প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত কুমিল্লার সোহেলের যত গল্প

বাড়িতে দেড় কোটি টাকার জমি, দুইটি স্বর্ণের দোকানে বিনিয়োগ
 প্রতিনিধি।
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) পরীক্ষাসহ গত ১২ বছরে ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের একজন মিরপুরের ব্যবসায়ী বলে পরিচিত ব্যবসায়ী আবু সোলেমান মো. সোহেল (৩৫)। তিনি কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার বানাশুয়া গ্রামের আবদুল ওহাবের ছেলে। ৩ ভাই ২ বোনের মধ্যে সোহেল সবার ছোট। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবসা অনুষদ থেকে স্নাতক শেষ করেছেন বলে পরিবারকে জানান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনের ছবি তার ফেসবুকে দেখা গেছে। এলাকার লোকজন জানতো আমেরিকার কোন এক লটারিতে সোহেল কোটি টাকা পেয়েছে। সেই টাকায় এখন সে বড় ব্যবসায়ী। কুমিল্লার বাড়িতে সম্প্রতি কিনেছে দেড় কোটি টাকার জমি। রয়েছে দুইটি স্বর্ণের দোকানে বিনিয়োগ।
অনেকেই অভিযোগ করেন, সোহেল ছাত্র হিসেবে তেমন ভালো ছিলো না। সে কিভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছে। এ নিয়েও তদন্ত হলে আরো অনেক কিছু বের হবে।
সোহেলের ফেসবুকের নাম আবু সোলায়মান এম সোহেল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সোহেল দুর্নীতিবাজদের কঠোর সমালোচনা করে পোস্ট দিতে৷
২০২০ সালের ১০ জুলাই রিজেন্ট শাহেদ, সম্রাট, পাপিয়া, কুয়েতে মানব পাচারে অভিযোগে গ্রেফতার সাবেক সংসদ সদস্য পাপুলসহ কয়েকজনের কোলাজ ছবি পোস্ট করে সোহেল লিখেন-এদের দেখলে যে গল্প টা মনে পড়ে……এক দেশে ছিল দুই ঠক। একজন জামপাতা নিল এক বস্তা। আরেকজন কলার বিচি নিল এক ঝোলা। রাস্তায় গাছের নিচে বসল দুজন। তোমার বস্তায় কী? তেজপাতা। তোমার বস্তায় কী? গোলমরিচ। দুজনেই বস্তা বদল করল। তারপর খুলে দেখে তেজপাতা নয়,জামপাতা। গোলমরিচ নয়, কলার বিচি। আমাদের টোনা আর টুনি পিঠা তৈরি করে সব পশুপাখিকে বলে, দুপুরের পর এসো, তোমাদেরও ভাগ দেব। দুপুরের মধ্যে খেয়েদেয়ে সাফসুতরো করে টোনা আর টুনি উড়ে গিয়ে আশ্রয় নিল গাছের মগডালে। সেখানে একজন মন্তব্য করেন আপনি ওদের বস।
২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর একটি লেখা পোস্ট করে সোহেল। তাতে লেখা ছিলো-
আগে বুঝতাম না কিন্তু এখন হাড়ে হাড়ে বুঝি; যে সার্টিফিকেট মনুষ্যত্ব, মানবিকতা, মূল্যবোধ, নৈতিকতা,সামাজিকতা শেখাতে পারেনা। সে সার্টিফিকেট এক টুকরো কাগজ ছাড়া আর কিছু নয় আমার নিকট!……
নাম না প্রকাশ করার শর্তে স্থানীয় লোকজন জানান, সোহেলের বড় ভাই সুজনের স্বর্ণের দোকান আছে কুমিল্লা নগরীর ছাতিপট্টিতে। তার মেঝো ভাই খালেদেরও স্বর্ণের দোকান আছে বুড়িচং উপজেলা সদরে। দুটো দোকানের নাম ওহাব জুয়েলার্স। এই দুই দোকানে সোহেলের বড় বিনিয়োগ আছে আছে বলে জানা যায়। গেলো রমজানের ঈদের আগে সোহেল বাড়ির পাশে ৬০ শতক জমি দেড় কোটি টাকায় কিনে নেয়। এছাড়া এলাকার লোকজন জানে, সোহেল ঢাকায় বড় গার্মেন্টস ব্যবসায়ী। এত কম বয়সে এত টাকার মালিক হওয়ায় এলাকায় সোহেলকে নিয়ে বেশ আলোচনা রয়েছে।
তাঁর বাড়ির লোকজন জানান, সোহেলের বাবা আবদুল ওহাব আমেরিকায় আছেন। তার বড় ভাই খালেদ হোসেনকে কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।