গার্মেন্টস খোলার সিদ্ধান্তে কুমিল্লায় মহাসড়কে যাত্রীদের উপচে পড়া ভীড়

 

অফিস রিপোর্টার।।

করোনা নিয়ন্ত্রণে আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত ‘কঠোর লকডাউন’ চলছে। এদিকে ১ আগস্ট থেকে হঠাৎ শিল্প কারখানা খোলার সিদ্ধান্তে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যাত্রীদের উপচে পড়া ভীড় দেখা গেছে। বেড়েছে যানবাহনের চাপ। বাস ব্যতিত সকল পরিবহনই চলছে মহাসড়কে। গন্তব্যে পৌঁছতে যাত্রীরা কখনও উঠছেন ট্রাক-পিকআপে, কখনও সিএনজি অটোরিক্সায় আবার কখনও মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকারে। প্রতিটি স্ট্যান্ড এলাকায় যাত্রীদের উপচে পড়া ভীড় দেখা গেছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম,পদুয়ার বাজার,আলেখারচর, ময়নামতি, নিমসার,চান্দিনা, এলাকা ঘুরে দেখা গেছে প্রতিটি স্ট্যান্ড এলাকায় শতশত যাত্রী গাড়ির অপেক্ষায়। রাজধানী ঢাকায় সরাসারি পৌঁছতে তেমন পরিবহন না থাকায় এক স্টেশন থেকে অন্য স্টেশনে নেমে পরিবহন বদল করে গন্তব্যের দিকে ছুটছে পোশাক শ্রমিক ও রপ্তানীমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কেউবা প্রতিটি স্ট্যান্ডে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে আছে আবার কেউবা যে পরিবহনই পাচ্ছে ভাড়ার তোয়াক্কা না করে দ্রুত স্টেশন বদল করছে।

মহাসড়কে গণপরিবহন বাস বন্ধ থাকায় পিকআপ, কাভার্ডভ্যান, ট্রাক, মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার, সিএনজি অটোরিক্সায় যে যেভাবে পারছে যাত্রী পরিবহন করছে। স্টেশন এলাকায় পণ্যপরিবহন বা যাত্রী পরিবহনের গাড়ি থামতেই গাড়িটিকে ঘিরে ধরছেন যাত্রীরা। প্রতিটি পরিবহনই অতিরিক্ত যাত্রী বহন করতে দেখা গেছে। গাদাগাদি করে দ্বিগুণ যাত্রী নিয়ে চারগুণ ভাড়া আদায় করছে পরিবহন শ্রমিকরা।

পূর্ব নির্ধারিত ৫ আগস্ট পর্যন্ত ‘কঠোর লকডাউনে’ সকল প্রকার শিল্প-কারখানা বন্ধের ঘোষণার আট দিনের মাথায় হঠাৎ সিদ্ধান্ত পরিবর্তনে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিল্প কারখানার শ্রমিকরা। গন্তব্যে পৌঁছার বিড়ম্বনার সাথে গুনতে হচ্ছে কয়েকগুণ অতিরিক্ত টাকা।

 

নোয়াখালী থেকে আসা পোশাক কারখানা শ্রমিক খোদেজা বেগম জানান- ‘লকডাউনে গার্মেন্টস বন্ধ থাকবো, তাই বাড়িতে চইল্যা আইছি। এহন আবার গাড়ি না ছাইড়া গার্মেন্টস খুইল্যা দিছে, আমরা বাড়ি থেইক্কা যামু কেমনে।’

তিনি জানান- নোয়াখালী থেকে সিএনজি অটোরিক্সা, মাইক্রোবাস ও পিকআপে চড়ে ১ হাজার টাকা খরচ করে চান্দিনা পৌঁছেন। যা বাস যোগে ১শ টাকার ভাড়া। গাজীপুর পর্যন্ত পৌঁছতে কতটাকা খরচ হবে বা কিভাবে যাবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি।

 

অপর শ্রমিক রহিমা আক্তার বলেন- ‘সরকার আমাগো মাথা খারাপ কইরা দিবো। একবার কয় বন্ধ, আবার কয় খোলা! এক মাসে যে ট্যাহা বেতন পায়াম, গাজীপুর যাইতেই তার চেয়ে বেশি লাগবো’।

এ ব্যাপারে হাইওয়ে পুলিশ ময়নামতি ক্রসিং থানার অফিসার ইন-চার্জ মো. আনিছুর রহমান জানান- শ্রমিকরা নিরুপায় হয়ে গেছে। এই অবস্থায় তাদের গন্তব্যে পৌঁছা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যাত্রীদের দুর্ভোগ আমাদেরও নজরে এসেছে।