গোমতীর মাঝি রাশিদার জীবনের গল্প!

রশির সাথে টানছেন সংসারও

আবু সুফিয়ান রাসেল।।
কুমিল্লা নগরীর কোলঘেঁষা গোমতী নদী। শান্ত এ নদীর একমাত্র মাঝি নারী। তিনি সকাল থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত ১০টাকায় মানুষকে গোমতী পারাপার করেন। নদীর পাশে একটি কুঁড়েঘরে সারাদিন অপেক্ষায় থাকেন রাশিদা বেগম।
সরেজমিনে দেখা যায়, কাপ্তান বাজার পাক্কার মাথা সংলগ্ন ছিলো খেয়াঘাট। কালের বিবর্তনে যৌবন হারিয়েছে গোমতী নদী। গোমতীর কুমিল্লা অংশে একমাত্র মাঝি রাশিদা বেগম। তিনি রশি টেনে নৌকায় যাত্রী পারাপার করেন। এতে যা আয় হয় তাতে চলে তার সংসার।


মো. জালাল উদ্দিন জানান, গোমতী নদীর উত্তর পাশের পাঁকা সড়কটি বেহাল বহুবছর। বাগানবাড়ি, ভূবনগর, রসুলপুর, সত্তরখালি এলাকার মানুষ রাজগঞ্জ বাজার, অফিস-আদালত বা কাপ্তান বাজার পাক্কার মাথা যেতে চানপুরি ব্রিজ হয়ে যেতে হয়। স্টিলের সরু এ  ব্রিজে যানজট থাকে সব সময়।  মানুষের ভাড়া লাগে ৩০ টাকা। এ জন্য খেয়াঘাটে ১০টাকা দিয়ে নৌকা পারাপারে সময় বাঁচে। আমাদের জানামতে গোমতী নদীতে কোন মাঝি নেই, রাশিদা ছাড়া।
ভিক্টোরিয়া কলেজ শিক্ষার্থী পুতুল আক্তার বলেন, নগরীতে ১০টাকায় নৌ ভ্রমণের কোন সুযোগ নেই। বিকেল বেলা নৌকা বিলাসের সুন্দর একটি স্থান হলো গোমতীর খেয়াঘাট। নদীর উত্তর পাড়ে বসা ও আড্ডা দেয়ার সুন্দর স্থানও আছে।


রাশিদা বেগম বলেন, গোমতীর উত্তর পাশের গ্রাম  রত্নবতি। সেখানে আমার বাড়ি। তিন ছেলে, দু’মেয়ে আর অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে সংসার। স্বামী কোন কাজ করতে পারে না। গত চার বছর এ নৌকাতে আমি এলাকার মানুষ পারাপার করি।
দশ টাকা করে ভাড়া নিই। দিনে ২০০-৩০০ টাকা আয় হয়। প্রতিমাসে নৌকার মালিক জমা দিতে হয় ১৫০০ শ টাকা। শুক্রবার বা ঈদ মৌসুমে ৫০০ টাকা আয় হয়। অনেকে টাকা না দিয়েও চলে যায়। কাউকে কিছু বলি না।