দারিদ্র্য বিমোবচন ও পল্লী উন্নয়নে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর অবদান
তারানা তাসনিম তিন্নী
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি ও স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনিই আমাদের জাতির পিতা। বাংলার এই মহান নেতা আজীবন দুঃখী মানুষের হাসি ফোটানোর চেষ্টা করে গেছেন। তাঁর নেতৃত্বেই আমরা পেয়েছি স্বাধীন, সাবভৌম বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধু অনেক ত্যাগ স্বীকার করেন। তিনি কারাগারে বন্দী থাকেন, সেখানে মানসিক কষ্ট সহ্য করেন। তারপরও কোনদিন শাসক-গোষ্ঠির কাছে তিনি মাথা নত করেননি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সমমনা রাজনৈতিক দল ও দেশের আপামর জনগণের সহযোগিতায় গড়ে তুলে মুক্তিবাহিনী, গঠন করে মুজিবনগর সরকার। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। ১৯৭২ সালে পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগার থেকে তিনি মুক্ত হয়ে শক্ত হাতে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের হাল ধরেন।
যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল খুবই নাজুক। স্বল্প সময়ের মধ্যেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাঁর বলিষ্ট নেতৃত্বে নবীন শিশুরাষ্ট্রটিকে পরিপূর্ণতা দান করতে সক্ষম হন। তাঁর নেতৃত্বের উদ্দেশ্য ছিল বাংলার গরীব, দুঃখী মানুষের দুঃখ দূর করা, তাঁদের মুখে হাসি ফুটানো।
বাংলাদেশের ব্যাংকে কোন মুদ্রা ছিল না, কোন গোল্ড রিজার্ভ ছিল না, গুদামে কোন খাবার ছিল না। তার শাসককালের তিন-চার বছরে বিদেশ থেকে ২২ কোটি মন খাবার বাংলাদেশে এনেছেন এবং বাংলার ক্ষুধার্ত মানুষের কষ্ট নিবারণ করেন। রাস্তাঘাটের অবস্থা খুব খারাপ ছিল, তিনি সেগুলো সংস্কার করেন।
নতুন দেশের অনেক সুযোগসন্ধানী মানুষ দুর্নীতি করে বাংলার মানুষকে বঞ্চিত করছিল, বাংলার মানুষের এই ব্যাথা-দুঃখ দেখে বঙ্গবন্ধুর কোমল হৃদয় ব্যথিত হয়ে পড়ে। তিনি দুর্নীতিবাজদের আবেদন, অনুরোধ ও আবদার করেন। যাতে তারা বাংলার মানুষের উপর অন্যায় না করেন। তাতেও কোন ফল না হওয়ায় তিনি কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। পদ্ধতি পরিবর্তন করেন বাংলার মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য।
উনার বিশ্বাস ছিল রাজনৈতিক স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়ে যায়। যদি অর্থনৈতিক স্বাধীনতা না আসে। যদি দুঃখী মানুষ পেট ভরে ভাত খেতে না পারে। কাপড় পড়তে না পারে, বেকার সমস্যা দূর না হয়, তাহলে মানুষের জীবনে শান্তি ফিরে আসবে না। তাই তিনি পদক্ষেপ নেন ফসলের জমিতে দ্বিগুন ফসল করার জন্য। দ্বিগুন ফসল করা গেলে বিদেশের কাছে হাত পাততে হবে না। সম্মান নিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে অবস্থান করবে। তিনি কলকারখানায়, ক্ষেতে খামারে এ জন্য উৎপাদন বৃদ্ধির প্রতি জোড় প্রদান করেন। এসব লক্ষ্য পূরণের উদ্দেশ্য তিনি বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ গঠন করেন। নতুন এই প্রশাসন ব্যবস্থায় ৬৫ হাজার গ্রামে সমবায় খামারের অধীনে জমির মালিক এক ভাগ, শ্রমিক এক ভাগ এবং সার সেচ ও অন্যান্য কৃষি উপকরণের খরচ বহন করার জন্য সরকার এক ভাগ ফসল পাবে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সকল মহকুমাকে জেলায় উন্নীতকরণ এবং প্রতিটি জেলায় একজন গভর্ণর নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। একটি পরিবার মাত্র একশো বিঘা সম্পত্তি রাখতে পারবে। বেশি থাকলে সেগুলো গরীব-দুঃখী ভূমিহীন মানুষের মাঝে বিতরণ করা হবে।
বঙ্গবন্ধুর এই অসাধারণ উদ্যোগ ও অবদানের কারনে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার অনেক উন্নতি হয়। তাঁর দেখানো পথ ধরেই জননেত্রী শেখ হাসিনার সুনিপন নেতৃত্বে দারিদ্র বিমোচন ও পল্লী উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
তারানা তাসনিম তিন্নী
নবম শ্রেণি, নেউরা এম.আই. উচ্চ বিদ্যালয়।
পিতাঃ মোঃ আব্দুল হালিম
ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশন (এসএফডিএফ)
গ্রাম-দিশাবন্দ, ডাকঘর-রাজাপাড়া
সদর দক্ষিণ, কুমিল্লা