তৃণমূলের আকাঙ্ক্ষা ধানের শীষে হাজী ইয়াছিন


কুমিল্লা-৬ আসন
হাসিবুল ইসলাম সজিব।।
বিগত ১৭ বছরের আন্দোলন সংগ্রামের পথচলায় যারা হামলা-মামলার, রাজনৈতিক হয়রানিতে বছরের পর বছর নির্যাতিত – নিপীড়িত হয়েছেন, সেই তৃণমূলের কর্মীরা এবার নিজেদের পছন্দের নেতৃত্বকে সামনে আনতে সম্মিলিত কণ্ঠে আওয়াজ তুলছেন।

কঠিন সময়েই একজন নেতার মহত্ব বুঝা যায়, আর সেই কঠিন দিনগুলোতে হাজী ইয়াছিন ছিলেন তাদের শেষ অবলম্বন। যখন মামলা হামলার চাপে অনেকে পরিবার নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছিলেন, তিনি তখন ব্যক্তিগত উদ্যোগে নেতাকর্মীর মামলার খরচ বহন করেছেন, পাশে দাঁড়িয়েছেন চিকিৎসা ও আইনি সহায়তায়। তাদের ভাষায় যারা আমাদের দুঃসময়ে পাশে দাঁড়িয়েছে, তাকেই চাই সামনে।
কুমিল্লা-৬ আসনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে একটাই দাবি ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে চাই হাজী আমিনুর রশীদ ইয়াছিনকে।
পুলিশের গুলিতে নিহত দেলোয়ারের স্ত্রী বলেন, আমার স্বামী মারা গেছে ২০১৩ সালে ২৫শে নভেম্বর। মিছিলে গিয়ে সোনালী ব্যাংকের সামনে পুলিশের গুলিতে মারা যান। তারপর থেকে আমার ছেলে মেয়ের লেখা পড়া থেকে শুরু করে মেয়ের বিয়েসহ পরিবারের সকল দায়িত্ব নেন হাজী ইয়াছিন সাহেব। আমরা চায় হাজী ইয়াছিনকে মনোনয়ন দেওয়া হোক। এতে করে আমার মত হাজারো মানুষ উপকৃত হবে।
পুলিশের গুলিতে নিহত দেলোয়ারের পিতা বলেন, ২০১৩ সালে ২৫শে নভেম্বর বিএনপির মিছিলে আমার ছেলেও যায়। তখন এমপি বাহারের নির্দেশে পুলিশ গুলি করে। এতে আমার একমাত্র ছেলে মারা যায়। তারপর থেকে হাজী ইয়াছিন আমাদের পরিবারের সকল কিছু দেখা শোনা করেন। তিনি বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় আসলে আমার ছেলের হত্যার বিচার হবে। আমি নিজের চোখে ছেলে হত্যার বিচার দেখে মরতে চাই। তাই ০৬ আসেন হাজী ইয়াছিনকে মনোনয়ন দেওয়া হোক।
মহনগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ফখরুল ইসলাম মিঠুর স্ত্রী বলেন,গত ১৭ বছর আমার স্বামীর বিরুদ্ধে ৩২ টা মামলা হয়েছে। কারাবরণ করা অবস্থায় আমার স্বামীকে অনেক বার রিমান্ডে দেওয়া হয়েছে। সেই দুরাবস্থায় আমরা কাছে পেয়েছি হাজী ইয়াছিনকে। হাজী ইয়াছিন এবং তার প্রতিনিধিরা সার্বক্ষণিক আমাদের পরিবারের খোঁজ খবরসহ বিভিন্ন সময় সহায়তাও প্রদান করেছেন । মামলা পরিচালনার জন্য আইনজীবী নিযুক্ত করেছেন।
গত ১৭ বছর হাজী ইয়াছিন ভাই আমাদের মানসিক এবং আর্থিক ভাবে সহযোগিতা করে গিয়েছে। যারা আর্থিক ভাবে দুর্বল ছিলো তাদেরকে সহযোগিতা করে গিয়েছেন। এখনো করতেছেন। যারা আওয়ামী লীগের আমলে নির্যাতিত তাদের পরিবারকে সবসময় সহযোগিতা করে গিয়েছে। ওনি আমাদেরকে পিতার মতো ছায়া দিয়েছেন।
