ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাল্য বিয়ে থেকে মুক্তি চান বর

এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
নিকাহ্ রেজিস্ট্রার ‘প্রতারণা’ করে বাল্য বিয়ে করিয়েছেন বলে অভিযোগ মিলেছে। বিষয়টি বুঝতে পেরে বর নিজেই এ থেকে মুক্তি পেতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরারবর করেছেন লিখিত আবেদন। কনের বয়স কম হওয়ায় বিয়েটি রেজিস্ট্রি করা হয়নি এমনটি নিকাহ্ রেজিস্ট্রার স্বীকারও করেছেন। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা সদরের।
লিখিত আবেদন সূত্রে জানা যায়, জেলার আখাউড়া পৌর এলাকার কলেজপাড়া মহল্লার বাসিন্দা ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা কে.এম হারুণুর রশিদের পুত্র মো. মাহবুবুর রশিদের সঙ্গে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি তারিখে স্থানীয় এক মেয়ের বিয়ে হয়। স্থানীয় আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের নিকাহ্ রেজিস্ট্রার (কাজি) মো. মাঈনুদ্দিনের মধ্যস্থতায় বিয়েটি সম্পন্ন হয়। বিয়ের কনে কাজি মাঈনুদ্দিন পরিচালিত একটি মাদ্রাসায় পড়াশুনা করে জানতে পেরে কনের বয়স সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। কিন্তু কাজি মাঈনুদ্দিন বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে কাবিনে স্বাক্ষর নেন এবং বয়স সম্পর্কে তিনি অবগত আছেন বলে বরপক্ষকে আশ্বস্থ করেন।
মাহবুবুর রশিদের ভাই মাহমুদুল হাসান জানান, বিয়ের পর তারা নিশ্চিত হতে পারেন যে কনে দশম শ্রেণির ছাত্রী এবং তার বিয়ের বয়স হয়নি। বিষয়টি কাজি মাঈনুদ্দিনকে আবার অবহিত করলে তিনি বিষয়টিতে কোনোই পাত্তা দেননি। এমনকি বিয়ের কাবিননামা চাইলেও দিতে চাননি। এ অবস্থায় বিষয়টির মুষ্ঠু সুরাহা চেয়ে ইউএনও বরাবার অভিযোগ করা হয়। সদ্য বিদায়ী ইউএনও বিষটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতেও এক কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। মঙ্গলবার (৬ জুলাই) নবাগত ইউএনও’র কাছে গেলে তিনি সামাজিকভাবে বিষয়টি মিমাংসা করে ফলার জন্য বলেন। এহেন প্রেক্ষিতে অনেকটা বিপাকে পড়েন বর মাহবুবুর রশিদের পরিবার। জানা যায়, নিকাহ্ রেজিস্ট্রার মাঈনুদ্দিন জেলার শীর্ষস্থানীয় আলেম ও প্রভাবশালী নেতার ভায়রাভাই হওয়ায় এবং বিয়ের কনে তাঁরই মাদ্রাসার ছাত্রী হওয়ায় বরপক্ষ অনেকটাই বিপাকে। এমনকি তাদেরকে নারী নির্যাতন মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ারও ভয় দেখানো হচ্ছে।
নিকাহ্ রেজিস্টার মো. মাঈনুদ্দিন জানান, ‘কনের বয়স কম বলে কাবিন রেজিস্ট্রি করা হচ্ছে না। বয়স হওয়ার পর রেজিস্ট্রি করা হবে। তবে আমি এ বিয়ে পড়াইনি। মৌলভীর মাধ্যমেই বিয়ে পড়ানো হয়েছে। স্থানীয় সকলেই বিষয়টি অবগত আছেন।’