‘ড. আখতার হামিদ খানের কুমিল্লা মডেল বিশ্বখ্যাতি অর্জন করেছে’

 

আমোদ প্রতিনিধি।।
বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) প্রতিষ্ঠাতা প্রধান নির্বাহী ড. আখতার হামিদ খানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর জীবন, কর্ম, পল্লী উন্নয়ন দর্শন ও বর্তমান প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার কুমিল্লা কোটবাড়িতে অবস্থিত বার্ডের ময়নামতি অডিটোরিয়ামে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়। গত ১৫ জুলাই ছিলো সমাজ বিজ্ঞানী ড.আখতার হামিদ খানের ১০৮তম জন্মবার্ষিকী।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বার্ডের মহাপরিচালক মো.শাহজাহান। বার্ডের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো.সফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিচালক (প্রশাসন) মিলন কান্তি ভট্টাচার্য্য। বার্ডের সহকারী পরিচালক কামরুল হাসানের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন পরিচালক (প্রশিক্ষণ) আবদুল্লাহ আল মামুন, যুগ্ম পরিচালক শেখ মাসুদুর রহমান প্রমুখ।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, বিশ্ববরেণ্য সমাজ বিজ্ঞানী ড.আখতার হামিদ খান একজন পরিপূর্ণ মানুষ ছিলেন। জ্ঞানে, কর্মে, ভাবসম্পদে, নৈতিকতার শক্তিতে, সত্য প্রকাশের সাহসে, মহানুভবতায়, মানুষের প্রতি ভালোবাসায় এমনকি সাফল্যের মানদণ্ডে একজন পরিপূর্ণ মানুষ। ড.খান পল্লী উন্নয়ন সংক্রান্ত বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার সফল নেতৃত্ব দানের জন্য সমগ্র বিশ্বে অত্যন্ত সমাদৃত। বিশেষ করে পল্লী উন্নয়নের কার্যকর মডেল উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে তাঁর অবদান আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করেছে। ষাটের দশকে ড. খানের নেতৃত্বে উদ্ভাবিত পল্লী উন্নয়নে কুমিল্লা মডেলের জন্য বার্ড বিশ্বখ্যাতি অর্জন করে।
সূত্র জানায়, ড. আখতার হামিদ খান ভারতের আগ্রায় ১৯১৪ সালের ১৫ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন। ভারতের আগ্রা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৩৪ সালে ইংরেজি সাহিত্যে এম.এ ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের অধীনে ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস (আইসিএস) কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। তিনি আইসিএস শিক্ষানবিস কর্মকর্তা হিসেবে ১৯৩৬-৩৮ সালে ইংল্যান্ডের ম্যাগডিলিন কলেজ, কেমব্রিজে শিক্ষা গ্রহণ করেন। ১৯৪৩ সালের ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ মোকাবেলায় ঔপনিবেশিক প্রশাসনের অমানবিক মনোভাবের কারণে ১৯৪৪ সালে তিনি সিভিল সার্ভিস চাকরি থেকে পদত্যাগ করেন। ভারতের আলিগড়ে একটি গ্রামে শ্রমিক ও তালা মেরামতকারী হিসেবে কাজ শুরু করেন। দু’বছর পর তিনি সে কাজটি ছেড়ে দেন।

এরপর ১৯৪৭ সাল থেকে দিল্লির ‘জামিয়া মিল্লিয়া’ নামক একটি প্রতিষ্ঠানে তিনি শিক্ষক হিসেবে তিন বছর কাজ করেন। ১৯৫০ সালে তিনি কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৫৪-৫৫ সালে পূর্ব পাকিস্তান সরকারের ‘ভি-এইড’ কর্মসূচির পরিচালক হিসেবে ডেপুটেশনে তাঁকে নিয়োগ করা হয়। ১৯৫৮ সালে তিনি মিশিগান স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য গমন করেন। সেখান থেকে ফিরে পাকিস্তান পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বর্তমানে বার্ড) প্রথম প্রধান নির্বাহী হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তীতে একাডেমির পরিচালনা পর্ষদের সহ-সভাপতি হিসেবেও তিনি কয়েক বছর দায়িত্ব পালন করেন।