তারেক রহমানকে বলবো আমরা ধানের শীষের কর্মী তবে গত ১৭ বছর ধানের শীষ করতে গিয়ে আমরা সকল বিএনপির নেতাকর্মীরা বিপদে পড়ছে। আওয়ামী লীগের দ্বারা নির্যাতিত হয়ে তখন হাজী ইয়াছিন সবার পাশে দাঁড়িয়েছে। প্রাথমিক ভাবে হাজী ইয়াছিনকে মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত করায় সকল নেতাকর্মী কষ্ট পেয়েছে। যাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে তিনি গত ১৭ বছর কোন নেতাকর্মীর পাশে পায়নি। আজকে যে ওনাকে মনোনয়ন দেওয়া হলো তিনি তো আমার স্বামীসহ বিগত বছরে নির্যাতিত হয়েছে তাদের দুঃখ কষ্ট কিছুই জানেন না। তাহলে আজকে কেন ওনাকে মনোনয়ন দেওয়া হলো। যে বিগত বছর গুলোতে হাজার হাজার নেতাকর্মীদের পাশে ছিলো তাকেই মনোনয়ন দেওয়া হোক। এটাই কুমিল্লা ৬ আসনের নেতাকর্মীদের দাবি।
ডা ইরফানুল ইক বাবু বলেন, আমি ০৪টি মামলার আসামি এবং একবার কারাবরণ করি। আমরা কুমিল্লায় দীর্ঘদিন যাবৎ হাজী ইয়াছিন ভাইয়ের নেতৃত্বে বিএনপি করে আসছি। ১/১১ এর সময় কুমিল্লাতে কোন নেতা কাছে পায়নি একমাত্র হাজী ইয়াছিনকে ছাড়া। ওনার নিদর্শনায় ১/১১ আন্দোলন করি। আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় আসার পরে শুরু হয় আমাদের উপর নির্যাতন রাজপথে গোলাগুলি শুরু করে। আমরা কোথাও শান্তিপূর্ণ ভাবে রাজনীতি করতে পারিনি। শুরু হয় বাড়িঘরে হামলা। ব্যক্তিগত হামলাসহ আমাদের নিষ্ক্রিয় করার জন্য যত রকমের হামলা করার প্রয়োজন তারা সব করেছে। এই ১৭ বছরে আমাদের বিপদ আপদ সাংগঠনিক বিপদসহ প্রতিটি নেতাকর্মীর খোঁজ খবর নেওয়া আমাদের ছায়া দিয়ে রেখেছে এবং সংগঠনকে গুছিয়ে রেখেছে তিনি হাজী ইয়াছিন। বিগত বছরে অনেক নেতা হাল ছেড়ে পালিয়েছে কিন্তু তিনি পালায় নাই নেতাকর্মীদের সুখে দুখে পাশে ছিলেন। অনেক নেতাকে দেখেছি চেয়ার বাঁচানোর জন্য রাজনীতি পরিচয় গোপন করেছে। ওনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিল ওনি তো রাজনীতির সাথে আপোষ করেন নাই। ওনি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও চালিয়েন রাজনীতি টাকেও আঁকড়ে ধরে রেখেছেন। আমাদের সমাজে ওনার মত নেতার বিকল্প নেই। কুমিল্লা ৬ আসনের মানুষ একটা জিনিসই আশা করে, কুমিল্লা মানে হাজী আছি। আমাদের দাবি একই হাজী ইয়াছিনকে ধানের শীষে মনোনয়ন দেওয়া হোক।
তৃণমূলের দাবি, আন্দোলনের পথে ১৭ বছরের অভিজ্ঞতা, নির্যাতনের ইতিহাস আর কর্মীদের প্রতি নিরন্তর সহায়তা, সব মিলিয়ে কুমিল্লা-৬ আসনে বিএনপির আদর্শিক প্রার্থী হিসেবে হাজী ইয়াসিনই সবচেয়ে উপযুক্ত। নেতাকর্মী’দের প্রত্যাশা, কেন্দ্রীয় বিএনপি এই দীর্ঘদিনের ত্যাগী নেতাকর্মীদের অনুভূতিকে সম্মান জানিয়ে তাঁকেই ধানের শীষের মনোনয়ন দেবে।
তৃণমূলের এই প্রবল আবেগ ও প্রত্যাশা হাজী ইয়াসিনকে ধানের শীষের স্বীকৃতি’তে দেখতে চায় সমগ্র কুমিল্লা-৬ এর বিএনপি পরিবার।