চলছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

আমোদ ডেস্ক।।

মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে পরাক্রমশালী দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে প্রতিবারই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়ে থাকে, এবারও এর ব্যতিক্রম নয়। মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল ৬ টা থেকে ভোটগ্রহণ চলবে টানা রাত ৯ টা পর্যন্ত।

মুসলিম দেশগুলোতেও ট্রাম্পের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের ভাবমূর্তি তলানিতে ঠেকেছে। ফলে অনেক মানুষই তাকে আর দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে দেখতে চাচ্ছেন না। এ কারণে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে এবার প্রায় একশ বছরের মধ্যে বেশি ভোট পড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

বিপুল ভোটারের উপস্থিতি ডেমোক্র্যাটদের জন্য একটি বিশাল সুখবর। এবার যুক্তরাষ্ট্রের ২৩ কোটি ৩৭ লাখ নাগরিক ভোটদানের যোগ্য। তবে নিবন্ধিত ভোটার ১৫ কোটি ৩০ লাখ। এর মধ্যে সাড়ে ৯ কোটি লোক আগাম ভোট দিয়ে ফেলেছেন। এটা একটা রেকর্ড। ২০১৬ সালের নির্বাচনে যত ভোট পড়েছিল তার দুই-তৃতীয়াংশ ইতোমধ্যেই দেওয়া হয়েছে। ভোটের আগের দিনও দুই প্রার্থী প্রচারে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার গভীর রাতে ভোটের ফল পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। গতবার স্থানীয় সময় রাত ৩টায় (বাংলাদেশ সময় পরদিন দুপুরে) ট্রাম্প নিজেকে বিজয়ী বলে ঘোষণা দেন।

বিপুলসংখ্যক আগাম ভোটের কারণে এবার ফল আসতে বেশ বিলম্ব হতে পারে বলে কর্মকর্তারা সতর্ক করে দিয়েছেন। কারণ নিয়ম হচ্ছে, ভোটকেন্দ্রে গিয়ে দেওয়া ভোট আগে গণনা করতে হয়। এরপর মেইল ও অ্যাবসেন্টি (অনুপস্থিত) ভোট গণনা করা হয়। তাই চূড়ান্ত ফল পেতে কয়েকদিনও লেগে যেতে পারে।

৫০ রাজ্যে এরই মধ্যে পৌঁছে গেছে ব্যালট। ভোট পরবর্তী সংঘাতের শঙ্কায় নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটন ডিসির অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

জাতীয় জরিপের ভিত্তিতে সিএনএনের গড় সমীক্ষায় বাইডেনের সমর্থন ৫২ শতাংশ, ট্রাম্পের ৪২ শতাংশ। দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের সমীক্ষাতেও উইসকনসিন, পেনসিলভানিয়া, ফ্লোরিডা, আরিজোনার মতো রণক্ষেত্র রাজ্যগুলোতে এগিয়ে আছেন বাইডেন। অন্যান্য সমীক্ষাতেও পাল্লা ভারী বাইডেনেরই। তবে পপুলার ভোট তথা জাতীয় নির্বাচনের ভিত্তিতে করা এসব সমীক্ষা সবসময় শেষ কথা বলে না। এসব সমীক্ষায় এগিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত ইলেকটোরাল কলেজের ভোটে হেরে যাওয়ার নজির অনেক রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয় ইলেকটোরাল কলেজ ভোটে। সর্বশেষ ২০১৬ সালের নির্বাচনেও হিলারি ক্লিনটন ৩০ লাখের বেশি ভোট পেলেও ইলেকটোরাল কলেজ ভোটে ট্রাম্পের কাছে হেরে যান। তখন ট্রাম্প ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পেয়েছিলেন ৩০৬টি, হিলারির ঝুলিতে পড়েছিল ২৩২টি। অথচ মোট ভোটের ৪৮.২ শতাংশ পেয়েছিলেন হিলারি, ট্রাম্প পেয়েছিলেন ৪৬.১ ভাগ। কিন্তু এবার বাইডেন এতটাই এগিয়ে রয়েছেন যে, অশনিসংকেত দেখছে রিপাবলিকান শিবির।

যুক্তরাষ্ট্রের ৫৩৮টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের মধ্যে জয়ের জন্য প্রয়োজন ২৭০টি। দেশটির বিভিন্ন জনমত জরিপে আভাস দেওয়া হয়েছে, বাইডেন ২৯০টি বা তারও বেশি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পেতে পারেন। ট্রাম্প ১৬৩টির মতো ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করেছেন। শেষ দিকে দোদুল্যমান রাজ্যগুলো তার দিকে ঝুঁকে পড়লে তিনি অবিশ্বাস্যভাবে জয় পেতে পারেন। তবে গতরাতে নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, গুরুত্বপূর্ণ রণক্ষেত্র রাজ্য ফ্লোরিডায় বাইডেন নিরাপদ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন।