ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় করোনা টেস্টের প্রবণতা বৃদ্ধি : সক্রিয় দালাল চক্র

এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
করোনার প্রকোপ বাড়ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। তার সাথে পাল্লা দিয়েই যেনো মানুষের মাঝে বেড়েছে পরীক্ষা করানোর আগ্রহও। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল ছাড়াও জেলার সবক’টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও সংগ্রহ করা হচ্ছে করোনার নমুনা। টেষ্টের প্রতি আগ্রহ বাড়ায় সাধারণ মানুষ স্যাম্পল প্রদানে একরকম হুমড়ি খেয়ে পড়ছে হাসপাতালের ফ্লু কর্ণারে। স্বাস্থ্যবিধিও হচ্ছে উপেক্ষিত। আকস্মিকভাবে মানুষের চাপ বেড়ে যাওয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের। আর এই মওকায় দালাল চক্রও হয়ে ওঠেছে সক্রিয়।
আড়াইশ’ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের বিএমএ ভবনে খোলা হয়েছে ফ্লু কর্ণার। আর সেই কর্ণারের সামনে সকাল থেকে সন্ধ্যে নাগাদ থাকছে করোনা পরীক্ষায় স্যাম্পল প্রদানকারীদের উপচে টড়া ভীড়।জেলা সদরসহ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক মানুষ আসছেন করোনার স্যাম্পল প্রদান করার উদ্দেশ্যে। প্রথম দিকে মানুষের মাঝে তেমন আগ্রহ না থাকলেও এখন প্রতিদিনই নমুনা দিতে আসছেন দুই শতাধিক মানুষ। এতে স্বাস্থ্যবিধিও চরমভাবে উপেক্ষা করে গাদাগাদি করে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করেও অনেকে নমুনা দিতে না পেরে আবার ফিরেও যাচ্ছেন। আবার স্যাম্পল প্রদানে আগতদের সংখ্যাধিক্যের মওকা কাজে লাগিয়ে তৎপর হয়ে ওঠেছে এক শ্রেণীর দালাল চক্র। করোনা ভাইরাসের পরীক্ষার জন্য স্যাম্পল দিতে আসা লোকজন জানান, স্বাস্থ্যকর্মীদের সহযোগিতায় দালাল চক্রটি সিরিয়াল পাইয়ে দেয়ার নাম করে প্রতিজনের কাছ থেকেই হাতিয়ে নিচ্ছেন অতিরিক্ত অর্থ। ফলে ভোগান্তির অন্ত থাকছে না মানুষের।

প্রসঙ্গত, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় প্রতিদিন প্রায় দেড়শ’ মানুষের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। এ যাবৎ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৪৪ হাজার ৮২২ জনের, তন্মধ্যে ফলাফল এসেছে ৪৪ হাজার ৫৪৮ জনের। প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে করোনা শনাক্ত হয়েছে ছয় হাজার ২৬৯ জন।অপরদিকে করোনায় আক্রান্ত হবার পর সুস্থ্য হয়েছে চার হাজার ১৮৯ জন। বর্তমানে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে ৪৬৬ জন এবং আইসোলেশনে আছেন ৩১ জন। এদিকে জেলায় এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৮৬ জনের।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান বিষয়ের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ‘প্রতিদিনই এখানে ভীড় বাড়ছে। আকস্মিকভাবে চাপ বেড়ে যাওয়ায় সংশ্লিষ্টদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে স্যাম্পল সংগ্রহে সরকার নির্ধারিত ফি’র বাইরে অতিরিক্ত টাকা নেয়া হচ্ছে  কি না তা খতিয়ে দেখা হবে।’