কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে কোরআন রাখার কথা স্বীকার করেছেন ইকবাল: পুলিশ

 

কুমিল্লা প্রতিনিধি।।

কুমিল্লা নগরীর নানুয়ার দিঘির পাড়ের পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন অবমাননার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ইকবাল হোসেন ঘটনার দায় স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ইকবাল বলেছে, সে ওই পূজামণ্ডপে হনুমানের মূর্তিতে পবিত্র কোরআন রেখেছিলো। এরপর মূর্তি থেকে গদা নিয়ে একটি পুকুরে ফেলে দিয়েছিলো।

শনিবার দুপুর ১২ টার দিকে কুমিল্লার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মিথিলা জাহান নিপার আদালতে ইকবালসহ চারজনকে হাজির করে পুলিশ। এ সময় পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত ওই চারজনের সাতদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) এম.তানভীর আহমেদ।

ইকবাল ছাড়া অন্য তিনজন হলেন- দারোগাবাড়ি মাজারের সহকারী খাদেম হিসেবে পরিচিত হুমায়ুন কবির ও ফয়সাল আহমেদ এবং  ঘটনার দিন ৯৯৯-এ কল করা ইকরাম হোসেন।

দুপুর ১টার দিকে আদালত প্রাঙ্গনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) এম.তানভীর আহমেদ এ ঘটনা নিয়ে সাংবাদিকদেরর সঙ্গে কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, ইকবাল ঘটনার দায় স্বীকার করেছে। আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। এ ঘটনার পেছনে কারা আছেন, সেটি এখনো জানা যায়নি। আমাদের তদন্ত ও আসামিদের জিজ্ঞাসাবাস চলছে। এই চারজনকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
তিনি বলেন, ইকবাল ঘটনার পর হনুমানের মূর্তির গদাটি একটি পুকুরে ফেলেছে বলে জানিয়েছে। আমরা তাকে নিয়ে সেটিও উদ্ধারের চেষ্টা করছি। ঘটনার দিন সে মানুষকে উস্কে দিয়েছে এবং নিজে সহিংসতায় অংশ নিয়েছে বলেও স্বীকার করেছে। এরপর ঘটনা বুঝতে পেরে সে প্রথমে ট্রেনে করে চট্টগ্রাম এবং পরে সেখান থেকে কক্সবাজার চলে যায়।

তিনি আরও বলেন, দুপুর ১২টার দিকে আসামিদের আদালতে তোলা হয়। এসময় পুলিশ চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। পরে আদালত তাদের ৭ দিনের  রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। আমরা আজ থেকেই তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করছি। পরবর্তীতে সবকিছু আপনাদের জানানো হবে।

উল্লেখ‌্য, দেশে উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গাপূজা চলাকালে গত ১৩ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লা নগরীর নানুয়ার দীঘির পাড়ের ওই পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরীফ পাওয়ার অভিযোগ উঠে। ওই ঘটনার পর গত এক সপ্তাহ ধরে ঢাকা ও কুমিল্লা পুলিশের কয়েকটি দল তদন্তে নামে। তারা ঘটনাস্থলের আশপাশের বিভিন্ন স্থান থেকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করেন। দীর্ঘ তদন্ত ও অনুসন্ধানের পর ইকবাল হোসেনের বিষয়ে নিশ্চিত হন তারা। পরে এ ঘটনায় জড়িত প্রধান সন্দেহভাজন ইকবাল হোসেনকে (৩২) কক্সবাজার জেলা পুলিশের একটি দল বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে গ্রেপ্তার করে।