বীজের টাকা না পেয়ে ক্ষুব্ধ কুমিল্লার কৃষকরা

 

বীজের টাকা না পেয়ে ক্ষুব্ধ কুমিল্লার ১৭ উপজেলার কৃষকরা। এদিকে মাঠে গেলে ব্রিবতকর পরিস্থিতিতে পড়ছেন কৃষি কর্মকর্তারা। কৃষকদের অনেকে টাকার জন্য তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করছেন। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের কর্মকর্তারা জানান,বিএডিসি (বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন) সময় মতো টাকা পরিশোধ না করায় এই বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এনিয়ে সাপ্তাহিক আমোদ পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

 

সংবাদে উল্লেখ করা হয়, চলতি বছরের আগস্ট মাসে জেলার ১৩৪জন কৃষক থেকে ৭৫টনের কিছু বেশি ধানের বীজ ক্রয় করে বিএডিসি। টাকা এক মাসের মধ্যে পরিশোধ করার কথা থাকলেও তা তিন মাসেও দেয়া হয়নি। এনিয়ে হতাশ কৃষকরা। কৃষক জানেনা তারা এই টাকা পাবেন কিনা। এদিকে কৃষক থেকে বীজ সংগ্রহ করে বিএডিসিকে দিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কর্মকর্তারা। টাকা না পেয়ে মাঠের উপ-সহকারী কর্মকর্তাসহ অন্যদের সাথে কৃষকরা খারাপ আচরণ করছেন। অনেক কর্মকর্তা বীজ নেয়া কৃষকের এলাকায় যাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। কৃষক ও মাঠ কর্মকর্তাদের মাঝে দূরত্ব সৃষ্টি হচ্ছে। এ দৃশ্য সারা দেশেই বলে জানা গেছে। এতে বিঘিœত হবে ফসল উৎপাদন। এদিকে কোন উপজেলায় কৃষি কর্মকর্তারা নিজেদের পকেট থেকে কিছু টাকা দিয়ে কৃষকদের শান্ত করছেন। তার মধ্যে অন্যতম লাকসাম। বেশি বেকায়দায় আছেন চৌদ্দগ্রামের কর্মকর্তারা। সেখান থেকে বেশি বীজ সংগ্রহ হয়েছে। প্রতিদিনই টাকার জন্য অফিসে আসছেন কৃষকরা।
সদর দক্ষিণ উপজেলার ঘিলাতলী গ্রামের কৃষক আবু আহমেদ বলেন, তিনি ১২মণ ধানের বীজ বিক্রি করেছেন। তিন মাসেও টাকা পাননি। এতে তিনি নতুন ধানের আবাদ ও সরিষার আবাদ করতে পারছেন না। বাইরে বিক্রি করলে সময় মতো এবং আরো বেশি টাকা পাওয়া যেতো। তিনি আর কখনও সরকারি প্রতিষ্ঠানের নিকট বীজ বিক্রি করবেন না বলে জানান।
বরুড়া উপজেলার ভবানীপুর ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা গোলাম সারোয়ার ভুইয়া,সদর দক্ষিণ উপজেলার কালির বাজার ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাহিদা খাতুন বলেন,কৃষক আমাদের মাধ্যমে বীজ দিয়েছে। তারা টাকার জন্য বার বার বলছেন। এটা নিয়ে আমরা মাঠে গিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ছি।

 

লাকসাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ শাহিনুল ইসলাম,সদর দক্ষিণ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুল বাশার চৌধুরী,বরুড়া উপজেলা কৃষি অফিসার মো. নজরুল ইসলাম, চান্দিনা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরুল হক রোমেল,বুড়িচংয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বানিন রায় ও চৌদ্দগ্রামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুব্রত রায় বলেন,বিষয়টি বিব্রতকর। এতে কৃষকের সাথে মাঠ কর্মকর্তাদের আস্থার সংকট দেখা দিবে। বিষয়টি দ্রুত সুরাহা হওয়া প্রয়োজন।

 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, বীজের টাকা সময় মতো না পেয়ে কৃষকরা ক্ষুব্ধ। এতে আমাদের মাঠ কর্মকর্তারা বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছেন। বিষয়টি আমাদের মহাপরিচালক মহোদয়কে অবগত করা হয়েছে।
বিএডিসি (বীজ প্রক্রিয়াজাত অঞ্চল কেন্দ্র) কুমিল্লার যুগ্ম পরিচালক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে টাকা ছাড় হতে দেরি হওয়ায় এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি কৃষকের বীজের টাকা দ্রুত পরিশোধের।
সংবাদে বলা হয়েছে, অনেক কর্মকর্তা বীজ নেয়া কৃষকের এলাকায় যাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। কৃষক ও মাঠ কর্মকর্তাদের মাঝে দূরত্ব সৃষ্টি হচ্ছে। এ দৃশ্য সারা দেশেই। এতে বিঘিœত হবে ফসল উৎপাদন। এদিকে কোন উপজেলায় কৃষি কর্মকর্তারা নিজেদের পকেট থেকে কিছু টাকা দিয়ে কৃষকদের শান্ত করছেন। খাদ্য নিয়ে দেশের এই সংকট মুহূর্তে কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তাদের দূরত্ব দুর্ভাগ্যজনক। আমরা চাই বিএডিসি বিষয়টি যেন দ্রুত সমাধান করে।