‘বাংলাদেশে ইঁদুর ৫০-৫৪ লাখ লোকের খাবার নষ্ট করে’
কুমিল্লায় ইঁদুর নিধন অভিযান উদ্বোধন
প্রতিনিধি।।
কুমিল্লায় জাতীয় ইঁদুর নিধন অভিযানের উদ্বোধন ও ২০২২ এর পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) কুমিল্লা অঞ্চল, কুমিল্লা জেলা ও আদর্শ সদর উপজেলার উদ্যোগে বুধবার ডিএই কুমিল্লার উপ-পরিচালকের প্রশিক্ষণ কক্ষে এই আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন,ইঁদুর একটি ক্ষতিকর প্রাণী। অনুকুল পরিবেশ পেলে এক জোড়া ইঁদুর বছরে ১৫০০-২০০০টি ইঁদুর জন্ম দিতে পারে। প্রতিবারে ৪-১২টি বাচ্চার জন্ম দেয়। বাচ্চা প্রসবের ২ দিনের মধ্যেই স্ত্রী ইঁদুর পুনরায় গর্ভধারণ করতে পারে। বছরে প্রায় ৬-৮ বার বাচ্চা দেয়। জন্মের ৪৫-৫০ দিনের মধ্যেই বাচ্চা ইঁদুর পূর্ণবয়স্ক হয়ে প্রজননে সক্ষমতা লাভ করে। ইঁদুরের সামনের ছেদন দাঁত ক্রমাগত বৃদ্ধি পেতে থাকে। দাঁত গুলোকে স্বাভাবিক রাখার জন্য ইঁদুর সমসময় কাটাকাটি করতে থাকে। ইঁদুরের আক্রমণে জমির ফসল, গুদামের খাবার, ঘরের আসবাবপত্র, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নষ্ট করে ফেলে। বাংলাদেশে ইঁদুর ৫০-৫৪ লাখ লোকের এক বছরের খাবার নষ্ট করে। এরা যে শুধু কাটাকুটি করে আমাদের ক্ষতি করে তাই নয়, এরা মানুষ ও পশুপাখির মধ্যে প্লেগ, জন্ডিস, টাইফয়েড, চর্মরোগ, আমাশয়, জ্বর,কৃমিসহ প্রায় ৬০ প্রকার রোগ জীবাণুর বাহক ও বিস্তারকারী। একটি ইঁদুর প্রতিদিন তার দেহের ওজনের ১০ ভাগ খাদ্য গ্রহণ করে। এরা যা খায় তার ৪/৫ গুণ নষ্ট করে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ১৯৮৩ সাল থেকেই ইঁদুর নিধন অভিযান পরিচালনা করছে। কৃষকদের ইঁদুর দমনে উদ্বুদ্ধ করে আসছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, ডিএই কুমিল্লা অঞ্চলের অতিরিক্ত
পরিচালক ড. মোহিত কুমার দে। সভাপতির বক্তব্য রাখেন, ডিএই কুমিল্লার উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আইউব মাহমুদ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, হর্টিকালচার সেন্টার, কুমিল্লার উপপরিচালক কৃষিবিদ মোঃ আমজাদ হোসেন, ডিএই কুমিল্লা অঞ্চলের উন্নয়ন শাখার উপপরিচালক, কৃষিবিদ শাহনাজ রহমান,ডিএই কুমিল্লার প্রশিক্ষণ অফিসার কৃষিবিদ সিরাজ উদ্দিন হোসেন, তেলজাতীয় প্রকল্পের মনিটরিং অফিসার
কৃষিবিদ মোঃ আবু তাহের।
এদিকে কুমিল্লা অঞ্চলে ২০২২ সালে ইঁদুর নিধনে ৪ টি ক্যাটাগরিতে মোট আটজনকে নগদ অর্থসহ পুরষ্কার প্রদান করা হয়। এর মধ্যে কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলা কৃষি অফিস ১৫১২৩৫ টি ইঁদুর নিধন করে কুমিল্লা অঞ্চলে ১ম স্থান অর্জন করেন। পুরষ্কার গ্রহণ করেন, উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ পাবেল খান পাপ্পু। উপসহকারী কৃষি অফিসারদের মধ্যে পুরষ্কার পেয়েছেন, চাঁদপুর সদর উপজেলার মোঃ শাহ আলম; কুমিল্লা লালমাই উপজেলার মোঃ মোসলে উদ্দিন, লাকসাম উপজেলার ফারহানা নাছরিন। কৃষকদের মাঝে পুরষ্কার পেয়েছেন, কুমিল্লা লাকসাম
উপজেলার মোঃ অহিদুর রহমান; ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মোঃ জাকির হোসেন, চাঁদপুর সদর উপজেলার মোঃ মিজানুর রহমান। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পুরষ্কার পেয়েছেন চাঁদপুর সদর উপজেলার লোধের গাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন, কৃমিল্লা দেবিদ্বার উপজেলার উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ বানিন রায়।