দেবিদ্বারের গ্রামে খেজুর রস প্রেমীদের ভিড়
আল-আমিন কিবরিয়া।।
শীত ও খেজুরের রস। দুইটির পাশাপাশি অবস্থান। গ্রাম থেকে শহর, সব বয়সের মানুষের মধ্যে এ খেজুরের রসের চাহিদা ব্যাপক। খেজুরের রসের জন্য দিনদিন বিখ্যাত হয়ে উঠছে কুমিল্লা দেবিদ্বার উপজেলার কয়েকটি গ্রাম।
গ্রামগুলোতে সাতসকালে দেখা যায় বিভিন্ন বয়সের মানুষের ভিড়। কাঁপা কাঁপা ঠান্ডায় দাঁড়িয়ে থাকেন গাছের নিচে। কেউ বোতলে করে রস নিয়ে যান বাড়িতে। আবার কেউ গাছের নিচে দাঁড়িয়ে রস পান করেন আনন্দের সাথে। এই খেজুরের রসের কারণে গ্রামগুলোতে যেন উৎসবে পরিণত হয়েছে।
ফুলতুলি। দেবিদ্বার উপজেলার একটি গ্রাম। গ্রামটি যেন খেজুরের রসের রাজ্য। বিগত বছরগুলোর মত এ বছরও এই গ্রামের অর্ধ শতাধিক খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করছেন গাছিরা।
কথা হয় ফুলতলী গ্রামের খেজুরের রস সংগ্রহকারী ইউসুফ মিয়া ও শাহাদাতের সাথে। তারা বলছেন, এবছর গতবছরের থেকেও খেজুরের রসের চাহিদা বেশি। রস স্বাস্থ্যসম্মত রাখতে রস সংগ্রহের নিয়ম মেনে চলেন তারা। দিন রাতে দূরদূরান্ত থেকে ভিড় জমায় অন্তত ২ শতাধিক লোকজন। আগত লোকজন রস পান করে যেমন আনন্দ পায়, এ আনন্দ দেখে দুজনের কাছেই ভালো লাগে। তবে মাঝেমধ্যে ঘটে বিপত্তি! রাতের আঁধারে রস চুরি করে নিয়ে যায় চোরেরা।
এছাড়াও পদ্মকোট, ভোষনা ছগুড়াসহ আরো কয়েকটি গ্রামে দেড় শতাধিক গাছ থেকে খেজুরের রস সংগ্রহ করা হয়। রস বিক্রি হয় ১৫০ টাকা প্রতি লিটার। প্রতিদিন একটি গাছ থেকে আড়াই থেকে তিন কেজ রস সংগ্রহ করা যায়।
কুমিল্লা নগরী থেকে খেজুরের রসের খোঁজে আসা রাফি আদনান ও জুয়েল রানা বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেছি এ উপজেলার কয়েকটি এলাকায় খেজুরের রস পাওয়া যায়। খুঁজতে খুঁজতে ফুলতলী গ্রামে গিয়ে পেয়েছি। বহু বছর পরে এই খেজুর রস খাওয়া তৃপ্তি মিটেছে আমাদের।
দেবিদ্বারের পারভেজ সরকার ও রিফাত মাহমুদ বলেন, দূর দূরান্তের বন্ধুরা আমাদেরকে ফোন করে। আমাদের এলাকায় খেজুরের রস কোথায় পাওয়া যায়। এজন্য ভালো লাগে। কিছুদিন আগে আমরাও গিয়েছি এই খেজুরের রস পান করার জন্য।
দেবিদ্বার উপজেলা কৃষি অফিসার বানিন রায় গাছিদের পরামর্শ দিয়ে বলেন, খেজুরের রস সংগ্রহের জায়গা নেট দিয়ে ঢেকে দিলে রসে পাখি বা বাদুড় মুখ দিতে না পারে। এতে নিপাহ ভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কা কমে।