মধ্যরাতে ইলিশ শিকারে নামবে চাঁদপুরের জেলেরা


চৌধুরী ইয়াসিন ইকরাম, চাঁদপুর #
দীর্ঘ বিরতির পর নদীতে নামতে উচ্ছ্বসিত চাঁদপুরসহ নদী তীরবর্তী জেলাগুলোর জেলেরা।
জীবনের চাকা ঘুরাতে নদীতে নামছেন অর্ধ লক্ষাধিক জেলে। তাদের প্রত্যাশা নিষেধাজ্ঞা শেষে রূপালি ইলিশে ভরবে জেলের জাল, ফিরবে হাসি তাদের মুখে।
ইলিশের প্রজনন নিরাপদ রাখতে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনাসহ দেশের বিভিন্ন নদ-নদীতে গত ৪ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছিল ২২ দিনের ইলিশ আহরণ নিষেধাজ্ঞা। এই সময় নদীতে ইলিশ ধরা, বিক্রি, পরিবহন ও মজুত সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ছিল। দীর্ঘ বিরতির পর শনিবার (২৫ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে অনেক আশা নিয়ে মধ্যরাতে ইলিশ শিকারে নদীতে নামবে জেলেরা।
শেষ সময়ে কেউ মেরামত করছেন নৌকা, কেউ বা পুরোনো জাল সেলাই করে নিচ্ছেন নতুন করে। চোখে মুখে আনন্দের অনুভূতি থাকলেও আশানুরূপ ইলিশ পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন জেলেরা। তারা বলছেন, এই বছর ভরা মৌসুমেও নদীতে ইলিশ দেখা মিলেনি। আর এখন মৌসুম শেষ। জালে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেলে কষ্টের পাল্লা ভারি হওয়ার কথা জানান জেলেরা।
এদিকে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে চাঁদপুরে নিবন্ধিত ৪৫ হাজার ৬১৫ জেলে পরিবারকে খাদ্য সহায়তা হিসেবে ২৫ কেজি করে চাল দেয়া হয়। কিন্তু তা ছিল জেলেদের কাছে অপ্রতুল। নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে জেলেরা জীবিকা হারিয়ে পড়েছিলেন চরম কষ্টে। যদিও নিষেধাজ্ঞাকালীন নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় জেলেদের মুখে এখন আশার হাসি।
চাঁদপুর সদরের আনন্দ বাজার এলাকায় মেঘনা পাড়ের জেলে ছানাউল্লা বলেন, সরকার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দিসে, আমরা পালন করেছি কিন্তু কিছু অসাধু জেলে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে নদীতে ইলিশ শিকার করেছে। যার কারণে হুমকির মুখে পড়েছে ইলিশের প্রজনন সময়। আমরা এখন একবুক আশা নিয়ে নদীতে নামার অপেক্ষা করছি। আল্লাহ কবুল করলে নদীতে ইলিশ পাবো, না হলে ঋণের বোঝা বাড়বে।
এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, অন্যবছরের তুলনায় এই বছর পদ্মা-মেঘনা নদীতে মা ইলিশ রক্ষায় কঠোর অভিযান পরিচালনা হয়েছে। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি, যাতে মা ইলিশ ডিম ছাড়তে পারে। এই বছর ৪০০ মতো অভিযান করেছি। যারা আইন অমান্য করেছে তাদের জেল জরিমানা করেছি।নিষেধাজ্ঞা সময়ে প্রত্যেক জেলেকে খাদ্য সহায়তা হিসেবে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আমরা তাদের উদ্বুদ্ধ ও সচেতন করার চেষ্টা করেছি, যাতে মাছ না ধরে।
তিনি আরও বলেন, আমরা মনে করে চাঁদপুরে মা ইলিশ রক্ষা অভিযানটি সফল হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে বিছিন্ন ঘটনা ঘটলেও চাঁদপুরে সেই তুলনায় তেমন ঘটনা ঘটেনি। এই বছর মা ইলিশ ডিম যেভাবে ছেড়েছে, ডিমগুলো জাটকা থেকে সঠিক ভাবে বেড়ে উঠতে পারলে ইলিশের লক্ষ্যমাত্রা বেড়ে যাবে।
