নতুন রূপে ফিরবে কুমিল্লা ক্লাব
অফিস রিপোর্টার।।
শত বছরের ঐতিহ্যের কুমিল্লা ক্লাব। ৬শতাধিক সদস্যের ক্লাবটি সম্প্রতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্তমানে ক্লাবের সংস্কার কাজ চলছে। ক্লাবের দায়িত্বশীলদের আশাবাদ, আগামী ৬মাস পর এটি আরো নান্দনিক রূপে ফিরে আসবে।
সূত্র জানায়, গত ৫আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর কিছু লোক কুমিল্লা ক্লাবে ভাংচুর চালায়। এসময় একটি চক্র ক্লাবের মালামাল লুট ও অগ্নিসংযোগ করে। ক্লাবটি আবার মুখরিত হয়ে উঠুক সেই প্রত্যাশা সদস্যদের।
ক্লাবে গিয়ে দেখা যায়, ক্লাবের ভেতর ও আঙিনায় আগের প্রাণচাঞ্চল্য নেই। পাঁচতলা ও তিনতলা ভবনের অধিকাংশ কক্ষ পুড়ে গেছে। ভাংচুর ও লুট হয়েছে বিলিয়ার্ড খেলার কক্ষ, ড্রয়িং রুম ও গেস্ট হাউজসহ অন্যান্য কক্ষ। বাথরুমের টেপও খুলে নেয়া হয়েছে। সে সব কক্ষ আবার সংস্কার করা হচ্ছে। ক্যান্টিন,নামাজ ঘরসহ কয়েকটি কক্ষ সংস্কার শেষ হয়েছে। বিদ্যুত সংযোগের কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে। কাজ তদারকি করতে দেখা যায়, আহবায়ক কমিটির সদস্য এফ এ এম শাহরিয়ার,সদস্য আহমেদ শোয়েব সোহেল ও জোবায়দুল হক জুয়েলকে।
জানা যায়, সম্প্রতি গঠন করা হয় ক্লাবের আহবায়ক কমিটি। এতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পঙ্কজ বড়ুয়াকে আহবায়ক, ক্লাব সদস্য ব্যাংক কর্মকর্তা এফ এ এম শাহরিয়ার ও ক্লাব সদস্য ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন মানিককে সদস্য করা হয়েছে। এছাড়া কুমিল্লার গণপূর্তের উপ- বিভাগীয় প্রকৌশলীকে প্রধান, ক্লাব সদস্য রইছ আবদুর রব ও অ্যাডভোকেট শহীদুল হক স্বপনকে সদস্য করে সংস্কার ও মেরামত উপ-কমিটি গঠন করা হয়। অপরদিকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ শামসুল তাবরিজকে আহবায়ক, ক্লাব সদস্য জহিরুল হক দুলাল ও ইমরুল আনোয়ার লিটনকে সদস্য করে গঠনতন্ত্র সংশোধন উপ-কমিটি গঠন করা হয়।
কুমিল্লা ক্লাব সদস্য সমাজকর্মী আহমেদ শোয়েব সোহেল ও জোবায়দুল হক জুয়েল বলেন,নতুন উদ্যোগে ক্লাবকে সাজানো হচ্ছে। আমিন- উর রশিদ ইয়াছিন,ইউসুফ মোল্লা টিপু, রইছ আবদুর রবসহ কয়েকজন ক্লাব সদস্য সংস্কার কাজে সহযোগিতা করছেন। আশা করছি অচিরে কুমিল্লা ক্লাব অচিরে তার স্বরূপে ফিরে আসবে।
আহবায়ক কমিটির সদস্য এফ এ এম শাহরিয়ার বলেন,৫আগস্টের ঘটনায় ক্লাবের ৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। সব সদস্যের সহযোগিতা নিয়ে কাজ শুরু করেছি। আমরা আর অতীতে ফিরতে চাই না। সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। আশা করছি আগামী ৬মাসের মধ্যে আমরা সংস্কার কাজ শেষ করতে পারবো। কুমিল্লা ক্লাবকে আরো আধুনিক ও নান্দনিকভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য- শতবর্ষ আগে ১৯১৭ সালে এ ক্লাবটি টিনের চৌচালা ঘরে ছিলো। নাম ছিলো ‘দি ত্রিপুরা ক্লাব’। অভিজাত শ্রেণির লোকজনের চিত্ত বিনোদনের জন্য ক্লাবটি প্রতিষ্ঠা করেন ত্রিপুরার মহারাজা বীরচন্দ্র মানিক্য বাহাদুর। সেই চৌচালা টিনের ঘর ১৯৯২ সালে রুপান্তরিত হয় বহুতল ভবনে। ১৯৬৪ সালে এটির নামকরণ হয় দি কুমিল্লা ক্লাব। বিলিয়ার্ডে জাতীয় চ্যাম্পিয়নের গৌরব রয়েছে কুমিল্লা ক্লাবের। ক্লাবের ছিল সভাকক্ষ, বিলিয়ার্ড রুম, টেবিল টেনিস রুম, জিমনেসিয়াম, সুইমিংপুল, গেস্টহাউজ, ক্যান্টিন, পার্টি সেন্টার, কার্ডরুম, কনফারেন্স রুমসহ বিভিন্ন সুবিধা।