কেমন আছেন কুমিল্লার ৩০হাজার ইমাম-মুয়াজ্জিন

তৈয়বুর রহমান সোহেল।।
কুমিল্লায় পাঞ্জেগানাসহ মোট মসজিদ আছে ১৫হাজার ১০৪টি। ইমাম-মুয়াজ্জিনসহ এখানে নির্ভরশীল ৩০হাজারের বেশি মানুষ। করোনার কারণে তাদের আয়-রোজগার কমে এসেছে।

করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে গেল বছরের ঈদুল ফিতর আর এ বছরের ঈদুল ফিতর দুইটাই পড়েছে লকডাউনের ভিতর। লকডাউনের কারণে মানুষের চলাচল সীমিত করা হয়েছে। মসজিদে মুসল্লির সংখ্যা কমাতে রয়েছে সরকারের নির্দেশনা। তারাবির নামাজে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে মুসল্লিরা যে টাকা তাদের সম্মানি দিতেন, ওই টাকাই ছিল তাদের বছরের সবচেয়ে বড় আয়ের মধ্যে অন্যতম। মসজিদ কমিটি একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ধার্য করে তা মুসল্লিদের থেকে আদায়ের চেষ্টা করতেন। গত দুই বছর অর্থ আদায়ের বিষয়টি চলে গেছে স্বতঃস্ফূর্ততার ভিত্তিতে। মুসল্লিরা যা দিচ্ছেন, তাতেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে তাদের।

এদিকে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে মুসলমানদের প্রাথমিক ধর্মীয় শিক্ষা কেন্দ্র মক্তবও বন্ধ রয়েছে। যার কারণে দেশের ইমাম-মুয়াজ্জিন, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের আয় অনেক কমে গেছে। পাশাপাশি শহরের বাসাবাড়িতে গিয়ে যারা প্রাইভেট পড়াতেন, তাদের আয় রোজগারও অনেক কমে এসেছে।
গত বছরের লকডাউন শেষে কয়েক মাস কওমি মাদ্রাসা খোলা ছিল। এ বছর সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী এসব মাদ্রাসা বন্ধ রয়েছে। যেখানে শিক্ষকতা করতেন বেশিরভাগ মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনরাই। সব মিলিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন তারা।
গ্রামেগঞ্জে বাসাবাড়িতে মিলাদ, কোরআন খতম করলেও কিছু টাকা রোজগার হতো তাদের। সংক্রমণের কথা চিন্তা করে মানুষ ঘরোয়াভাবে আগের মতো মিলাদ-কোরআন খতম বন্ধ রেখেছেন।
কুমিল্লা ইমাম সমিতির সাবেক নেতা মাওলানা আবু হানিফ বলেন,’ ইমাম-মুয়াজ্জিনদের কথা এখন কেউ ভাবে না। নানা রকম কমিটি হয়, নিম্নবিত্তদের সহায়তা করা হয়, কিন্তু ইমাম-মুয়াজ্জিনদের নিয়ে কারও কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ে না। তাদের পরিবার পরিজনদের সাধ আছে সুন্দর ঈদ উদযাপনের। কিন্তু আয় কমে যাওয়ায় তাদের সাধ পূরণ হচ্ছে না।’
এ বিষয়ে ইসলামি ফাউন্ডেশন কুমিল্লার উপ- পরিচালক সরকার সারোয়ার আলম জানান, ‘গত বছর মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সরকারি সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এ বছর আমরা এরকম নির্দেশনা পাইনি।’
কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান জানান,’ এ বছর আলাদাভাবে প্র্যাকটিকেলি সরকারি সহায়তার ঘোষণা না থাকলেও ইমাম-মুয়াজ্জিনরা কেউ চাইলে তাদের সহায়তা করবে জেলা প্রশাসন। কেউ তালিকা পাঠালেও সহায়তা পৌঁছে দেয়া হবে।’