চলছে অটো রিকশা ভটভটি,বাড়ছে দুর্ঘটনা

 

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সিএনজি চালিত অটো রিকশা,ভটভটিসহ চলছে বিভিন্ন প্রকার তিন চাকার যানবাহন। ব্যস্ততম এই মহাসড়কে নিষিদ্ধ এসব যানবাহন চলাচলের কারণে বেড়েছে দুর্ঘটনা। কুমিল্লা অংশে দুর্ঘটনার ৫০ভাগ তিন চাকার যানবাহনের কারণে বলে অনেকের দাবি। মহাসড়কটির কুমিল্লা অংশের ১০৫ কিলোমিটার এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি এলাকাতেই চলাচল করছে ইঞ্জিন চালিত ভটভটি, সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, রিকশা ও ভ্যান। এনিয়ে গত সপ্তাহে সাপ্তাহিক আমোদ পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।

সংবাদে উল্লেখ করা হয়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, মহাসড়কের উপরেই সারি সারি সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা দাঁড়িয়ে রয়েছে। এসব তিন চাকার যানবাহনের চালকেরা ডেকে ডেকে যাত্রী তুলছেন বিভিন্ন গন্তব্যের। এরপর মহাসড়ক হয়েই এসব যানবাহন চলাচল করছে বিভিন্ন স্থানে। এই এলাকায় মহাসড়কের ঢাকা ও চট্টগ্রামগ্রামী দু’টি লেনই অবৈধ তিন চাকার যানবাহনের দখলে। যার কারণে মহাসড়কের এই অংশে প্রায়ই যানজট লেগে থাকে, ঘটে দুর্ঘটনাও। এছাড়া জরুরি যান চলাচলে সৃষ্টি হয় প্রতিবন্ধকতা।
মহাসড়কের চৌদ্দগামের মিয়াবাজার এলাকায় দেখা গেছে, বিভিন্ন মালামাল নিয়ে নছিমন, করিমন ও ভটভটি অবাধে চলাচল করছে। মিয়াবাজারেও মহাসড়কের উপর সারি সারি তিন চাকার যান দাঁড়িয়ে রয়েছে।

সদর দক্ষিণ উপজেলার সুয়াগাজী এলাকায় দেখা যায়, মহাসড়কের উপরেই সিএনজি চালিত অটোরিকশার অঘোষিত ‘স্ট্যান্ড’। এখান থেকে যাত্রী তুলে যাওয়া হচ্ছে বিভিন্ন গন্তব্যে।
মহাসড়কের পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড, কোটবাড়ি বিশ্বরোড, আলেখারচর বিশ্বরোড, ময়নামতি,নিমসার চান্দিনা,গৌরিপুর ও দাউদকান্দি এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন ক্রসিং দিয়ে প্রতি মুহূর্তেই এপার-ওপার চলাচল করছে নিষিদ্ধ তিন চাকার যান। এসব ক্রসিং দিয়ে অবাধে তিন চাকার যান চলাচল করায় যানবাহনে চলাচলে চরম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়।

তবে আবুল বাশার, দ্বীন মোহাম্মদসহ এসব তিন চাকার যানবাহনের বেশ কয়েকজন চালক দাবি করেন, মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করলে দ্রুত সময়ের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছা যায়। এছাড়া এমন কিছু স্থান আছে যেগুলো মহাসড়ক দিয়ে যাওয়া ছাড়া অন্য কোন পথ নেই। এছাড়া তারা মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচলের জন্য আলাদা লেন চান।

নাম-পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন সিএনজি চালিত অটোরিকশার চালক জানান, মহাসড়ক দিয়ে সিএনজি চালাতে হলে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। হাইওয়ে পুলিশ গাড়ি আটক করে নিয়ে যায়। পরে মোটা অংকের টাকা দিয়ে গাড়ি ছাড়িয়ে আনতে হয়।
সামছুল আলম, কবির হোসনসহ মহাসড়কের বেশ কয়েকজন বাস চালক জানান, অবৈধ এসব তিন চাকার যানবাহনের অনেক চালক আছে তারা জানেই না কিভাবে মহাসড়কে গাড়ি চালাতে হয়। অনেক সময় তারা হুট করে দ্রত গতির গাড়ির সামনে চলে আসে। যখন ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিতে একটি বাস চলে তখন এসব নিষিদ্ধ যান হুট করে সামনে চলে আসলে আমাদেরকে ব্রেক করে গাড়ি থামাতেও বেকায়দায় পড়তে হয়। এতে প্রতিনিয়ন দুর্ঘটনার আশংকা থাকে।

জেলার চৌদ্দগ্রাম বাজারের ব্যবসায়ী আবদুল করিম বলেন, সিএনজি চালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ অবৈধ তিন চাকার যানবাহনের দখলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম বাজার এলাকা। এতে করে মহাসড়কে চলাচলরত দূরপাল্লার যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসসহ জরুরি সেবার যানবাহনগুলোকে যানজটের কবলে পড়তে হচ্ছে । যাত্রীদেরও চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
এসব বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা অঞ্চলের পুলিশ সুপার মো.রহমত উল্লাহ বলেন, মহাসড়কে নিষিদ্ধ তিন চাকার যানবাহনগুলো অনেক সময় গোপনে চলতে চায়। তবে আমাদের এসব নিষিদ্ধ যানবাহনের বিরুদ্ধে সারাবছরই ব্যবস্থা চলমান আছে। আমরা এসব গাড়িগুলো আটক করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করি। একেবারে বন্ধ না হলেও কুমিল্লা অংশে তিন চাকার পরিবহন চলাচল কমেছে। এছাড়া মহাসড়কে অবৈধ তিন চাকার যানবাহন চলাচল বন্ধে হাইওয়ে পুলিশ লিফলেট বিতরণ,মাইকিংসহ সচেতনতামূলক কাজ করে যাচ্ছে।
আমরা মনে করি,পরিবহন গুলো একেবারে বন্ধ হয়ে গেলে নিম্ন আয়ের মানুষ বেকায়দায় পড়বে। মহাসড়কের পাশে তাদের জন্য আলাদা লেনের দাবি জানিয়েছেন সচেতনরা। মহাসড়ক সচল থাকুক। মানুষের জীবন বাঁচুক।