খাল পুনঃখননে হাসছে তিন হাজার একর জমি
কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার কাজীপাড়া খাল ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কানাইল খাল দুইটি পুনঃখনন করা হয়েছে। এতে হাসছে তিন হাজার একর ফসলি জমি। উপকৃত হবে প্রায় দুই হাজার কৃষক পরিবার। এনিয়ে গত সপ্তাহে সাপ্তাহিক আমোদ পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
সংবাদে উল্লেখ করা হয়, চান্দিনার কাজীপাড়া খালটি সাড়ে তিন কিলোমিটার ও চৌদ্দগ্রামের কানাই খালটি চার কিলোমিটার খনন করে বিএডিসি কুমিল্লা। বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশন ও বন্যায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতা দূরীকরণের মাধ্যমে প্রায় দুই হাজার একর জমির ফসল রক্ষা পাবে। তাছাড়া খালে ধারণকৃত পানি শুকনো মৌসুমে সেচ কাজে ব্যবহার করা সম্ভব হবে। এদিকে কানাইল খালটি চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নে ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ের লালাপুর ব্রিজের পশ্চিম পাশ হতে কানাইল খাল নাম ধারণ করে। খালটি খননে প্রায় এক হাজার একর জমির ফসল রক্ষা পাবে।
এখানে যুগ যুগ ধরে খনন না হওয়ায় কাজীপাড়াখাল ভরাট হয়ে যায়। সেখানে অনেকে ধান চাষ করতেন। পানির সংকট ও জলাবদ্ধতায় অনেক জমি অনাবাদী থাকে। এক সময় ধান চাষ হতো। এখন খনন শেষ হওয়ায় খালে পানি এসেছে। কৃষকরা মনের আনন্দে খাল থেকে পানি তুলে ধান ও সবজির খেতে দিচ্ছেন।
চান্দিনার গোরামারা গ্রামের রবিউল্লাহ,সাইফুল ইসলাম ও চৌদ্দগ্রামের ছাতিয়ানি এলাকার কামাল হোসেন বলেন,খাল গুলো প্রায় মরে গিয়েছিলো। পাশের জামি গুলো কখনও জলাবদ্ধতা কখনও পানি শূন্যতায় পড়তো। তারা সংশ্লিষ্ট অন্যান্য খাল গুলোও খননের দাবি জানান।
অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, বঙ্গবন্ধু শুধু রাজনীতিবিদ ছিলেন না। তিনি ছিলেন বহু মাত্রিক দার্শনিক। তাই তিনি কৃষি ও সমবায় দিয়ে দেশকে গড়তে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমরা তাকে সেই সময় দেইনি। তার কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষি দরদী মানুষ। তার কাজ গুলো বিএডিসি বাস্তবায়ন করছে।
এদিকে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নে কানাইল খালের পুনঃ খনন কাজের উদ্বোধন করেন বিএডিসি চেয়ারম্যান এ এফ এম হায়াতুল্লাহ।
বিএডিসি কুমিল্লার তত্ত্ববধায়ক প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা,কৃষিমন্ত্রী মহোদয়,এমপি মহোদয়রা ও বিএডিসির চেয়ারম্যান মহোদয়সহ অন্যান্যদেও পরামর্শে কুমিল্লায় বিএডিসির সেচ বিভাগ কাজ করছে। দুই উপজেলার দুইটি খালে আমাদের প্রায় ৮৩ লাখ টাকার মতো ব্যয় হয়েছে। আশা করছি খাল দুইটি খননে ওই এলাকার ফসল উৎপাদন আরো বাড়বে।
বিএডিসি চেয়ারম্যান এ এফ এম হায়াতুল্লাহ বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশের প্রথম বাজেট দিয়েছিলেন ৭৮৬কোটি টাকা। সেখান থেকে তিনি ১০১ কোটি টাকা কৃষির জন্য বরাদ্দ দিয়েছেন। কৃষির প্রতি সেই দরদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও অব্যাহত রেখেছেন। চান্দিনা ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় দুইটি খাল পুনঃ খনন কাজের উদ্বোধন করা হলো। এতে জলাবদ্ধতা দূর হবে, কৃষির উন্নয়ন হবে।
আমরা মনে করি, বিএডিসির খাল খনন কৃষি বান্ধব কর্মসূচি। শুধু এই দুইটি খাল নয়। এরকম আরো শতাধিক খাল ভরাট হয়ে আছে। বিশেষ করে দক্ষিণ কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম, লাকসাম,নাঙ্গলকোট ও মনোহরগঞ্জে হাজার হাজার একর জমি জলাবদ্ধতার কারণে অনাবাদী থাকছে। সেখানে অনেক খাল দখল হয়ে গেছে। খাল গুলো খনন করে আরো জমি আবাদের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।