দূর্নীতি ও প্রাসঙ্গিক কিছু কথা–এম জামাল উদ্দিন

বিশ্ব যখন মৃত্যুর মিছিলে দাঁড়িয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করছে করোনার বিরুদ্ধে। আমাদের নেতারা তখন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে ত্রাণ চুরি, চাল চুরি, থেকে শুরু করে গরীবের বরাদ্দকৃত ২৫০০ টাকা লুটপাটের প্রতিযোগিতায়, এরমধ্যে করোনা ভাইরাস টেস্ট নিয়ে ও বাংলাদেশ সহ রীতিমতন বহির্বিশ্বে চলছে তুলকালাম কাণ্ড। এই যেন দেশটা মগের মুল্লুকে পরিণত হয়েছে।
আজকে করোনা ভাইরাস পাঁচ থেকে ছয় মাস অতিবাহিত হতে চলেছে, বলতে গেলে বিশ্ব সংসারে গৃহবন্দী প্রবাসীরা। বাংলাদেশের অর্থনীতি চালিকাশক্তি এই প্রবাসীদের বিশাল এক অংশ, মিনিপিগের মতো মানবেতর জীবনযাপন করছে। বাধ্য হয়ে আত্মহত্যা করে বাঁচতে চাইছে।
দিনাতিপাত করছে অন্ন কষ্টে- অর্থ কষ্টে। নূন্যতম মানবাধিকার ও নেই অনেকের। অথচ এই সভ্য দুনিয়া নীরব। বহু প্রবাসী, মুখ ফুটে নিজের অধিকারের কথাটিও বলতে পারে না। বা জানেন ও না তার কি অধিকার। অথচ এই দেশপ্রেমিক প্রবাসীরা কখনো রাষ্ট্রক্ষমতা লাভের স্বপ্ন দেখেন না।
দেশের দূর্নীতিবাজদের মতো দেশের সম্পদ লুটপাটের কথা ভাবেন না, একজন দায়িত্বশীল প্রবাসী দেশপ্রেমিক প্রবাসীর শুধু স্বপ্ন- আমার প্রিয় বাংলাদেশ ভালো থাকুক। যাকে নিয়ে আমরা গর্বিত সারাবিশ্বে।
কিন্তু কে বলে সে কথা? বিপদে পড়ে প্রবাসীদের কাতারে শামিল হন তারাই। আর ক্ষমতা গিয়ে বেমামলুম ভুলে যান। কিন্তু তাদের অধিকার কোথায়। জাতীয় অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা থাকলেও এইসব বীর সৈনিকদের বেলায় যবনিকা ঘটে না।
করোনা পুরো বিশ্ববাসীকে ক্ষতিগ্রস্ত করলেও আমাদের নেতাদের করেছে ভাগ্যবান! ভাগ্যিস, করোনায় মৃতদের লাশে ভাইরাস থাকে। না হলে এতদিনে তাদের কবর খুঁড়ে কাফনটা পর্যন্ত চুরি করে নিয়ে যেতো এরা!খুব কষ্ট লাগে এই ভেবে যে, বাংলাদেশের মানুষ আজও
রাষ্ট্রযন্ত্রের কিছু দুষ্টগ্রহের শৃঙ্খলে আবদ্ধ। যে শৃঙ্খল আবর্তিত হচ্ছে — ব্যক্তি কেন্দ্রীকতা,সুশাসনহীনতা,সর্বত্র রাজনীতিকরণ,প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা, জবাবদিহিতার অভাব,এবং রাষ্ট্রের রন্ধ্রে -রন্ধ্রে সীমাহীন দুর্নীতির  বেড়াজালে আবদ্ধ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা এইসব দূর্নীতিবাজদের সামাল দিতেও হিমসিম খাচ্ছে। জানিনা কবে আমরা এই হীনকর্ম থেকে মুক্ত স্বাধীন ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবো।
এম জামাল উদ্দিন
লেখক, সাংবাদিকঃ সৌদি আরব রিয়াদ।