস্থা করলে পূর্ণাঙ্গরুপে চালু করতে পারবো।

উল্লেখ্য- কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলার গ্রামাঞ্চলে ২০ শয্যার ছয়টি ও ১০শয্যার একটি হাসপাতাল রয়েছে। তার মধ্যে দাউদকান্দি উপজেলার দোনারচরে ২০শয্যা, চান্দিনা উপজেলার মহিচাইলের ২০শয্যা ও লালমাই উপজেলার বাগমারার ২০ শয্যা হাসপাতালে আন্ত:বিভাগ চালু রয়েছে।

 

আমরা মনে করি,২০ শয্যার বরুড়া উপজেলার সোনাইমুড়ি, নাঙ্গলকোট উপজেলার গোহারুয়া, দাউদকান্দি উপজেলার শহীদনগরের ট্রমা সেন্টার ও চৌদ্দগ্রামের ১০ শয্যার কালিকাপুর হাসপাতাল পূর্ণাঙ্গ চালু হলে লাখো তৃণমূলের মানুষ চিকিৎসার সুবিধা পাবেন। এবিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্যোমী ভূমিকা নিতে হবে।