‘কৃষিতে পড়া নিয়ে অনেকে হাসাহাসি করতেন!’

অফিস রিপোর্টার।।
কৃষি নিয়ে পড়া। এ কথা বললে অনেকে হাসাহাসি করতেন। সেই দিন বদলাচ্ছে। কৃষি নিয়ে লেখাপড়া করে তরুণরা এখন উদ্যোক্তা হচ্ছেন। কুমিল্লা অঞ্চলে প্রথম কুমিল্লা কৃষি ও কারিগরি কলেজ এই উদ্যোগ নেয়। প্রথমে শিক্ষার্থী পাওয়া ছিলো কষ্টকর। বাড়ি বাড়ি গিয়ে বুঝাতে হতো। বর্তমানে কুমিল্লা কোটবাড়ি চৌরাস্তা সংলগ্ন ধনপুরে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম চলছে। এই প্রতিষ্ঠান থেকে ১২শতাধিক শিক্ষার্থী ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্ন করেছেন। তাদের অধিকাংশ উদ্যোক্তা। বাকিরা সরকারি বেসরকারি চাকরিজীবী।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ক্লাস শেষে শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানের মাঠে চাষ করা ঢেঁড়শ,বেগুনসহ অন্যান্য সবজি আগাছা মুক্ত করছেন। শিক্ষক ধারণা দিচ্ছেন কোন ফসলে কত পরিমাণের জৈব সার দিতে হবে। এছাড়া ল্যাবরেটরিতে করা হচ্ছে নানা পরীক্ষা। পাশের পুকুরে মাছ চাষ ও খামারে গবাদি পশুর রোগ ব্যাধি নিয়েও আলোচনা করা হচ্ছে।
শিক্ষার্থী আবু সায়েদ,শুভ চক্রবর্তী,আফসারা নিগার ও সৌরভী রাণী মজুমদার বলেন,আমরা কৃষক পরিবারের সন্তান। এখানে পড়তে এসে বুঝলাম, নিজের ও প্রতিবেশীর ফসল উৎপাদন বাড়াতে আধুনিক কৃষির বিকল্প নেই।


প্রতিষ্ঠানের সাবেক শিক্ষার্থী লক্ষীপুর জেলার শফিকুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি স্থানীয় একটি স্নাতকোত্তর প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক। বুড়িচংয়ের একটি ব্লকের উপ-সহকারী কর্মকর্তা ওমর ফারুক। আফতাব উদ্দিন মাদ্রাসার শিক্ষক সামছুন নাহার। তারা বলেন, এখানে এসে যে অনুপ্রেরণা পেয়েছি তা আমাদেরকে এগিয়ে যেতে উদ্বুদ্ধ করেছে।
কুমিল্লা দেবিদ্বার উপজেলার দুয়ারিয়া গ্রামের মো.এখলাছুর রহমান ২০১০সালে কুমিল্লা কৃষি ও কারিগরি কলেজ থেকে উত্তীর্ণ হয়েছেন। বর্তমানে তিনি গবাদি পশু ও মাছের ওষুধ তৈরিকারক প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা।
কলেজের প্রশিক্ষক ইরফানুল হাসান, লামিনাস সায়গাল রাশা ও মো. শাহ আলম বলেন,ক্লাসরুমে আমরা বইতে পড়াই। পাশে মাঠে হাতে কলমে সবজি চাষ,মাছ চাষ,গবাদি পশু পালন ও এর রোগ ব্যাধি নিয়ে অবহিত করি। কৃষি নিয়ে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে।
কলেজ অধ্যক্ষ পরামানন্দ গোস্বামী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন দেশের এক ইঞ্চি জমিও যেন পতিত না থাকে। তিনি কৃষির উপর জোর দিয়েছেন। দেশের খাদ্য সংকট দূরীকরণে কৃষির বিকল্প নেই। সাথে এখানে অধ্যয়ন করে বেকার থাকার উদাহরণ নেই বললে চলে।
কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোহাম্মদ আনিসুর রহমান আখন্দ বলেন, আমাদের কলেজটি চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের প্রথম বেসরকারি উদ্যোগের প্রতিষ্ঠান। আমরা উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে কাজ করছি। এটিকে গ্রাজুয়েট প্রতিষ্ঠান করার স্বপ্ন রয়েছে।