ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দফায় দফায় সংঘর্ষ ; পাঁচজন নিহত
২৫ পুলিশসহ অর্ধশতাধিক আহত-বিভিন্ন স্থানে সংর্ঘষ চলছে
এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অনেকটাই রণক্ষেত্রে পরিণত। জেলার বিভিন্ন স্থানে সংর্ঘষে নিহত হয়েছে অন্তত পাঁচজন। পুলিশসহ আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক। বিভিন্ন স্থানে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলমান।
শনিবার বিকেলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের নন্দনপুরে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী মহাসড়কে অবস্থান করে। এসময় পুলিশ-বিজিব সদস্যরা তাদের ধাওয়া করলে সেখানে উত্তেজনা দেখা দেয়। তখন ঘটে ব্যাপক সংর্ঘষের ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয় বেশ কয়েকজন। নিহতেরা হলেন নন্দনপুর হারিয়া গ্রামের আব্দুল লতিফ মিয়ার পুত্র ওয়ার্কশপ দোকানী জুরু আলম (৩৫), বুধল গ্রামের আওয়াল মিয়ার পুত্র কাউছার মিয়া (২৫), একই গ্রামের যুবায়ের (১৪), পার্শ্ববর্তী মজলিশপুর ইউনিয়নের মৈন্দ গ্রামের জোহর আলীর পুত্র সুজন মিয়া (২২) এবং সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার দাবির মিয়ার পুত্র শ্রমিক বাদল মিয়া (২৪)। তাদেরকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল মামুন তাদেরকে মৃত ঘোষণা করেন। আহতদের সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা দেয়া হয়।
এদিকে, শনিবার বিকেলে জেলা শহরের টি.এ রোড দিয়ে আওয়ামী লীগের একটি র্যালি জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার এলাকা অতিক্রম করার সময় পেছন দিক থেকে মাদ্রাসার কয়েকজন ছাত্রকে ধাওয়া করে। এসময় ছাত্ররাও পাল্টা ধাওয়া দেয়। তখন অর্ধশত ককটেলের বিষ্ফোরণ ঘটানো হয়। এর কিছুক্ষণ পর কান্দিপাড়া থেকে মাদ্রাসাকে রক্ষার জন্য মসজিদের মাইক থেকে ঘোষণা দেয়া হলে হাজার হাজার লোক রাস্তায় নেমে পড়ে। তখন ছাত্রলীগ কর্মীরা পিছু হটে। ক্ষুব্ধ লোকজন প্রধান সড়ক অবরোধ করে রাস্তায় আগুন ধরিয়ে দেয় এবং যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। এসময় শহরের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। পরে বিজিবি সদস্য ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মাদ্রাসা এলাকায় থেমে থেমে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ চলছিল।
অন্যদিকে জেলার সরাইল উপজেলায় স্থানীয়দের বের করা বিক্ষোভ মিছিল থেকে পুলিশ ক্যাম্পে হামলা চালানো হয়েছে। এতে ক্যাম্পে থাকা ২৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আহত পুলিশ সদস্যদের নাম জানা যায়নি। তাঁদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। পুলিশ অন্তত ৪০ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ ও ১৫ রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
সরাইল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কবির হোসেন জানান, ‘বিক্ষোভ মিছিল থেকে হঠাৎ করে পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালানো হয়। এছাড়া গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আলী আহমেদের পুত্র কাউসার মিয়া, সাইদ মিয়ার পুত্র নুরুল আমিন (৩৫), আব্দুল সাত্তারের পুত্র বাছির মিয়া (২৮), আবদুল হোসেনের পুত্র ছাদের মিয়া (৩৫) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’