ধর্ষণে বাধায় শিশু হত্যা, যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

দেখানো হয় গাড়ি ছড়ানোর লোভ
 প্রতিনিধি।।
কুমিল্লার চান্দিনায় ধর্ষণে বাধা দেয়ায় সুবর্ণা মিমকে (৬) শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। হত্যা ও লাশ গুমের অপরাধে ওমর ফারুক নামের এক যুবককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে কুমিল্লার আদালত। মঙ্গলবার (২১ মে) কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-২ এর বিচারক (জেলা জজ) মোঃ জাহিদুল কবির এ রায় দেন। ওমর ফারুক (১৯) কুমিল্লা চান্দিনা উপজেলার বেলাশ্বর গ্রামের মোস্তফা কামালের ছেলে।


মামলার বিবরণে জানা যায়- সুবর্ণা মীম চান্দিনার বেলাশ্বর গ্রামের কোরবান আলী ও খাদিজা আক্তার শিমুর মেয়ে। কোরবান আলী ও খাদিজা আক্তারের বিয়ে বিচ্ছেদ হলে মীম বাবার কাছে থাকে। পরে কোরবান আলী মোসাঃ লাভলী আক্তার নামের এক নারীকে বিয়ে করেন। লাভলী আক্তার সুবর্ণা মীমকে ভালো চোখে দেখতেন না। তাকে মারধর করতেন। এতে কোরবান আলীর মা মাজেদা বেগম লাভলী আক্তারকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। ২০১৭ সালের ৬ ডিসেম্বর কোরবান আলী মেয়ে সুবর্ণা মীমকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না। সন্ধ্যায় কোরবান আলীর ফোনে একটি নম্বর থেকে সুবর্ণা মীমের মুক্তিপণ হিসেবে দশ লক্ষ টাকা দাবি করা হয়। পরদিন সকালে চান্দিনা আর এন আর সিরামিক ফ্যাক্টরির দক্ষিণ পশ্চিমে সুবর্ণা মীমের মরদেহ গলায় ওড়না পেচানো অবস্থায় পাওয়া যায়। এ বিষয়ে মীমের মা খাদিজা আক্তার শিমু বাদী হয়ে ওইদিন মোসাঃ লাভলী আক্তারকে (৩০) ও তার ভাই মোঃ সালাহ উদ্দিন সরকারকে (৩২) আসামি করে চান্দিনা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) ডালিম কুমার মজুমদার পরেরদিন উল্লেখিত আসামিদের গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করেন। এদিকে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ২০১৭ সালের ১১ ডিসেম্বর বেলাশ্বর গ্রামের মোস্তফা কামালের ছেলে ওমর ফারুককে (১৯) গ্রেফতার করেন। আদালতে সোপর্দ করলে সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডালিম কুমার মজুমদার ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন করে ২০১৮ সালের ৩ মে আসামি মোসাঃ লাভলী আক্তার, মোঃ সালাহ উদ্দিন সরকার ও মোঃ ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে দুটি পৃথক অভিযোগপত্র দাখিল করেন। জবানবন্দি সূত্রে জানা যায়, ফারুক কার চালক ছিলেন। গাড়ি ছড়ানোর লোভ দেখিয়ে ব্রিকফিল্ডের খালি জায়গায় নিয়ে সুবর্ণা মীমকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। সে বাঁধা দেওয়া ও বাবার নিকেট বলে দিবে বললে গলায় ওড়না পেচিয়ে তাকে হত্যা করে ওমর ফারুক। এদিকে অপরাধ না পাওয়ায় মামলার চার্জ গঠনের সময় মোসাঃ লাভলী আক্তার ও তার ভাই মোঃ সালাহ উদ্দিন সরকারকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে নিযুক্ত কৌঁসুলি স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট মোঃ মিজানুর রহমান মজুমদার বলেন, আশা করছি উচ্চ আদালত এ রায় বহাল রাখবেন।
এদিকে আসামি পক্ষের অ্যাডভোকেট মোঃ হাছান বলেন- রায়ের কপি হাতে পেলে শীঘ্রই উচ্চ আদালতে আপিল করবো।